বাসচাপায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত, মহাসড়ক অবরোধ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিম বাস চাপায় নিহতের ঘটনায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
সহপাঠীরা জানায়, নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই মিমকে বাস চাপা দিয়েছে। অতি দ্রুত চালককে গ্রেফতার ও এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। মিম নিহতের ঘটনায় বিচারের দাবিতে তারা আজ রাস্তায় নেমেছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে হবে।
তারা আরও জানান, রাতে উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের সঙ্গে দেখা করে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। দুপুর ১২টার মধ্যে দাবির অগ্রগতি না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা করা হবে।
রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম জানান, উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছেন এবং নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার সকল ধরনের একাডেমিক ও অফিস কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে, বুধবার (৩০ অক্টোবর) তার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই একটি বাস চাপা দেয় মাইশা ফৌজিয়া মিমকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী।
সড়ক দুর্ঘটনায় সহপাঠীর মৃত্যুর খবরে উত্তাল হয়ে ওঠে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। আগুন দেয়া হয় ঘাতক বাসে।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মিম হাত উঁচু করে রাস্তা পার হওয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস পরিবহনের একটি দ্রুতগতির বাস তাকে চাপা দেয় এবং দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং বাসটিকে ধাওয়া করে দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজায় আটক করে। তবে বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এনে ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি
১। মিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার।
২। নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান।
৩। বাসের চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার করে গণমাধ্যমে প্রচার।
৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ।
৫। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে গাড়ির গতিসীমা নির্ধারণ।
৬। সড়কে স্পিড সেন্সর স্থাপন।
৭। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতকরণ।
৮। অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা বৃদ্ধি।
৯। ক্যাম্পাসের সকল সড়ক মেরামত।
১০। ট্র্যাফিক পুলিশ নিযুক্ত করা।