বন্যপ্রাণী র্যাকুনের আতঙ্কে নিজস্ব বাড়ি ও সম্পত্তি ছেড়ে পালিয়েছে সিয়াটেলের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত পলসোবতে বসবাসকারী এক আমেরিকান নারী।
আমেরিকান সংবাদ সংস্থা এপি বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকার পলসবোতে এক মহিলা বসবাস করতো। তিনি প্রথমদিকে শখের বশে র্যাকুন নামের অল্প কিছু বন্যপ্রাণীকে নিয়মিত খাবার প্রদান করতো। শখের বশে বন্যপ্রাণীকে খাওয়ানোর দায়ে যে তার সম্পত্তি ছেড়ে চলে যেতে হবে তা তিনি কখনো কল্পনাও করতে পারেনি।
পলসবোর ঐ মহিলা ওয়াশিংটনের কিটসাপ কাউন্টির শেরিফের ডেপুটিদের জানিয়েছে, কয়েক দশক আগে থেকে তিনি র্যাকুনের একটি পরিবারকে খাওয়ানো শুরু করেন। গত দেড় মাস আগেও র্যাকুনগুলোর আচরণ ও সংখ্যা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে র্যাকুনের সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রায় শতাধিক র্যাকুন খাবারের খোঁজে তার বাড়ির চারপাশে থাকে। এক পর্যায়ে তার গাড়ি, বাড়ির দরজা, জানালায় আচড় কাটতে থাকে। কেউ দরজা দিয়ে বের হলে তাকে ঘিরে ধরে। এরূপ পরিস্থিতে টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে ঐ মহিলা এই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিপার্টমেন্ট অফ ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফের একজন মুখপাত্র ব্রিজট মির (Bridget Mire) জানান, রাষ্ট্রীয় আইনের অধীনে ভাল্লুক বা তার মতো বড় মাংসাশী প্রাণীকে খাওয়ানো বেআইনি। তবে কাউন্টিগুলিতে অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের খাওয়ানো নিষিদ্ধ করার জন্য স্থানীয় আইন থাকতে পারে।
তবে সংস্থাটি মানুষকে বন্যপ্রাণী খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত করেছে। র্যাকুনগুলো রোগ বহনের পাশাপাশি গুরুতর কোনো সমস্যাও তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছেন মির।
তবে র্যাকুনগুলো এখন এই বাড়িতে থাকলেও তারা এখানে খাবার পাচ্ছে না। ফলে তাদের মাঝে এই স্থানকে আর খাবারের উৎস মনে হবে না বলে আশাবাদী বলেও জানিয়েছেন মির।
ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আরিফকে পদোন্নতি দিয়ে সচিব করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।
পদোন্নতি দিয়ে তাকে তথ্য কমিশনে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও আরেক প্রজ্ঞাপনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুজ্জামানকে ভূমি রেকর্ড ও জরিফ অধিদফতরের মহাপরিচালক করা হয়েছে। তাকে অতিরিক্ত সচিব থেকে পদোন্নতি দেয়ে গ্রেড-১ মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার ১৬ কর্মকর্তাকে বদলি করে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব, ড. মোহাম্মাদ মুসলিমকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, শেখ মতিয়ার রহমানকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, মোঃ শাহজাহান মিয়াকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ খানকে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব, বেগম নিগার সুলতানাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, বেগম রোকসানা খাঁনকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব, রাবার বোর্ডের পরিচালক সরোজ কুমার নাথকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) পদে পদায়ন করা হয়েছে।
এছাড়া আবদুল লতিফ খানকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, মোঃ সাজেদুর রহমানকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, মুঃ জসীম উদ্দিন খানকে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব, ড. মো: লুৎফর রহমানকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, মো: আব্দুল্লাহ হাক্কানীকে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব, শাহ আলম মুকুলকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এবং জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব এস এম ফেরদৌসকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) পদে পদায়ন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী ছাত্র শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে ফ্লাইওভারের নামকরণ করার দাবি জানিয়েছে আমরা চট্টগ্রামবাসী নামের একটি সংগঠন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সিডিএ'র চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
