গাইবান্ধায় মায়ের মৃত্যুর খবরে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল দুই বোন নুপুর আক্তার (২৩) ও রুনা আক্তার (২১) এর। তারা দু’জনই ঢাকার আশলিয়ায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে (বাদ আছর) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিদারী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দুই বোনের মরদেহ দাফন করা হয়। এর আগে দুপুরে (বাদ জোহর) মা ময়না বেগমের দাফন সম্পন্ন হয়।
আজ সকালে ঢাকা থেকে স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেল যোগে গাইবান্ধায় ফিরছিলেন নুপুর। তার সঙ্গে ছিলেন রিতা। পথে বগুড়ার শেরপুরের ভবানীপুর এলাকায় একটি ট্রাক চাপায় মারা যান নুপুর ও রিতা। নিহত নুপুর ও রিতা একে অপরের আপন চাচাতো বোন। নিহত নুপুর আক্তার ওই গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে এবং রুনা আক্তার আব্দুর রশিদের মেয়ে।
নিহরের পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার রাতে মারা যায় নুপুরের মা ময়না বেগম। তিনি দীর্ঘদিন থেকে বাড়িতে অসুস্থ ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর খবরে নুপুর তার চাচাতো বোন রিতাকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়া থেকে ভোরে স্বামীসহ মোটরসাইকেল যোগে রওনা হন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তারা বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ধনমুন্ডি এলাকায় পৌঁছালে একটি দ্রুতগতির ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নুপুর ও রুনা মারা যান। এসময় নুপুরের স্বামী রাকিবুল ইসলাম আহত হলে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে, পরে আহত রাকিবুল কিছুটা স্বাভাবিক হলে চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে চলে আসেন। দুপুরে মা ময়না বেগমের এবং বিকেলে নুপুর ও রিতার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গিদারী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ইদু মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ঘটনাটি সত্যিই মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। একই দিনে মা-মেয়েসহ তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের মাতম চলছে।
তিনি জানান, মা ময়না বেগম এবং মেয়ে নুপুরকে পাশাপাশি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পাশের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে রিতাকে।
লক্ষ্মীপুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটছে। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে হিন্দু ধর্মালম্বীরা বিভিন্ন মন্ডপে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। বেলা ৩টায় শহরের চক বাজার থেকে বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে পৌর মহা শ্মশান ঘাটে শ্যাম সুন্দর জিউ আখড়া, আনন্দময়ী কালী বাড়ী, সমসেরাবাদ মনষা বাড়ী, শাখারী পাড়া বড়বাড়ী, ত্রিনয়নী মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। এর আগে নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে সিঁদুর পরান এবং মিষ্টি মুখ করান। পরে তারা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর বিনিময় করেন। এরপর বিভিন্ন পূজা মন্ডপ থেকে ট্রাকে করে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রায় যোগ দেন হাজার হাজার নারী পুরুষসহ শিশু কিশোররা। পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে এবার ৭৮ টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে বিভিন্ন মণ্ডপে ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ভিড় ছিল। এ সময় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে রাখতে সকাল থেকে বিভিন্ন মণ্ডপে পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও প্রতিমা বিসর্জনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন জানান, দুর্গা পূজা নিবিঘ্নে সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশ সবসময় সচেষ্ট ছিলো।
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। তাই দেবী দুর্গার বিদায়ের আগে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের মন্দিরে মন্দিরে চলছে সিঁদুর খেলা।
হিন্দু ধর্মালম্বীরা জানান, দুপুর থেকেই মন্দিরে ভক্তদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। পূজা-অর্চনা এবং অঞ্জলি শেষে মন্দিরের প্রাঙ্গণে শুরু হয় সিঁদুর খেলা। বিভিন্ন বয়সের নারীরা একে অপরের কপালে সিঁদুর দিয়ে সাজিয়ে তুলছেন, দেবী দুর্গার প্রতিমায় সিঁদুর অর্পণ করছেন, আর সেই সঙ্গে চলছে আনন্দের ঢেউ। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি ভক্তদের মধ্যে চলছে ঢাকের তালে তালে নাচগান। ঢাক-ঢোলের তালে তালে ভক্তরা যেন উৎসবের আমেজে ডুবে আছেন।
রোববার (১৩ অক্টোবর) পৌর শহরের কালীখলা, দুর্গাবাড়ি, বাগানবাড়ি, পুরাতন রাইস মিল, স্টেশন রোড, সহ বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপে সিঁদুর খেলার দৃশ্য চোখে পড়ে। বর্ণিল এ উৎসবে নারী ভক্তরা সিঁদুর নিয়ে মাতছেন আনন্দে, একে অপরের কপালে সিঁদুর লাগিয়ে পূর্ণতা দিচ্ছেন দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর ঐতিহ্যবাহী রীতিতে।
অনামিকা সরকার বলেন, ধর্মীয় বিধানমতে দেবী দুর্গাকে ধরে রাখার কোনো সুযোগ নেই। তাই সবাই বিজয়া দশমীতে মায়ের বিদায় বেলার আগ মুহূর্তে মায়ের আশীর্বাদ নিতে এসেছেন। তারা পূজা অর্চনা করেছেন। সে সঙ্গে অতীত জীবনের পাপ মোচন ও অশুভ শক্তির কবল থেকে বাঁচতে দেবী দুর্গার কাছে আশীর্বাদ কামনা করছেন।
গোপা দাস বলেন, বিবাহিত নারীরা প্রত্যেক দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নাচে-গানে ও সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছে।
গৌরীপুর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রতন চন্দ্র সরকার বলেন, এবার উপজেলা ও পৌর শহরে ৪৯টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসব উদযাপন হয়েছে। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মেডিসিন ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মো. ইমরুল কায়েসকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা কর হয়েছে।
তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাদের। এরপর সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো.রেজয়ানুল আলম।
তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডের ফলে মেডিসিন ইউনিটের বেশিরভাগ ব্যবহার্য জিনিসপত্র ধ্বংস হয়ে গেছে। তবুও রোগীদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার (১৩ অক্টোবর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে নতুন ৫ তলা ভবনের নিচ তলার স্টোর রুমে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। তবে, এ ঘটনায় কোনো হতাহত বা মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকাণ্ডের ফলে মেডিসিন বিভাগের বেশিরভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগীদের জরুরি সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।