বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন টাঙ্গাইলের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খান কিসলু (৫৮)।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে নাগরপুর সদর নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে নাগরপুর থানা পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃত আসাদুজ্জামান খান কিসলু নাগরপুর উপজেলার বেকড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বেকড়া গ্রামের মৃত. সাত্তার খানের ছেলে।
অভিযোগ ও পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট নাগরপুর বাজারে শান্তিপূর্ণভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালনকালে একটি সন্ত্রাসী দল ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। হামলার ঘটনায় তাইজুল ইসলাম নামের এক ছাত্র ৬৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭০/৮০ জনের নাম উল্লেখ করে নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
নাগরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার এলাকার বাসিন্দা দুলাল খান। পেশায় টেইলার্স কর্মী। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিজয়ের দিন ৫ই আগস্ট বিকেলে মিরপুর ২ নম্বর এলাকায় শর্টগানের গুলিতে আহত হন। বাম হাতের বাহুতে লাগা গুলিতে আহত হয়ে ভর্তি হন রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর দেওয়া বক্তব্যে সৃষ্টি হওয়ার জটিলতায় তার পদত্যাগের দাবিতে আবারও রাস্তায় নেমেছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহতরা।
তাদেরই একজন দুলাল খান। গত ৫ই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিজয় মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। বাহুর পেছনের দিক দিয়ে আসা শর্টগানের গুলিতে হাত ভেঙ্গে যায়। হাতের চিকিৎসায় ভর্তি ছিলেন পঙ্গু হাসপাতালে। সেখান থেকেই যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে।
দুলাল বার্তা২৪.কমে বলেন, আগারগাঁওয়ের পঙ্গু হাসপাতালের চার তলার এ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর বিছানায় চিকিৎসা নিচ্ছিলাম। কিন্তু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আবারও রাস্তায় নেমেছি।
হাসপাতাল থেকে কীভাবে আন্দোলনে এলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে লিখিত দিয়ে এসেছি। আমি আমার নিজ দায়িত্বে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার কথা লিখে দিয়ে এসেছি। শুধু আমি না শত শত আন্দোলনকারীরা হাসপাতাল থেকে আজকের আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন। এখন পর্যন্ত সিআরপি, গণস্বাস্থ্য, চক্ষুবিজ্ঞান, পঙ্গু, সিএমএইচ হাস্পাতালে চিকিৎসাধীন দুই শতাধিক আহতরা আসছে।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চট্টগ্রামে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না সে রাষ্ট্রপতি পদে থাকুক। তাই আমরা তাকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি তিনি যেন রাষ্ট্রপতির পথ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা জানি তাকে কীভাবে পথ থেকে সরাতে হবে। ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটামে কাজ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
কর্মসূচি থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে বাহার উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রপতি চুপ্পু যে পর্যন্ত তার পদ থেকে পদত্যাগ না করবেন সে পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। চুপ্পু একজন মিথ্যাবাদী। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না কোনো স্বৈরাচারের দোসর এই পদ থাকুক।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে মো.সোহাগ বলেন, আমরা দেখতে চাই চুপ্পু কতদিন বঙ্গভবনে থাকতে পারে। ছাত্র আন্দোলনের আহতরা পথে পথে আর দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পু কেন বঙ্গভবনে আরাম আয়েশ করবে। এই রাষ্ট্রপতি ভারতের দালাল এবং সে শেখ হাসিনার দোসর। আমি তাকে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির পর থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে কীভাবে বঙ্গভবনের ভিতর থেকে কিভাবে বের করতে হয় তাকে তা আমরা জানি।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় আগামী ২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) থেকে চট্টগ্রাম জেলায় অনুষ্ঠিত হবে মাসব্যাপী জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত মোট ১৮ দিনে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জেলার ১৫ উপজেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩০ জন কিশোরী ও স্কুল বহির্ভূত কমিউনিটির ৭ হাজার ৫১৮ জন কিশোরীসহ সর্বমোট ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৮ জন কিশোরীকে এইচপিভি ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ের সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিভিল সার্জন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘কিশোরীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যয়বহুল এই এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও জন্মনিবন্ধন বিহীন কিশোরীদের হোয়াইট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রসমূহে এবং পরবর্তী ৮ দিন স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রসমূহে কিশোরীদেরকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। এ ভ্যাকসিনে কোনো ধরনের ঝুঁকি বা বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এইচপিভি ভ্যাকসিনের অপপ্রচার বা গুঁজব রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় নগরীর জামালখানের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভাগ, মহানগর ও জেলা পর্যায়ে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মো. নওশাদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম জাহিদুল ইসলাম। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মো. নুরুল হায়দার, এসএমও (ম্যালেরিয়া) ডা. মোহাম্মদ আবুল কালামসহ দফতরের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন তার বক্তব্যে আরও বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিলে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যাবে। এটি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। এই মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে বর্তমান সরকার সারাদেশে আবারও বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। ১০-১৪ বছর বয়সী কোনো কিশোরী কেউ যাতে এ টিকা থেকে বাদ না পড়ে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে। ইপিআই ভ্যাকসিনের মধ্যে এইচপিভি সবচেয়ে দামি। এবারের লক্ষ্য হলো ৯৫ শতাংশ কিশোরীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। এইচপিভি ভ্যাকসিন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২ জন সমন্বয়ককে কমিটিতে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে দেশের সাতটি বিভাগে কিশোরী ও ছাত্রীদের মাঝে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে, যা চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। এ ক্যাম্পেইন সফল করতে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ৯০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেন্টমার্টিনে নভেম্বর মাসে পর্যটক যেতে পারবে, তবে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ২ হাজার জন পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে পর্যটন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নভেম্বর মাসে পর্যটকরা যেতে পারবেন, কিন্তু রাতে থাকতে পারবেন না। ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারবে না। আর ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটক যাওয়া বন্ধ রাখা হবে। তখন সেন্টমার্টিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সহকারী প্রেস সচিব নাইম আলী ও সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে মাগুরায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার ব্যানারে এ গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্রজনতার সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে বিপ্লবী ছাত্রজনতার গণজমায়েত করে। এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরে ভায়না মোড়ে অবস্থিত বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে নানা শ্লোগানের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ছাত্ররা তাদের দুই দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এ সময় তারা 'দিল্লি না ঢাকা' আবু সাঈদ মুগ্ধ' শেষ হয়নি যুদ্ধ' সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন,আমরা দুই দফা দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। আওয়ামী লীগের সহযোগী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এছাড়া ফ্যাসিবাদের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর পদত্যাগ করতে হবে। যদি দাবি মেনে না নেয়া হয় ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।