নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম ও ৫৫টি কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন যশোর-১ (শার্শা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন।
রোববার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় তার নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে ভোট বর্জনের কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিরপেক্ষ ও উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটের আশ্বাস দিলেও মাঠে ভোটে সে পরিবেশ ছিলনা।
সকাল সাড়ে ৮ টার সময় তার নিজ কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা তাদের ভোটার দের কেন্দ্র ঢুকতে বাধা দেওয়াসহ মারপিট করে। এছাড়া তার স্ত্রী ও তার আত্মীয় সজনরা ভোট দিতে গেলে তাদেরকেও মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
শার্শার মোট ১০২ কেন্দ্রের সব কয়টি কেন্দ্রে ভোটারদের যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ৫৫টি কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য তিনি এই প্রশ্নবিদ্ধ ভোট বর্জন করছেন বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, যশোর শার্শা ১ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫১১ জন।
এবারো কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যে কটিয়াদী উপজেলায় একটি পূজা মণ্ডপ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পূজারীরা দেখার জন্য আসছেন। আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং আধুনিক আলোকসজ্জা ও চিত্রকর্ম এটিকে ফুটিয়ে তুলছে বহুগুণ।
উপজেলার পৌর এলাকায় পূর্বপাড়া সহা পাড়া মহল্লায় যুব সংঘের উদ্যোগে এই পূজাটির আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূজারিদের ভীড় লেগেই আছে এই মণ্ডপে। কিশোরগঞ্জের আশপাশের জেলা থেকেও অনেকেই আসছে পরিবার নিয়ে পূজা ঘুরে দেখার জন্য৷ এর আধুনিক আলোকসজ্জা ও ডিজাইন মুগ্ধ করে সবাইকে। এর আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে রাতের বেলায়৷ সবগুলো আলোকসজ্জা একসাথে জ্বলে ওঠার পরই সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে গেইট দেখলে মনে হয় বিশাল কোন অট্টালিকা দাঁড়িয়ে আছে আধুনিক প্রবেস গেইট দৃষ্টিনন্দিত। রুচিশীল যে কাউকে সহজেই মুগ্ধ করবে।
পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলা থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী প্রনব সাহা বার্তা ২৪.কম'কে বলেন,‘এটি দেখার পর পুজার আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়। পরিবার নিয়ে আসছি কটিয়াদীর পুজা ঘুরতে৷ আমার দেখা সবচেয়ে বড় পূজা এটি।’
শ্যামল চন্দ্র দে নামে আরেক পূজারী বলেন,‘আশপাশের কয়েক জেলার মধ্যে এটি হয়তো সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুজা অনেক গুলো পুজা ঘুরে দেখছি। কিন্তু এই পুজাটা সবচেয়ে অন্যরকম আকর্ষণ মনে হচ্ছে। আমাদের সাথে যারা আসছে সবাই মুগ্ধ হয়েছে দেখার পর৷'
পূজাটির আয়োজক কমিটির সদস্য ও পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুজিৎ সাহা বলেন,'আমরা দূর থেকে কারিগর ও জিনিসপত্র এনে এই পুজা তৈরি করেছি৷ সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এখানে দুর থেকে মানুষ এসে পুজা দেখে মনের মধ্যে তৃপ্তি পায় এবং পুজার আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায় এটা আমাদের জন্য সার্থক। ১০ বছর ধরে আমরা সাহা পাড়ার যুব সংঘের পক্ষ থেকে এটির আয়োজন করে আসছি৷'
উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব সারদীয় দুর্গাপূজা। পূজামণ্ডপগুলোতে নানা উপকরণ দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা আর আরধনা করছেন ভক্তরা। ভক্তরা দেবী দুর্গার কাছে সব ধরণের অশুভ শক্তি বিনাশ করে দেশবাসীর জন্য শান্তিকামনা করেন। ঢাকের বাজনা, শঙ্ক আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে । চন্ডিপাঠ আর পূজারমন্ত্র ধ্বনিত হচ্ছে পূজামন্ডপগুলোতে।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূজারিদের আনাগোনায় মুখরিত মণ্ডপ। সববয়সী নারীপুরুষ আসছেন ঘুরতে। ছোটদের হাত ধরে শিশুরাও আসছে প্রতিমা দেখতে।
