বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, দু’বছর পর ৪ আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
জাতীয়
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় দুবছর আগে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের চার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৬ নভেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীরামপুর ও লেবুখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুমকি থানা পুলিশ তাদের আটক করে।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. হুমায়ুন কবির মৃধা (৪৫), লেবুখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমান আকন (৬৫), একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সদস্য মো. শহিদুল আকন (৪৫) এবং মো. সাইদুল ইসলাম টিটু আকন (৩৫)।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ মার্চ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় যুবদল নেতা মো. মোর্তুজা বিল্লাহ বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০০-২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন
বিজ্ঞাপন
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফিরোজ আহম্মদ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ঘোষণা অনুযায়ী সারাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণ। সেই মোতাবেক সারাদেশে পলিথিন উৎপাদন ও সরবরাহের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) অভিযানের মাধ্যমে জরিমানাসহ ৪৮৪৫ কেজি পলিথিন জব্দ করে উৎপাদনকারী কারখানাগুলো সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া ১৪টি অভিযান পরিচালনা করে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৬ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করাসহ প্রায় ৪৮৪৫.২ কেজি পলিথিন জব্দ এবং ১টি পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানা সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অন্যদিকে, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বিক্রয় করার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমী এর নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরের মালিবাগ কাঁচাবাজার এলাকায়ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায়সহ ১৬ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের দূষণ বিরোধী এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় পুকুরের পাড় দিয়ে মাদরাসা যাওয়ার পথে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) উপজেলার ৫নং পাঁচথুবি ইউনিয়নের শালধর (সামারচর) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- একই এলাকার মফিজ মিয়ার ছেলে মো. সামিউল (৪) ও মজিদ মিয়ার ছেলে মো. ওমর (৫)। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে দুই ভাই একসাথে পুকুরের পাড় দিয়ে মাদরাসা যাওয়ার সময় মো. সামিউল পুকুরে পড়ে যায়। তখন সামিউলকে বাঁচাতে গিয়ে তার চাচাতো ভাই ওমরও পানিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজন পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সামিউল ও ওমর এর মৃতদেহ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাদেরকে পানি থেকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে দুইজনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লা কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম বলেন, পানিতে ডুবে দুই চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু রোগীর জন্য বরাদ্দকৃত তরল স্যালাইন পাচ্ছেন না পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীরা। এ স্যালাইন হাসপাতাল থেকে দেবার কথা থাকলেও তা মিলছে না বলে অভিযোগ রোগী ও তার স্বজনদের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যাপ্ত স্যালাইন রয়েছে। তাহলে কেনো রোগীরা স্যালাইন পাচ্ছেন না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডেঙ্গু রোগীরা। বেডের তুলনায় রোগী বেশি হওয়ায় অধিকাংশই হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দু’চারজনের কাছে মশারি থাকলেও অধিকাংশই মশারি ছাড়াই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে হাসপাতালের অন্যান্য রোগীরা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এ আশঙ্কা মুক্ত নন চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা। এতে রোগীদের যেমন সচেতনতার অভাব, তেমনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও তদারকির অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ রোগী ও তার স্বজনদের।
ডেঙ্গু রোগীদের মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা দেবার ক্ষেত্রে উদাসীনতা অভিযোগ রয়েছে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতাল থেকে রোগীদের একটি তরল স্যালাইনও দেয়া হয়নি। রোগী ও তার স্বজনরা জানান, স্যালাইন চাইলেও বলা হয় সাপ্লাই নেই। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। এতে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে রোগীদের।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদীর আওতাপাড়ার বাসিন্দা ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী লিমন বলেন, ‘৩ দিনের জ্বর নিয়ে গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। ভর্তির পর থেকে হাসপাতাল থেকে সকালে দুইটা নাপা ট্যাবলেট দিয়েছে। তাছাড়া স্যালাইন ট্যালাইন কিচ্ছু দেয় নাই। চাইলে বলে- সাপ্লাই নাই। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসায় অন্তত স্যালাইনটা পাওয়ার কথা, সেটিও মিলছে না। গরীব মানুষ কীভাবে এখানে চিকিৎসা নেবে?’
