পুলিশ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের উপেক্ষা করে কাটা তার খুলে দেয়াল টপকে টিকিট ছাড়া স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছে অসংখ্য শিশু ও যুবকরা। কাটা তার খুলে দেয়াল টপকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করায় দেখা দিয়েছে নিরাপত্তার ঘাটতি।
অপরদিকে কাউন্টারের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাচ্ছেন না দর্শকরা। এমন চিত্র দেখা যায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলাকালে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
পুলিশের সূত্রে জানা যায়, পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা না থাকার কারণে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে, স্টেডিয়ামের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন স্টেডিয়ামের চারপাশে লাইটিং করা হয়েছে ও সিসি ক্যামেরার তার চোর কেটে নিয়ে গেছে ।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ১১তম আসরের ঢাকা পর্বের পর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলছে দ্বিতীয় পর্ব।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশালের ম্যাচের পূর্বে ও ম্যাচ চলাকালে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) ভোর থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে এসে টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন দর্শকরা। সকাল ৯টায় কাউন্টার খুলে ঘণ্টাখানেক টিকিট বিক্রির পর ‘আর নেই’ বলে জানান কাউন্টারের লোকজন। কাউন্টারে টিকিট না মিললেও স্টেডিয়ামের ১নং গেট থেকে ৩নং গেট পর্যন্ত রাস্তার পাশে পার্কিং করা বিভিন্ন গাড়ির পেছনে ও স্টেডিয়ামের সামনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সামনে দালালরা টিকেট বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সন্ধ্যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশালের ম্যাচ চলাকালে স্টেডিয়ামের গ্রিন গ্যালারির পেছন দিকে কাটা তার খুলে অবাধে দেয়াল টপকে পুলিশ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সামন দিয়ে টিকিট ছাড়া প্রবেশ করে প্রায় অর্ধশত শিশু ও যু্বক। এসময় অনেকেই হাত-পায়ে মারত্মক জখম হয়। টিকিট ছাড়া প্রবেশের সময় দেখা মিলেনি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার বাহিনীর কোনো সদস্যকে। শুধু পুলিশ ও সাদাপোশাকে ছিল সিকিউরিটির দায়িত্বরতরা।
সরেজিমেন দেখা যায়, স্টেডিয়ামের গ্রিন গ্যালারির পেছন দিয়ে দেয়াল টপকে অন্ধকারে অবাধে টিকিট ছাড়া ঢুকছে যুবকরা। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দৌঁড়ে গিয়ে গ্যালারিতে বসছে। আর কেউ কেউ ধরা পড়ছেন পুলিশের হাতে। শাস্তি হিসেবে দেয়া হয়েছে কান ধরে উঠ-বসা করা। আবার অনেকেই টিলার পাশে পুলিশকে চেষ্টা করছেন ম্যানেজ করতে। টিকিট ছাড়া প্রবেশকারী প্রায় দু-ডজন শিশু ও যুবককে পুলিশ ধরে গ্যালারিতে বসিয়ে রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিকিউরিটি জানান, আনসার বাহিনী না থাকায় তাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পুলিশও তুলনামূলক কম। তাছাড়া রাত্রি বেলায় আমাদের নিজের নিরাপত্তা নেই।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের সামন দিয়ে টিকিট ছাড়া কেউ স্টেডিয়ামে প্রবেশের সুযোগ নেই। আমাদের লোকেরা রাতে মশার কামড় খেয়ে ডিউটি পালন করে। এখানে আমাদের কোনো ঘাটতি নেই।
তিনি আরও বলেন, স্টেডিয়ামের দেয়ালের কাটা তার ফাঁক করে রাতের অন্ধকারে স্টেডিয়ামে লোকজন ঢুকেছে। দেয়ালের চারপাশে পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা না থাকার কারণে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দীপ দাস বলেন, স্টেডিয়ামের চারপাশে লাইটিং করা হয়েছে। গতকাল কয়েকটি সিসি ক্যামেরার তার কেটে চুরি করে নিয়ে যায় চোররা। আজ সেগুলো আবার লাগানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি আমাদের লোক রয়েছে। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।