আমরা চট্টগ্রামবাসী সংগঠনের আহবায়ক এস কে খোদা তোতনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান লায়ন মুজিবর রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর হায়দার আরিফ, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজনীতিবিদ অধ্যাপক শেখ মহিউদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লায়ন মুজিবর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী ছাত্র ওয়াসিম আকরাম প্রথম শহীদ হয়েছেন। শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের নামকরণ চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। এই বিপ্লবের ইতিহাস শহীদ ওয়াসিমের ইতিহাস চট্টগ্রামবাসী যুগ যুগান্তর স্মরণ রাখবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে তানভীর হায়দার আরিফ বলেন, শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে চট্টগ্রামে লালখান বাজার ফ্লাইওভারটি নামকরণ করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার সরকার এবং তাদের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা শহীদ ওয়াসিম এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দিবো না।আমরা শহীদ ওয়াসিমের ইতিহাস চট্টগ্রামের প্রতিটি দেওয়ালে দেওয়ালে লিখতে চাই।
বিশেষ অতিথি শেখ মহিউদ্দিন বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন আর ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতন হয়েছে। শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে লালখান বাজার ফ্লাইওভারটি নামকরণ করার জোর দাবি জানাই।
সভাপতির বক্তব্যে এস কে খোদা তোতন বলেন, স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের সন্তান ওয়াসিম আকরাম শহীদ হয়েছে। যতদিন গণতন্ত্র থাকবে ততদিন শহীদ ওয়াসিম আকরামের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আমরা জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শহীদ ওয়াসিম আকরাম তার জীবন উৎসর্গ করে দেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলন সফল করেছে। আমরা লালখান বাজার ফ্লাইওভারের নাম শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে নামকরণের জোর দাবি জানাই।
আমরা চট্টগ্রামবাসী সংগঠনের সদস্য সচিব এবি জিয়া উদ্দিন ও আরিফুর রহমান মিঠুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন আমরা চট্টগ্রামবাসী সংগঠনের নেতা তোফাজ্জল হোসেন, আকতার খান, এস এম আজাদ, এডভোকেট আব্দুল আজিজ, লায়ন রিয়াজ, জুয়েল, হিসাম দুলাল, কালাম, লিটন, মালেক, মিজান, শাকিল, রাসেল, ওমর ফারুক, বিপ্লব প্রমুখ।
এক স্বামীকে নিয়ে দুই বধূর টানাটানির দৃশ্য দেখা যায় সিনেমাতে। বাস্তবেও কখনো কখনো ঘটে এমন কিছু। তবে এক ঘাট নিয়ে দুই সংস্থার টানাটানি মনে হয় এই প্রথম! বঙ্গোপসাগরের বুকের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের মূল ভূখণ্ড সীতাকুণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান নৌ পথ কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাট। সেই ঘাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে সরকারি দুই সংস্থা জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
শুরু থেকেই জেলা পরিষদ মালিক হিসেবে এই ঘাট পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু এক যুগ আগে হঠাৎ বিআইডব্লিউটিএ-এই ঘাটের মালিকানা দাবি করে বসে। দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্তও। আদালত জেলা পরিষদের পক্ষে রায় দিলে ‘চুপ’হয়ে যায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নীরবতা ভেঙে ২০২৩ সালে এসে আবারও ঘাটের মালিকানা নিয়ে সরব হয় বিআইডব্লিউটিএ। এখন জেলা পরিষদের পাশাপাশি তারাও ঘাটের মালিকানা দাবি করে ইজারা দিচ্ছে।
ইজারা দিয়ে জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএ ‘মধু আহরণে’ব্যস্ত হলেও ঘাটের উন্নয়নে দৃশ্যমান তেমন কোনো কিছুই করছে না দুই সংস্থা। ফলে কোপ পড়েছে পরিষেবায়। সন্দ্বীপবাসীদের হয়রানিও তাই চরমে। দুই ইজারাদার মিলেমিশে কাজ করে আসায় নিজেদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্বও না হলেও আছেন বিপাকে। কেননা দুই সংস্থা রাজস্ব নেওয়ায় ইজারাদারদের ওপর চাপ পড়েছে। আর সেই চাপের প্রভাব পড়েছে যাত্রীদের ওপরও।
বিআইডব্লিউটিএ-এর ‘অবৈধ’হস্তক্ষেপ!:
জেলা পরিষদ কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটটি সংস্থাটি যুগ যুগ ধরে পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ঘাটটি ২০১২ সালে মো. আবুল কাসেম রাজা নামের এক ব্যক্তিকে ইজারা দিলে শুরু হয় বিরোধ। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালত ডিভিশনে ১১৫১৭/২০১৩ নম্বর রিট দায়ের হয় যেখানে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অনুকূলে রায় দেওয়া হয়। শুধু বিআইডব্লিউটিএ নয়, এক পর্যায়ে ঘাটের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে বসে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনও (বিআইডব্লিউটিসি)। একইভাবে সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনে সিভিল পিটিশন নম্বর ২৭২৩/২০১২ এবং ২৭২২/২০১২ দায়ের করা হয়, সেবারও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের পক্ষে চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়। ঘাটের মালিকানা ও পরিচালনা সংক্রান্ত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের পক্ষে সর্বোচ্চ আদালতের রায় থাকার কারণে উক্ত ঘাট নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বা বিআইডব্লিউটিসি’র হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। রায়ের পর বিআইডব্লিউটিসি ঘাটের মালিকানা থেকে সরে গেলেও বিআইডব্লিউটিএ-মালিকানা দাবি করে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয়।
জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএ-এর মধ্যে নতুন করে দ্বন্দ্বের শুরুটা হয় মূলত ২০২১ সালে। ২০১৩ সালে কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটটির ইজারা নিয়ে বিআইডবিউটিএ ও জেলা পরিষদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হলে জটিলতা নিরসনে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের উদ্যোগে স্থানীয় দুই সাংসদ (চট্টগ্রাম ৩ ও চট্টগ্রাম ৪), বিআইডবিউটিএ ও জেলা পরিষদ-চট্টগ্রাম এর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর কুমিরা-গুপ্তছড়া ফেরীঘাট পরিচালনা নিয়ে বিআইডবিউটিএ ও জেলা পরিষদের সাথে ৬ বছরের সমঝোতা হয়। সমঝোতা অনুসারে এই ঘাটের সম্পূর্ণ ইজারা ব্যবস্থাপনা জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত হবে।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জেলা পরিষদ নতুন করে সমঝোতা চুক্তি করতে চাইলে না করে বসে বিআইডবিউটিএ। সংস্থাটির যুক্তি ছিল-২০২০ সালে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফেনী থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত পুরো এলাকাকে নৌ-বন্দর ঘোষণা করে সরকার। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ-কে নৌ-ঘাটগুলো পরিচালনার দায়িত্বও দেওয়া হয়। সেই আইন অনুযায়ী নৌ ঘাটটি পরিচালনা করতে চায় বিআইডব্লিউটিএ। যদিও আদালতের রায় ছিল যুগ যুগ ধরে পরিচালনা করে আসা জেলা পরিষদের পক্ষে।
আদালতের রায় থাকার পরও বিআইডবিউটিএ অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল। তিনি বলেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি জেলা পরিষদকে সুষ্ঠুভাবে ঘাট পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করছে। ঘাটটি যে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিলাট ডিভিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের একটা রায় আছে। এরকম আপিলাট ডিভিশনের একটা রায়কে উপেক্ষা করে অন্য কেউ মালিকানা দাবির সুযোগ নেই। সবপক্ষের সম্মতিতে সম্পূর্ণ বৈধ এক্তিয়ার নিয়ে জেলা পরিষদের ঘাট পরিচালনাকালে বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি বা অন্য কোনো পক্ষের অযাচিত হস্তক্ষেপ শুধু আইনের বরখেলাপ নয়, ঘাটের পরিবেশ ও যাত্রীসেবার মানোন্নয়নেও অনাকাঙ্ক্ষিত বাঁধা।’ শাব্বির ইকবাল সুষ্ঠুভাবে ঘাট পরিচালনায় সবপক্ষের সহযোগিতা চান।
তবে বিআইডব্লিউটিএ-চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘এলাকাটি নৌ বন্দর হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। এ কারণে এই ঘাটে অন্য কারো কর্তৃত্ব করার সুযোগ নেই। সেজন্য ২০২৩-২৪ অর্থ বছর থেকে আমরা পরিচালনা করে আসছি।’
বর্তমানে জেলা পরিষদের ইজারাদার মেসার্স আদিল এন্টারপ্রাইজ। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক আজমাইন আদিল চৌধুরী। প্রতিষ্ঠানটিকে ইজারা হিসেবে প্রতিদিন ভ্যাটসহ ৯৩ হাজার ৫০০টাকা করে পরিশোধ করতে হয় জেলা পরিষদকে। অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিএ-এর ইজারাদার হিসেবে আছে মেসার্স আর কে এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. জগলুল হোসেন নয়নকে ইজারা হিসেবে বছরে ভ্যাটসহ প্রায় ৮২ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ-কে।
ভোগান্তিতে দ্বীপবাসী:
এক ঘাট নিয়ে দুই সংস্থার রশি টানাটানিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে আছেন দ্বীপবাসী। একটি ঘাট দুই পক্ষ বড় অঙ্কের টাকায় ইজারা দিলেও ঘাটের উন্নয়নে কাজ করছে না কেউই। ফলে সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামে আসা-যাওয়ার নৌপথে যাত্রীদের জন্য দুর্ভোগ অপেক্ষা করে বাঁকে বাঁকে। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সরকার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছিল দুটি জেটি। বিআইডব্লিউটিএ-এর মাধ্যমে নির্মিত এই দুই জেটির কোনোটি থেকেই প্রত্যাশিত সুফল পায়নি সন্দ্বীপবাসী। সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া অংশে নির্মিত জেটির একাংশ ভেঙে যায় উদ্বোধনের পাঁচ মাসের মাথায়। আর চট্টগ্রামের কুমিরা অংশে ভেঙে যায় ২০২২ সালের মে মাসে। মাত্র ১০ বছরে দুটি জেটির এমন দশায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। জেটি থাকলেও ভাটার সময় কোমরসমান পানি ও কাদামাটি মাড়িয়ে তীরে উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। জাহাজে করে আসা যাত্রীদেরও ‘লাল বোটে’ করে এনে কোমরসমান পানিতে নামিয়ে দেওয়া হয়। এতে চরম ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করছে শিশু, বয়স্ক, নারী ও অসুস্থ রোগীরা। শুধু তাই নয় আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেই যেন স্তব্ধ হয়ে যায় দ্বীপের মানুষের জীবন। সন্দ্বীপবাসীদের আশা দ্রুতই দুই সংস্থার বিরোধ মিটবে। তাহলে তাদের যাতায়াতে যেমন কষ্ট কমবে, ভোগান্তিও দূর হবে।