পান বিক্রি করে সংসার চালান ফরিদা

  • মাহিদুল মাহিদ, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদা। ছবি: বার্তা২৪.কম।

ফরিদা। ছবি: বার্তা২৪.কম।

‘পান লাগবে মামা, সিগারেট দিমু?’ এভাবেই ডেকে ডেকে সারা দিন ফেরি করে পান ও সিগারেট বিক্রি করেন ফরিদা (৪৫)। সাভারের নবীনগর এলাকার স্মৃতিসৌধের সামনে দেখা মেলে তার।

জীবিকার তাগিদে ৪ সদস্যের সংসার চালানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন এই ফরিদা। সারা দিন পান ও সিগারেট বিক্রি করে যা আসে তা দিয়েই খেয়ে না খেয়ে সংসার চালিয়ে এক সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগান দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্ন ছিলো আর দশজন নারীর মতোই তার সংসার হবে সাজানো। কিন্তু জাগ্রত বিবেকবোধ তাকে সুন্দর সংসার সাজানোর সুযোগ দেয়নি। শৈশব কাটে তার সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার হাবিবুল্লানগর ইউনিয়নের ইসলামপুর দায়া গ্রামে। তার বাবার নাম তারা মিয়া। ১৯৯৮ সালে ২২ বছর বয়সে একই গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আব্দুল কাদেরকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় তার জীবন যুদ্ধ।

২১ বছর সংসার জীবনের প্রতিটি দিনই ফরিদাকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। ছেলে ও মেয়েসহ দুই সন্তানের জননী তিনি। মেয়ের নাম মিতু (১৮)। টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় তার লেখাপড়া। আর কষ্ট হলেও ছেলে বিজয়ের (১৪) লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন তিনি। সব মিলে খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে চলছে সংসার।

ফরিদার স্বামী কাদের বলেন, ‘আমি প্রতিবন্ধী জেনেও ফরিদা আমাকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্নভাবে আমার চোখের চিকিৎসা করিয়েছে সে। কিন্তু আমার চোখে আলো ফেরাতে পারেনি। আর আমিও ফরিদার জীবনে কোনো রকম আলো ছড়াতে পারিনি। সংসার জীবনের শুরু থেকেই ফরিদা অনেক কষ্ট করে যাচ্ছে। আমাকে প্রতিবন্ধী কার্ডের মাধ্যমে ভাতার ব্যবস্থা করে দিলে ফরিদার একটু বোঝা কমত।’