বন-কৃষিজমি উজাড় ও জলাশয় ভরাট অভ্যাসে পরিণত হয়েছে: রিজওয়ানা হাসান

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বন ও কৃষিজমি উজাড় করা এবং জলাশয় ভরাটকে আমরা অভ্যাসে পরিণত করেছি। বিগত সময়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই অভ্যাসগুলো তৈরি হবার সুযোগ যদি না দেওয়া হতো তাহলে আমরা পরিবেশগত বিপর্যয়ে পড়তাম না।

তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতা এবং দখলদারদের বাধা সত্ত্বেও বেদখল হওয়া বনভূমি উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে এবং অ্যাকশন প্লান তৈরি করে নদী দখলমুক্ত করার কাজ শুরু করা হবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ‘বাংলাদেশে এনডিসি’র (ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন) আলোকে কৃষি, বন ও অন্যান্য ভূমির ব্যবহার থেকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ অল্প পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ করে এবং ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) নীতি প্রণয়নের কাজটি ভলান্টারি বা ঐচ্ছিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন করে এনডিসি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ভূমির পাশাপাশি বন ও জলাভূমিকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে এবং এটি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে যুক্ত করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে আগ্রহীদের আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করারও অনুরোধ জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমাদের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার ব্যক্তি পর্যায়ে কমানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হবার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

এএলআরডি চেয়ারপারসন ও নিজেরা করি-র সমন্বয়কারী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর এডভান্স স্টাডিজের সম্মানিত ফেলো ড. দ্বিজেন মল্লিক। মূল প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তি-২০১৫ এর আওতায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) পলিসি বৈশ্বিকভাবে প্রদান করেছে।

সর্বশেষ ২০২১ সালে বাংলাদেশ এনডিসি হালনাগাদ করেছে। এই হালনাগাদ পলিসিতে বাংলাদেশ এনার্জি সেক্টর, কৃষি, বন ও অন্যান্য ভূমি থেকে কার্বন নিঃসরণের হার উল্লেখপূর্বক ২০৩০ সালে কার্বন হ্রাসের কর্মপরিকল্পনা প্রদান করেছে। বাংলাদেশে কৃষি, বন ও অন্যান্য ভূমি থেকে কার্বন হ্রাসের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষিতে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি, রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস, অধিক বনায়ন এবং ভূমির উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রিণ হাউস গ্যাস হিসেবে পরিচিত মিথেন গ্যাস, ক্লোরোফ্লুরো কার্বন (সিএফসি) এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ইত্যাদি ক্ষতিকর গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাস করা সম্ভব। এর পাশাপাশি এই কৃষিক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শ্রম প্রদানকারী গ্রামীণ নারীদের কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব হলে এবং নারীদের ভূমিতে পূর্ণ অধিকার ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা গেলে এই কার্বন নিঃসরণের যৌথ কর্মউদ্দ্যোগে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।