ঝড়ের মৌসুমে বিলবোর্ড ঝুঁকিতে খুলনা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, খুলনা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঝড়ের মৌসুমে বিলবোর্ড ঝুঁকিতে খুলনা। ছবি: বার্তা২৪.কম

ঝড়ের মৌসুমে বিলবোর্ড ঝুঁকিতে খুলনা। ছবি: বার্তা২৪.কম

রাতের শান্ত আকাশে হঠাৎ করেই শুরু হয় বাতাস। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তা কালবৈশাখী ঝড়ে রূপ নেয়। কালবৈশাখী ঝড়ে নগরজীবনে যেন ছন্দপতন ঘটে। ঘরমুখো মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যায়। এমন সময় নগরীর শিববাড়ীর অদূরে বিকট শব্দে বিশালাকার একটি বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে। বাতাসের প্রচণ্ড গতির কারণে এ বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে। তবে সৌভাগ্যক্রমে এ বিলবোর্ড ভেঙে পড়ার সময় আশপাশে কেউ ছিল না, যে কারণে কেউ হতাহত হয়নি।

বলছিলাম খুলনা নগরীতে গত বছর ঘটে যাওয়া বিলবোর্ড ভেঙে পড়ার কথা। এছাড়াও নগরীর দৌলতপুরের নতুর রাস্তা মোড়ে দু’বার বিলবোর্ড ভেঙে ইজিবাইকের উপরে পড়ে আহত হবার ঘটনাও ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবছরই কালবৈশাখী ঝড়ে খুলনা নগরীতে বিলবোর্ড ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে আবারো জোড়াতালি দিয়ে বিলবোর্ডগুলোকে পূর্বের মতো বসানো হয়। কিন্তু অপসারণের কোনো উদ্যোগই নেয়া হয় না। প্রতিবারই ওয়েল্ডিং ও ঝালাই করে কোনো মতে সংস্কার কাজ করা হয়। ফলে চলতি ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। এসব বিলবোর্ডের কারণে খুলনা নগরী একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অপরদিকে সামনের কালবৈশাখী ঝড়ের মৌসুমে পুরো নগরী জুড়ে ঝুঁকি বাড়ছে।

সরেজমিনে নগরী ঘুরে দেখা যায়, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও পয়েন্টগুলোতে অবৈধ বিলবোর্ডের কারণে এর সৌন্দর্য যেন ঢাকা পড়েছে। এর মধ্যে রূপসা মোড়, জিরো পয়েন্ট চত্বর, গল্লামারী মোড়, ময়লাপোতা মোড়, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, বয়রা কলেজ মোড়, শিববাড়ী মোড়, নিউ মার্কেটের সামনে, পিটিআই মোড়, ডাক বাংলা মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, কেডিএ রোড, রয়েল মোড়, হাদিস পার্কের সামনের বিলবোর্ডগুলো উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে খুলনা যেন বিলবোর্ডের নগরীতে রূপ নিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/25/1553519465921.jpg

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) তথ্য মতে, খুলনায় ৩শ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিলবোর্ড থেকে রাজস্ব আদায় করে কেসিসি। এসব বিলবোর্ড থেকে প্রতিবছর দেড় কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হয়। এই ৩০০ বাদে বাকি সব অবৈধ দাবি করা হয় কেসিসির পক্ষ থেকে। সিংহভাগ বিলবোর্ড থেকে রাজস্ব আদায় হলে ৫ কোটিরও বেশি রাজস্ব আদায় হতো।

নগরীর নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী মনির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের মার্কেটের কাছেই গতবছর বৈশাখ মাসে একটি বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে। বিলবোর্ডটা অনেক বড় ছিল। এছাড়া রাস্তার বিদ্যুতের তারের উপরে ওই বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে। এতে সে সময় আমাদের এখানে টানা দু’দিন বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। পরে আবার সেই বিলবোর্ডটাই পুনরায় লাগানো হয়েছে। তখন থেকে ঝড়ের বাতাস শুরু হলেই আতঙ্কে থাকি।’

দৌলতপুরের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের নতুন রাস্তার মোড়ে দু’বছর বিলবোর্ড ভেঙে মানুষ আহত হয়েছে। কিন্তু সেখানেই ফের বিলবোর্ড সাঁটানো হয়। বারবার অভিযোগ করা হলেও বিলবোর্ডটি অপসারণ করা হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স অফিসার খান হাবিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এ বছর আমাদের বিলবোর্ডের হিসাব করা হয়েছে। বৈধ/অবৈধ হিসাব লিপিবদ্ধ আছে। কিছু বাকি আছে এখনো। পর্যায়ক্রমে আমরা সব হিসাব করব।’

উল্লেখ্য, এ বছরের ১৭ মার্চ ও ২২ মার্চ খুলনায় কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে। সামনে কালবৈশাখীর মৌসুমে আরও ঝড় হবার সম্ভাবনা আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিলবোর্ড অপসারণ বা সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।