পরিবার পরিজনকে সাথে নিয়ে এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপ চলছে ছুটাছুটি। মণ্ডপ গুলোতে চলছে আরাধনা আর ঢুল তবলার সাথে সাথে পূজার আনুষ্ঠানিকতা৷ একসাথে নেচে গেয়ে আনন্দে মেতেছে সবাই। মণ্ডপ গুলোর আশপাশে দৃষ্টিনন্দিত আলোকসজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে৷ জেলায় সবচেয়ে বেশি ও আকর্ষণীয় পুজা হয় কটিয়াদীতে। ফলে বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ঘুরতে আসেন পুজারীরা। পুজার নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের নিয়মিত টহল।
জেলায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুজা হয় কটিয়াদী উপজেলায়৷ এখানে এবার মোট ৩৩ টি পূজা মণ্ডপে পুজা হচ্ছে। এর মধ্যে, পৌর এলাকাতে ১৪টি ও উপজেলায় পূজা মন্ডপ রয়েছে ১৯টি। আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
অতীতের চেয়ে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করার কথা জানান পূজারী ও আয়োজকরা।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বার্তা২৪.কম'কে বলেন,‘নিয়মিত তদারকি ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।’
মা ইলিশ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে ২২ দিন পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে শনিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত (১৩ অক্টোবর মধ্যরাত) থেকে। এ নিষেধাজ্ঞা চলবে ৩ নভেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত।
এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে এবং একই সঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে। প্রতি বছর এই সময়ে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার লক্ষে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনা করে এ বছরও ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
বুধবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে।
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
গাইবান্ধার সবকটি বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে রুপালী ইলিশ। বাজারে আগ্রহ নিয়ে ইলিশ মাছের দাম শুনলেও অধিকাংশ ক্রেতাকে ফিরতে হচ্ছে হতাশ হয়ে। ক্রেতাদের স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে ব্যবধান তৈরি করেছে ইলিশের আকাশছোঁয়া দাম। বর্তমান বাজারে নিম্নবিত্ত তো নয়ই, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ক্রয় সাধ্যের বাইরেও এখন এই মাছ। বর্তমানে বাঙালির জাতীয় মাছ ইলিশ এখন উচ্চবিত্তের বিলাসিতা!
সরেজমিনে গাইবান্ধার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারের সর্বোচ্চ ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৬০০ টাকা থেকে ১৬৫০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ৫০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিজের দাম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা এবং সবচেয়ে ছোট আকারের ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ যেটি জাটকা হিসেবে পরিচিত সেটিও কিনতে গুনতে হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
এদিন বাজারে দেখা যায় ইলিশ কিনতে আগ্রহী ক্রেতা থাকলেও ক্রয়ে সাধ্য না থাকায় দাম শুনেই চলে যাচ্ছে ক্রেতারা। কেউ কেউ বাজারের সব থেকে ছোট ইলিশ কিনলেও, দামই করেনি বড় ইলিশের। যারাও ছোট ইলিশ কিনেছেন, তারাও প্রত্যাশার অর্ধেক। তবে দু, একজনকে বড় ইলিশ কিনতেও দেখা গেছে।
