গ্যাসের দাম বাড়াতে গণশুনানি, হাইকোর্টে রিটের আদেশ ৩১ মার্চ

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আদালত, ছবি: সংগৃহীত

আদালত, ছবি: সংগৃহীত

গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বাড়ানোর প্রস্তাবকে তামাশা বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

গণশুনানি স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার (১৩ মার্চ) এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার গ্যাসের দাম বাড়াতে চলা গণশুনানি স্থগিত করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর করা রিট আবেদনের শুনানি হয় বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে।

পরে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইতোপূর্বে ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গ্যাসের সঞ্চালন ও বিতরণ ফি বৃদ্ধির আদেশ দিয়েছিল। এ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা রিট দায়ের করেছিলাম। ওই রিটে আদালত রুল জারি করেছিলেন। ওই রুল পেন্ডিং থাকা অবস্থায় তারা আবারও যখন গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবে গণশুনানির জন্য নোটিশ প্রদান করেন। ওই নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে আমরা আজ আবার একটি আবেদন করেছি। ওই আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবেদনের পক্ষে আমরা বক্তব্য তুলে ধরেছি, ২০১০ সালের আইনে বিতরণ ও সঞ্চালন সংক্রান্ত কতগুলো প্রো-বিধান আছে, সেই প্রোবিধান মামলায় কতগুলো সুনির্দিষ্ট কতগুলো প্রসিডিউটরের কথা বলা আছে- গ্যাস বিতরণ বা সঞ্চালনের জন্য যেসব সংস্থা কাজ করছে তাদের কোন একটিও মূল্য বৃদ্ধি বা পরিবর্তনের দাবি করে প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব কেন দেয় তার একটা যৌক্তিকতা সেখানে দেখাতে হয়। এবং আইনের এটাও পরিষ্কার করে বলা আছে, ওই যৌক্তিকতাটা যে মূল্যায়ন কমিটি দেখবে। মূল্যায়ন কমিটি দেখার পরে তাদের নিজস্ব একটা সিদ্ধান্ত হবে তাদের এই প্রস্তাবটা যৌক্তিক। তারা যদি এটাকে যৌক্তিক মনে করে তাহলে তারা নোটিশ দেবে গণশুনানির জন্য।

তাদের যদি এটা যৌক্তিক মনে না করে তাহলে তারা এটি এমন গণশুনানির জন্য নোটিশ করবেন না। কিন্তু এখানে আমাদের কথা হলো-তিতাস কিংবা আরও যেসব সংস্থা আছে তারা কোথাও কেন তারা দাম বাড়াতে চাইছে তা বলছেন না। কেন তারা দাম বাড়াতে চেয়েছে তার কোন যৌক্তিকতা তারা উল্লেখ করেনি। তারা সেখানে ১০ ডলার করে গ্যাস আমদানির কথা বলেছেন।

এ সময় আদালত প্রশ্ন করেছেন যেখানে ভারত বাইরে থেকে ৬ ডলার করে করে গ্যাস আমদানি করে সেখানে আমরা কেন ১০ ডলার দিয়ে গ্যাস আমদানি করছি। তার কোন উত্তর পেট্রোবাংলা কিংবা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন পক্ষে কেউ দিতে পারেনি। আমাদের বক্তব্য হলো- দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা তাদের কোন প্রস্তাবে নাই, তারা কোথাও দেখাতে পারেনি।

গত ১১ মার্চ তারা যখন গণশুনানি শুরু করলো তখন এই দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা প্রো-বিধান ৬ (৩) অনুযায়ী তাদের আগেই উপস্থাপনের কথা ছিল। সেটা তারা উপস্থাপন করেনি। ফলে এই শুনানির পুরো প্রক্রিয়াটাই বেআইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আদালতের কাছে এই শুনানির স্থগিত চেয়েছি। এছাড়াও আইন অনুযায়ী এক অর্থ বছরে গ্যাসের দাম দুইবার বৃদ্ধি করা যাবে না। এখানে দাম (ট্যারিফ) বলতে শুধু দাম নয়, এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক খরচের কথাও বলা আছে।

২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর যদি একবার বৃদ্ধি করা হয়। তাহলে আবার কিভাবে চলতি বছরের ১১ মার্চ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির জন্য গণশুনানি করতে পারে। এখানে যেটা ঘটেছে সেটা হলো-কোন একটি বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এই ধরনের শুনানি চালানো হচ্ছে।

আদালতে আমরা আরও যেসব ডকুমেন্ট দাখিল করেছি তাতে দেখিয়েছি-বিইআরসির একটা টেকনিক্যাল কমিটি আছে। সেই টেকনিক্যাল কমিটির রিপোর্ট দিয়ে যথারীতি এই সব সংস্থাগুলো গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব করেছে, সেই প্রস্তাবের সমর্থনে তাদের মতামত দিয়েছেন। তাহলে কি হলো। তারা নিজেরাই যদি এই দাম বৃদ্ধি করা সঠিক মনে করে থাকে। তাহলে জনগণকে গণশুনানিতে নেওয়ার যৌক্তিকতা কি।

টেরিফের সংজ্ঞাটা তারা মিস এন্টারফেয়ার করেছে।

আজকের এটার শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছেন আদালত।