ভিসা বন্ধে বেনাপোল-পেট্রাপোল রুটে যাত্রী শূন্যের পথে
ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তিতে নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চলাচল একেবারেই কমে এসেছে।
সর্বশেষ গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেনাপোল-পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে ভারতে গেছে ১৪৭১ জন পাসপোর্টধারী। এর মধ্যে বাংলাদেশী ছিল ১১৯৪ জন, ভারতীয় ২৭৪ জন, ২ জন জাপানের ও নেপালের ১ জন পাসপোর্টধারী।
এদিকে খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন রেলে যাত্রী সেবা এখনও বন্ধ থাকায় নিরাপদ যাতায়াতে বেড়েছে ভোগান্তি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যে সব বাংলাদেশী ভারতে যায় তাদের বড় একটি অংশ চিকিৎসা ও দর্শনীয় স্থান ঘুরতে যায়। আর যেসব ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসে তাদের বড় একটি অংশ কম খরচে মেডিকেল শিক্ষায়।
বর্তমানে দেশের ১০৮টি মেডিকেল কলেজে ১০ হাজারের বেশি বিদেশি অধ্যয়নরত রয়েছে। যাদের বেশির ভাগ ভারতীয়। এছাড়া ট্যুরিস্ট ও ওয়ার্ক ভিসায় এদেশে প্রায় ১০ লাখের মত ভারতীয় চাকরি করছে। জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারতীয় ভিসা সীমিত ও দুই দেশের মধ্যে রেল পথে যাত্রী সেবা বন্ধ করে দেয়।
বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশিলতা ফিরলেও নানান অযুহাত দেখিয়ে এখনও স্বাভাবিক ভিসা প্রদান ও রেল পথে বেনাপোল রুটে যাত্রী সেবা বন্ধ রেখেছে। এতে একদিকে যেমন ভিসা না পেয়ে যাত্রী যাতায়াত একেবারে কমে এসেছে। স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহার করে দুই দেশের মধ্যে ৮ থেকে ১০ হাজার পাসপোর্টধারী যাতায়াত করলেও এখন তা কমে দেড় হাজারের ঘরে নেমেছে। ভিসা না পেয়ে চিকিৎসা গ্রহণে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে ও সড়ক পথে ভোগান্তি বেড়েছে।
ভারতগামী পাসপোর্টধারী রহমত আলী জানান, আগের ভিসায় যাচ্ছি। ডিসেম্বরে ভিসা শেষ হয়ে যাবে। ভারতীয়রা ভিসা পেলেও বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে এখনো বাধা সৃষ্টি করছে ভারতীয় দূতাবাস।
ভারতীয় পাসপোর্টধারী অনিল বিশ্বাস জানান, ভারতীয়দের ভিসা পেতে বা যাতায়াতে কোন সমস্যা হচ্ছেনা। কিছু মানুষ উস্কানিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, কেবল বেনাপোল রুটে ভ্রমণ খাতে ভিসা ফি বাবদ বাংলাদেশীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় দুইশো কোটি টাকা আয় করে থাকে ভারতীয় দূতাবাস।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও নানান অযুহাতে ভারত সরকার এখনও বন্ধন রেল পরিসেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে এ পথে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারীদের। ভিসা বন্ধ থাকায় ব্যবসা, বানিজ্যেও দুই দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের ইনচার্জ আব্দুল হাফিজ জানান, ভিসা স্বাভাবিক না থাকায় যাত্রী একেবারে কমে এসেছে। গতকাল মাত্র ১৪৭১ জন পাসপোর্টধারী ভারতে গেছে।