ঘরের মাঠে বিপিএল বঞ্চিত বরিশালের ক্রীড়াপ্রেমীরা
ক্রিকেটের প্রতি মানুষের অনুরাগ আর উচ্ছ্বাস সর্বজনবিদিত। তবে এই বছরের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বরিশালবাসীর উন্মাদনা ছাপিয়ে যাচ্ছে নতুন মাত্রায়। ফরচুন বরিশাল অসাধারণ পারফরম্যান্স করে র্যাংকিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করলেও হতাশার ছায়া রয়ে গেছে। সেটি হলো বরিশালের ঘরের মাঠে খেলা আয়োজন না হওয়া।
আন্তর্জাতিক মানের বরিশাল স্টেডিয়াম দীর্ঘদিন ধরে অচল। শহরের ক্রীড়া প্রেমীরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিপিএলের মতো আসরে নিজেদের মাঠে খেলা দেখার সুযোগ না পাওয়ায়।
বরিশালের ক্রীড়াপ্রেমী আশিকুজ্জামান বলেন, যদি আমাদের মাঠে ফরচুন বরিশালের ম্যাচ আয়োজন করা যেত, তাহলে স্থানীয় তরুণ খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হতো। আর মাঠে খেলা দেখার আনন্দই আলাদা।
বরিশালের প্রশিক্ষণরত নতুন ক্রিকেটার ফরহান আহমেদ জানান, বরিশালের সমর্থন আমাদের শক্তি। তাদের ভালোবাসা আমাদের আরও বেশি প্রেরণা দেয়। মাঠে খেলার সুযোগ না পেলেও, আমরা সবাই একসঙ্গে জিততে চাই।
আরেকজন ক্রিকেটার আরিফ হোসেন জানান, ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলা মানে এক স্বপ্ন। বরিশালবাসীর ভালোবাসায় অটুট বিশ্বাস রেখে আমরা শুধু জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি।
ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, বরিশালের স্টেডিয়ামটি দ্রুত সংস্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার সংস্কৃতি এবং নতুন প্রতিভার বিকাশের জন্য খেলা আয়োজনের কোনো বিকল্প নেই।
খেলা মাঠে দেখতে না পারলেও বরিশালবাসী প্রিয় দলের জয় উদযাপনে কমতি রাখছে না। প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশালের রাজশাহীর বিপক্ষে জয়ের পর থেকেই পুরো শহর ক্রিকেট উম্মাদনায় ভাসছে। ৬ ও ৭ জানুয়ারির টানা দুই ম্যাচে জয় পাওয়ার পর এই উদ্দীপনা বেড়েছে আরও বহুগুণ।
নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রজেক্টরে খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথাও খিচুরি পার্টি, কোথাও বারবিকিউ আয়োজন করে সমর্থকেরা উদযাপন করেছেন খেলার আনন্দ। বিএম কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল বারী বলেন, বরিশালে ক্রিকেট মানেই অন্যরকম এক আবেগ। ফরচুন বরিশালের খেলা হলে গোটা শহর জেগে ওঠে। এবারের দলটিও বেশ শক্তিশালী।
নিউটন নামের এক ব্যবসায়ী জানান, তার প্রজেক্টর ভাড়া নিয়ে নগরীতে কাড়াকাড়ি পড়েছে। বিপিএলের দিনগুলোতে সাউন্ড সিস্টেম ও প্রজেক্টরের ভাড়া নিয়ে দারুণ ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে তাকে।
বরিশাল জেলা ক্রীড়া অফিসার সাইদুল ইসলাম জানান, স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ দ্রুতই শেষ করার চেষ্টা চলছে। এটি শেষ হলে আমরা বিপিএলসহ আন্তর্জাতিক মানের খেলাগুলো আয়োজন করতে পারব। বরিশালের মানুষ এই কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার প্রত্যাশা করছে।
বরিশালবাসীর আশা, স্টেডিয়ামের সংস্কার শেষ করে ঘরের মাঠে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাগুলোর আয়োজন হবে। ক্রীড়াঙ্গনে বরিশালের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও দ্রুত উদ্যোগের অপেক্ষায় ক্রীড়ামোদীরা।
ফরচুন বরিশালের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স, সমর্থকদের ভালোবাসা আর স্টেডিয়াম উন্নয়নের স্বপ্ন মিলে বরিশালে একটি নতুন ক্রীড়াযুগের সূচনা হবে এটাই বরিশালের প্রত্যাশা।