পাবনা শহরের শাপলা প্লাস্টিক এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন। ছোটভাই মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ৩ দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) শ্যালকও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। এদের দেখভালের পুরো দায়িত্ব তার ওপর। তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে অন্তত স্যালাইনটা পাওয়ার কথা। কিন্তু সেটাও মিলছে না। তাদের নাকি সাপ্লাই নাই। প্রতিবছরই এগুলোই দেখতে হয়। ডেঙ্গু আসলেই স্যালাইন সংকট। হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন বলে আছে, রোগীরা চাইলে নাই।’
তিনি বলেন, জিনিসের যে দাম তাতে মধ্যবিত্তরাও এখন চরম দারিদ্রতায় ভুগছেন। হাসপাতালে এদের কারোরই সেবা নেয়ার পরিবেশ নাই। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কোনো পরিবেশ নাই, তবুও এখানে আসেন খরচ কমাতে। একটা স্যালাইনও যদি না মেলে হাসপাতাল থেকে তাহলে কীভাবে খরচ বাঁচবে? উল্টো দালালদের দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
রোগী ও তার স্বজনদের অভিযোগের সত্যতা জানতে কথা হয় হাসপাতালে দায়িত্বরত একাধিক ইন্টার্ন নার্সদের সাথে। তারা জানান, একেক সময় একেক ওয়ার্ডে সেবা দেন তারা। তবে গত কয়েকদিন ধরে মেডিসিন ওয়ার্ডে সেবা দিচ্ছেন। স্যালাইনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারাও জানান- হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য তরল স্যালাইন সাপ্লাই নেই বলেই জানেন তারা।
এ ব্যাপারে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) জাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে স্যালাইন সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। রোগীরা কেন পাচ্ছেন না সেটি খোঁজ নিচ্ছি।
হাসপাতালের তথ্য বলছে, পাবনায় চলতি বছরে এযাবৎ ৩২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। জানুয়ারি মাসে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। বর্তমানে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বছরের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রয়েছে অক্টোবর মাসে। এ মাসে মোট ১৭৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পাবনায় এখনো কোনো মৃত্যু নেই। তবে গত অক্টোবরের শেষের দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার এক শিশু রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ঘটে।
এ উপজেলা থেকেই বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন বলে দাবি বিশ্লেষকদের।
বাংলাদেশে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে ‘এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন’ উপলক্ষে সিলেটে নৌ-সমাবেশ করেছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেট, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সিলেট নগরীর কাজিরবাজার ব্রিজের দক্ষিণ অংশে সুরমা নদী তীরে এই নৌ-সমাবেশ করা হয়।
নৌ-সমাবেশে বক্তারা পৃথিবীর অস্তিত্বের স্বার্থেই জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের সম্প্রসারণ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানী খাতে বিনিয়োগের আহবান জানান।
সমাবেশে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, উন্নত দেশসমূহ অতি মুনাফা লাভে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে বায়ুমণ্ডলে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিগর্মনের মাধ্যমে জলবায়ু ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে থাকা অনুন্নত দেশগুলোকে অস্তিত্ব সংকটে ফেলছে। আবার ঝুঁকিতে থাকা এসব অনুন্নত দেশে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে অর্থ, প্রযুক্তি ও কাঁচামাল জোগান দিচ্ছে উন্নত তথা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে শীর্ষ দেশগুলা। আমরা যতদিন পর্যন্ত এ শৃঙ্খল থেকে বের হতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত আমাদের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন।
এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন জীবাশ্ম জ্বালানির, বিশেষত প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজির প্রকল্পের সম্প্রসারণ এবং অর্থায়নের বিরোধিতা করে আয়োজকদের পক্ষে সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরা সিলেটের সদস্য সচিব আবদুল করিম কিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পরিবেশের ক্ষতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ, যেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ, ইতোমধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে একটি ন্যায্য, টেকসই, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভিত্তিতে উন্নতির দিকে ধাবিত করার দাবি জানানো হবে।
ধরা সিলেটের আহ্বায়ক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে এশিয়া ডে অব অ্যাকশন-এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ওপর গ্যাস ও এলএনজির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং অংশীজনদের সচেতন করতে হবে।