ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে

  • জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ক্রমশ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নাজুক হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, মৃতের ৬০ ভাগই এই এলাকার বাসিন্দা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুসারে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৫ হাজার ৯৬০ জন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে ২২৬ জন। তন্মধ্যে শুধু ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মৃত্যু হয়েছে ১১৮ জনের। এই এলাকার সাড়ে ৯ হাজার বাসিন্দা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার কয়েকটি সরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর যেসব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হয় তন্মধ্যে অন্যতম মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই হাসপাতালে ৯২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন, যার বেশিরভাগই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার। এই সিটির যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, খিলগাঁও ও মানিকনগর এলাকার মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিদিনের ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করা দেখা যায়, সারাদেশে ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা রাজধানী ঢাকাতে। তারমধ্য শীর্ষে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি এখানে মোট আক্রান্ত ৯ হাজার ৬৮৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ১১৮ জনের। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকার উত্তর সিটি, যেখানে মোট আক্রান্ত ৯ হাজার ৪৬১ জন, এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। পরের অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ, সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ৬৬৩ জন। সবচেয়ে কম আক্রান্ত হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দারা।

অথচ গত ১২ বছরে ঢাকার এই দুই সিটি করপোরেশন মশক নিধন আয়োজনে খরচ করেছে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে ঢাকার দুই সিটির চলতি অর্থবছরে মশা মারার বাজেট ১৫২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে উত্তরে ১২১ কোটি ৮৪ লাখ আর দক্ষিণে ৩১ কোটি এক লাখ টাকা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর মৌসুম নভেম্বর ও ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘায়ত হতে পারে। প্রাদুর্ভাব এখনো চরমে পৌঁছায়নি, তবে ধীরে ধীরে কমার আগে এটি আগামী সপ্তাহে শীর্ষে ওঠতে পারে। এ বছরের পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় বেশি নাজুক। তারা জনগণকে সিটি করপোরেশনের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের সুরক্ষার জন্য ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

দক্ষিণ সিটিতে কেন এত ডেঙ্গু রোগী, এ বিষয়ে জানতে বার্তা২৪.কম যোগাযোগ করে দক্ষিণ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরের সঙ্গে। শামসুল কবির স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিবেদনকে মারাত্মক ভুলে বলে আখ্যায়িত করেন। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেন।

ডা. ফজলে শামসুল কবিরের দাবি, দক্ষিণে দেশের বড় বড় মেডিকেল হাসপাতাল অবস্থিত। অধিদফতর প্রতিদিন সারাদেশের ডেঙ্গু আক্রান্তদের যারা এই এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয় তাদেরকে এই সিটির রোগী বলে উল্লেখ করে। যেহেতু এই হাসপাতালগুলো দক্ষিণে অবস্থিত। অথচ আমরা যখন তালিকা দেখি তখন দেখি চার ভাগের এক ভাগ পাওয়া যায়।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যান দেখে পরিকল্পনা সাজাই না। আমরা বছরের শুরুতে অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু মোকাবেলায় পরিকল্পনা সাজিয়েছি। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ চলমান রয়েছে।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি কতটুকু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে ও থাকবে।