শীত মৌসুমের আগমনের আগেই বাজারে আমদানি বেড়েছে শীতকালীন সবজির। তবে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজিসহ সকল প্রকার নিত্যপণ্যের আমদানি থাকলেও বিক্রি হচ্ছে উর্ধ্ব মল্যে। ফলে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন অযুহাতে পুরা বছরই সবকিছু বেশি দামে বিক্রি করেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতার বলছেন, শীতকালীন সবজির বাজারে চাহিদার তুলনায় আমদানি কম থাকায় বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে।
শুক্রবার (০১ নভেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ঘুরে বাজার দরের এমন চিত্র দেখা গেছে।
ছুটির দিন সকালে পরিবারের সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী ওমর ফারুক। তিনি বার্তা২৪. কমকে বলেন, বাজার করতে এসে দেখি সবকিছুর দাম বেশি। এক প্রকারের সবজি কিনলে আরেক প্রকারের সবজি কেনা যায় না। তাছাড়া শীতকালীন সবজির যে দাম সেতো কল্পনার বাইরে। আমাদের মতন নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য বাজার করাটা আসলে অনেক কষ্টসাধ্য। সবজি কিনতেই হিমসিম খেতে হয়। মাছ মাংসের দিকে তো যাওয়ারই উপায় নেই।
মো. জামিল নামের অন্য এক ক্রেতা বলেন, বাজারে এমন কোন কিছু নেই যে দাম কম। দোকানিদের কাছে দাম বেশি কেনো বললেই তারা কোন না কোন অযুহাত দেখাই। বছর ধরেই কোন কোন না কোন অযুহাতে দাম বেশি বলে। এখন বলছে মৌসুমি সবজি আমদানি কম তাই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আবার বৃষ্টি হলে বলে বৃষ্টির কারনে দাম বেশি। খড়া হলে বলে খড়ার কারনে উৎপাদন নেই। মাল আসছে না। যা আসছে দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সারা বছরই এভাবে একটা না একটা অযুহাত তাদের থাকেই।
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি বাজারের দিকে বিশেষভাবে নজরদারি না করে তাহলে সাধারণ মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে আলু কেজি প্রতি ৬০, পিঁয়াজ ১৬০,চায়না রসুন ২৪০, দেশি রসুন ২৬০, আদা প্রকার ভেদে ২০০ ও ৩০০টাকা।
এছাড়া লাউ আকারভেদে প্রতি পিচ ৬০, কালো বেগুন ১২০, সাদা বেগুন ১০০,লম্বা বেগুন ৮০, কচুর লতি ৮০, ঝিঙ্গা ৭০-৮০, ফুলকপি ৫০-৬০, পাতাকপি ৬০-৭০, গাজর ১৮০-১৭০, উচ্ছে ১০০, শসা ৮০, করোলা ৮০, চিচিঙ্গা ৬০-৭০, পেঁপে ৫০, পুই ফল ১২০-১৪০, কচু মুখি ৮০,জলপাই ৮০-১০০, টমেটো ১৬০, মুলা ১২০,পটল ৮০,শিম ১৬০, বরবটি ৮০-১০০, কাঁচা মরিচ ২০০, ভেন্ডি ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৮০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা মহিবুল্লাহ বলেন, বাজারে খুব সীমিত হারে শীতকালীন সবজি আসছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি নেই। পাইকারি বাজার থেকে কারা কাড়ি করে সবজি আনতে হয়। মহাজনরা যে দাম বলে সেই দামই দিতে হয়। কোন দামাদামির সুযোগ নেই। তাই ঠিকমতো আমদানি না থাকায় দামটা বেশি।
জাহাঙ্গীর নামের অন্য এক বিক্রেতা বলেন, আমাদের বেশি দামে সব কিনে আনতে হচ্ছে তাি বেশি৷ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করলেতো আর হবে না। আমরাতো দুইটা টাকা লাভের আশায় বসছি তাই না? তাই বেশি দামে কিন্তে হচ্ছে বলেই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গলদা চিংড়ি ১৬০০টাকা, কাতল ৬০০, দেশি পুটি ৬০০, মাঝারি আকারের চিংড়ি ৯০০, পাপদা ৫০০, টাটকোনি ৬০০, রুই (বড়) ৪০০, দেশি কই ৭৫০, চাষের কই ২৫০, শিং ৪০০-৪৫০, সরপুঁটি ৩২০, মলা ৪০০, টেংড়া ৮০০, মাগুর ৬৫০, বোয়াল ৭০০, আইর মাছ ৮৫০-৯৫০, বাইন ৯০০ থেকে ১১০০।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খাসির ১০০০ থেকে ১১০০, গরুর মাংস ৭০০, ব্রয়লার ১৯০, লেয়ার ৩০০, সোনালি ২৯০, দেশি ৫০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাদা ডিম হালি ৫০ ডজন ১৪৫টাকা, লাল ডিম হালি ৫০ ডজন ১৫০ এবং হাসের ডিম হালি ৮০ ডজন ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।