কিশোরগঞ্জে জোড়া মাথার শিশুর জন্ম, আধা ঘণ্টা পর মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে জোড়া মাথার কন্যাশিশু জন্মের আধা ঘণ্টা পরই মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এক রাজমিস্ত্রির ঔরসে জন্ম নেওয়া শিশুটির মাথা দুটি হলেও শরীর একটি, হাত-পা দুটি করে। দুটি মুখের একটির ওপরের ঠোঁট কাটা ছিল।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাত ১০টায় জেলা সদরের শোলাকিয়া এলাকার পপুলার মাল্টিকেয়ার হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। অবস্থা জটিল হওয়ায় রাত সাড়ে ১০টায় শহরতলির শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সজিব ঘোষ পরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত পান বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন।
পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহিদ ইসলাম জনি জানান, করিমগঞ্জের দেহুন্দা ইউনিয়নের ভাটিয়া মোড়লপাড়ার রাজমিস্ত্রি অলিউল্লাহর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার ৩৮ সপ্তাহের গর্ভবতী অবস্থায় এখানে ভর্তি হন। পরে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রাত ১০টায় সিজার করেন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি বিশেষজ্ঞ মোবাররা জাকারিয়া চৈতী। ভর্তির আগেই রোগীর অবস্থা জটিল ছিল। শিশুটি জন্মের পর শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতার কারণে কিছুক্ষণ অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। কিছুটা স্বাভাবিক হলে পাঠানো হয় সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নেওয়ার আগেই শিশুটি মারা যায়।
এই দম্পতির আড়াই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম সন্তানের জন্মও সিজারে হয়েছিল। আজ শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে গ্রামে শিশুটির দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডিম্বাণু-শুক্রাণুর জিনগত সমস্যার কারণে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়ে থাকে। তবে শিশুটি বেঁচে থাকলেও এখানে অস্ত্রোপচারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঢাকায় পাঠানো হতো।
তিনি আরও জানান, প্রত্যেক প্রসূতির গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহের মধ্যে একটা ‘অ্যানোমেলি টেস্ট’ (অসঙ্গতি পরীক্ষা) করানো উচিত। এ ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দিলে সচেতন অভিভাবকরা গর্ভপাত করিয়ে ফেলেন। কারণ, এ ধরনের শিশু বাঁচিয়ে রাখা যেমন কঠিন, আবার বাঁচলেও শিশু এবং পরিবারের সারাজীবন ভোগান্তি পোহাতে হয়। এর অস্ত্রোপচারও অত্যন্ত ব্যয়বহুল।