নিরাপদ খাদ্যের জন্য ছাদ বাগানের বিকল্প নেই: পরিবেশ উপদেষ্টা
নিরাপদ খাদ্য ও নির্মল বাতাসের জন্য ছাদ বাগানের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত বৈশ্বিক উষ্ণতা নিরসনে ছাদ বাগানের গুরুত্ব বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করেছে 'ঢাকা শেকড়' এবং সহযোগিতা করেছে জাতীয় প্রেস ক্লাব।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নিরাপদ খাদ্য এবং নির্মল বাতাসের জন্য ছাদ বাগানের প্রচার প্রসার করা ছাড়া উপায় নেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বায়ু ও ধূলাদূষণ কমাতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, ছাদ বাগান নিয়ে সেমিনারের আয়োজন আপাত দৃষ্টিতে ছোট মনে হলেও এটি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ গাছ পরিবেশ দূষণ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিরাপদ খাদ্যের জন্য এটি খুবই জরুরী। সেজন্য ছাদ বাগানের পাশাপাশি বারান্দা বাগানেও মানুষকে উৎসাহিত করা উচিত। আমাদের আশপাশে অধিকাংশ বাসায়ই ছাদে বাগান করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু এক চিলতে হলেও বারান্দা থাকে। সেই বারান্দায় কাঁচা মরিচ, ধনে পাতা, বেগুন উৎপাদন করে চাহিদা মেটানো সম্ভব। আমার মনে হয়, আপনি যদি বারান্দায় চারটি টবে বেগুনার আর কাঁচামরিচ লাগান তাহলে এগুলো আর কিনে খেতে হবেনা।
তিনি বলেন, মানুষকে বেশি দিন সবুজ থেকে দূরে রাখা যায় না। সেজন্যই এখন ছাদ বাগানে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। তাছাড়া বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্মল বাতাসের জন্য এবং বিশুদ্ধ খাবারের জন্য ছাদ বাগান জরুরী। আমাকে আপনারা পরিবেশবাদী হিসেবেই চেনেন। এমন অনেক সময় হয়, যখন রাত আড়াইটার সময়ও পরিবেশের অন্যান্য সমস্যার জন্য ফোন আসে। অথচ অভিযুক্ত বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট। তারপরও সবাই আমাকে ফোন করে কারণ আমাকেই তারা সবসময় পরিবেশবাদী হিসেবে চেয়ে থাকে। আমরা বলতে চাই, এই ঘোষণাটি আসতে হবে স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে। স্থানীয় সরকার ঢাকা শহরের সবগুলো ছাদে বাগান করার জন্য প্রধান এবং কর্মসূচি নিতে পারে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ঢাকা শহরের ধূলা এবং বায়ু দূষণ এক বছরে কেউ কমাতে পারবেনা। এটি সম্ভবও নয়। কিন্তু বায়ু দূষণ কমানোর বড় উপায় হচ্ছে ধূলা দূষণ কমানো। আমাদের আইল্যান্ডগুলো (সড়ক বিভাজক) অনাবৃত থাকে। অথচ পুরো মাটিগুলো যদি ঘুরে দেওয়া যায় তাহলে ধূলার প্রকোপ অনেকাংশই কমে যাবে। সেখানেও সবুজায়ন অনেক বেশি জরুরী। আমরা আগামী বর্ষা থেকেই এই কার্যক্রম শুরু করব।
ছাদ বাগানে নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আমার বাসার ছাদ বাগানে লাউ গাছে সর্বোচ্চ ২১টি লাউ ধরেছে। বেগুন, কাঁচা মরিচ অনেকদিন আমাকে কিনে খেতে হয়নি। কৃষি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় একসাথে মিলে এবিষয়ে পদক্ষেপ নিলো ভালো ফল আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সেমিনারে সংগঠনটির এডমিন মোতালেব মাশরেকীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়াঁ, গ্রীনওয়াচ ঢাকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মেহেদী মাসুদ, ছাদ বাগান বিশেষজ্ঞ গোলাম হায়দার ও জাতীয় প্রেসক্লাবের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মমিন হোসেন।