চট্টগ্রামে ‘উড়ন্ত হাসপাতালের’ চক্ষু প্রশিক্ষণ শুরু
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে অরবিস উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালে ৫ম বারের মতো ১৪ দিনব্যাপী চক্ষু প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণের মূল বিষয়বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে ছানি, গ্লুকোমা, রেটিনা, অকুলোপ্লাস্টি এবং কর্নিয়ার রোগের চিকিৎসা। থাকবে নিউরো অফথালমোলজি ওয়ার্কশপ, অপটোমেট্রি ওয়েবিনার, নার্সিং এবং বায়োমেডিক্যাল সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর পাহাড়তলীর চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইমরান সেমিনার হলে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণ এবং চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (সিইআইটিসি) সহযোগিতায় বাংলাদেশে ১১তম সফরে এসেছে বিশেষায়িত এ হাসপাতালটি। এ প্রকল্পে সহায়তা করেছে অ্যালকন কেয়ারস, অ্যালকন ফাউন্ডেশন, ফেডেক্স, অফথালমোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওএসবি), বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন (বিসিপিএস) এবং ন্যাশনাল আই কেয়ার।
সিআইআইটিসির প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী চক্ষু চিকিৎসা সেবাকারি প্রতিষ্ঠান অরবিস ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ২৫ বছর আগ থেকে কাজ শুরু করেছে। অরবিস বাংলাদেশে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিব ব্যাপারে যথেষ্ট ভূমিকার পাশাপাশি সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। আমি আশা করবো অরবিস যেন তাদের মানবসম্পদ তৈরি ও চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম অব্যহত রাখেন।
আন্তর্জাতিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন বলেন, অরবিসের চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জনবল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আজকে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শিশুদের চিকিৎসায় উন্নত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিশুদের চোখের চিকিৎসায় প্রশিক্ষণে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের প্রায় ১৪টি হাসপাতালে নতুন ডিপার্টমেন্টেরে মাধ্যমে সম্প্রসারিত হয়েছে। যার ফলে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রশিক্ষণের জন্য চিকিৎসক, নার্সরা প্রশিক্ষণ নিতে আসেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে চোখের চিকিৎসায় এই প্রতিষ্ঠান অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। অরবিস প্রযুক্তি বিনিময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত ২২ বছর ধরে তারা বাংলাদেশে আসছে। মানবতার সেবায় অবদান রেখে চলেছে। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই আমি ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেন্টার স্থাপন করেছি মেমন হাসপাতালে। একটি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার করতে চেষ্টা করছি। যাতে দরিদ্র রোগীরা এই সেবা পেতে পারে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অরবিস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকি। তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সিইআইটিসির সহযোগিতায় বাংলাদেশে উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতাল প্রকল্প আবার শুরু করতে পেরে গর্বিত। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের চোখের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অ্যালকন কেয়ার্স, অ্যালকন ফাউন্ডেশন এবং ফেডেক্সের সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। অরবিসের লক্ষ্য একটি শক্তিশালী এবং টেকসই চোখের চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মনিরুজ্জমান ওসমানী।