টাঙ্গাইলে রিকশা শ্রমিক অফিসে আগুন, আহত ৩

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলে রিকশা শ্রমিক অফিসে আগুন

টাঙ্গাইলে রিকশা শ্রমিক অফিসে আগুন

অতিরিক্ত ভর্তি ফি ও চাঁদা আদায়ের ক্ষোভে টাঙ্গাইল জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন শ্রমিক নেতা।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌর শহরের পার্ক বাজার সংলগ্ন শ্রমিক অফিসে এই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসময় অফিসে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল, আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পুড়ে ছায় হয়ে গেছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

আহতরা হলেন, জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাবেক মেম্বার সালাম ও রুপচান।

শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানায়, পূর্বে ভর্তি ফি ১০০০ হাজার টাকা ছিল, সেটি বৃদ্ধি করে ১৫৬০ করা হয়। এছাড়া ১০ টাকা মাসিক চাঁদা করাসহ ২০০ টাকা জরিমানা নিয়ে ভর্তি না হওয়া শ্রমিককে পাঁচ থেকে সাত দিনের সময় দিতেন সমিতির নেতৃবৃন্দ। যা নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞাপন

পরে মঙ্গলবার সকালে সাধারণ শ্রমিকরা মাইক মেরে চাঁদা ও ভর্তি ফি না দেয়ার জন্য মাইকিং করতে থাকে। নেতৃবৃন্দ মাইক ম্যানকে আটক ও মারধর করে ছেড়ে দেন। মাইকম্যানের কাছে মারধরের তথ্য জানতে পেরে সাধারণ শ্রমিকরা অফিস কার্যালয়ে হামলা, নেতৃবৃন্দকে মারধর ও অগ্নিসংযোগ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রিকশা শ্রমিক জানান, নেতৃবৃন্দ চাঁদা ও ভর্তি ফি নিলেও আমাদের কোনো কাজে লাগে না। নামমাত্র আহ্বায়ক কমিটি করে চাঁদার টাকা লুটপাট করছে। শ্রমিকদের শুধু মৃত্যু বোনাস, বিবাহ ভাতা আর নামমাত্র চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়। সমিতিতে মোট কত টাকা চাঁদা আর ভর্তি ফি জমা আছে সেটিও আমরা জানি না। জানতে চাইলে নেতৃবৃন্দ দুর্ব্যবহার করে। এ সকল কারণে ক্ষুব্ধ শ্রমিক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

গুরুতর আহত সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, কার্যালয়ে আমাকে বেঁধে রেখে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। আগুন বাড়তে থাকায় আমি প্রায় আধা ঘণ্টা পরে বাঁধন খুলে বের হই। আগুনে আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান সদস্য সিহাব বলেন, চাঁদা ও ভর্তি ফি দিবে না বলে মাইক মারছিল সাধারণ শ্রমিকরা। এ সময় তাদের মাইকটি আটক করা হয়। এ ক্ষোভে শ্রমিকরা নেতৃবৃন্দকে মারধর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক হুসেন বেপারী সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক এস এম হুমায়ুন কানায়েল বলেন, আধা ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। কার্যালয়ে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলসহ কিছু আসবাবপত্র এবং কাগজপত্র পুড়ে গেছে। এসময় অগ্নিদগ্ধ একজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ভিক্টর ব্যানার্জি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অগ্নিদগ্ধ একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।