ইলিশের দাম কিভাবে, কেন বাড়ে তার সঠিক উত্তর জানেনা গাইবান্ধার স্থানীয় ক্ষুদ্র ইলিশ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি 'আমরা যেরকম দামে ক্রয় করি, সেভাবেই বিক্রি করে থাকি। আমরাতো ইলিশের মূল আড়তে যেতে পারিনা বা যাইনা।' ফলে ইলিশের সিন্ডিকেট সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা নেই তাদের।
তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি, ইলিশের বৈদেশিক চাহিদার প্রভাব ও সরবরাহ সংকটই মোটা দাগে ইলিশ মাছের দাম বৃদ্ধির কারণ। এছাড়া পরিবহন খরচের কারণেও গাইবান্ধায় ইলিশের দাম বৃদ্ধি পায়। আর আকাশছোঁয়া দাম বৃদ্ধির কারণেই সাধারণের পাতে উঠছে না ইলিশ মাছ।
গাইবান্ধা শহরের নতুন বাজারের পরেশ মৎস্যআরতের স্বত্বাধিকারী পরেশ চন্দ্র বলেন, 'আমাদের ইলিশের প্রাপ্তিস্থান মূলত পদ্মা, মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে। তবে, ইলিশ মাছের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হয় মূলত ঢাকায়। ঢাকায় ইলিশের বড় ব্যবসায়ীরা এর দাম নির্ধারণ করে থাকেন। আসলে গাইবান্ধা থেকে আমাদের কিছুই করার নেই।'
তিনি জানান, 'মাছ সরবরাহের ওপর নির্ভর করে বড় ব্যবসায়ীরা দাম নির্ধারণ করেন। মাছের দাম কমে গেলে বড় বড় ব্যবসায়ীরা কোলেস্টোরেজে মাছ মজুদ করে রাখেন। যার কারণে ইলিশের দাম সারা বছরেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থাকে।'
অন্যদিকে, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজিতে অস্বাভাবিক হারে ইলিশের দাম বৃদ্ধি হচ্ছে বলে মনে করেন দেশের সচেতনমহল। বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধার সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য মনজুর আলম মিঠুর সঙ্গে কথা হয় বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদকের।
এসময় তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের বেশির ভাগ জেলেরা মূলত শ্রমিক। তাদের জাল নেই নৌকা নেই কিন্তু মাছ ধরে। নদী বা সমুদ্র থেকে সংগ্রহ করা ইলিশ স্থানীয় পাইকারদের কাছে বিক্রির আগে কয়েকধাপ হাত বদল হয়। তাদের মধ্যে বড় সিন্ডিকেট করে মধ্যস্বত্বভোগীরা। ইলিশের চাহিদার সময় ও বিষয় মাথায় রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা মজুদ করে সরবরাহে সংকট তৈরি করে। ফলে ইলিশের দাম দ্বিগুণ হয়। এছাড়া বাংলাদেশের ইলিশ বিদেশে রফতানিও একটি বড় কারণ।'
এসময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, 'গাইবান্ধা তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষ কৃষি নির্ভর। এ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষদের সর্বোচ্চ মজুরী ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। সেই আয়ে তাদের ইলিশ কেনা দুঃস্বপ্ন। ইলিশ দেশের জাতীয় মাছ হলেও এই মাছ এখন সাধারণের না। ইলিশ এখন এ দেশের ধনী শ্রেণির বিলাসিতার পণ্য।'
শহরের পুরাতন বাজারে বাজার করতে আসা মোসলেম উদ্দিন বলেন, 'কিছু কাঁচা বাজর করে ভাবছি কিছু মাছ কিনবো। ইলিশের দোকানে দেখলাম ছোট সাইজেরও অনেক ইলিশ আছে। তাই দামও করলাম, দাম শুনে কেনা হলোনা।'
এসময় কত টাকা করে কেজি চাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, '৪/৫ টিতে কেজি ইলিশের দামই ৬০০ টাকা। তাই নেয়নি। ভাবছি অন্য মাছ নেব।'
একই বাজারে ইলিশ ক্রেতা মদনের পাড়ার ট্রাক চালক সবুজ মিয়া বলেন, 'স্বামী-স্ত্রী সন্তানসহ বাজার করতে এসেছি। স্ত্রী ইলিশ মাছ কেনার কথা বলেছেন। বাধ্য হয়ে ৬০০ টাকা কেজির চার পিস মাছ নিলাম। কিনতে পারবোনা তাই বড় ইলিশের দামই করিনি।'
এদিন ৯০০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ এক হাজার ৪৪০ টাকায় কিনতে দেখা গেছে এক ক্রেতাকে। তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন। তবে তার পেশা আইন সংশ্লিষ্ট বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুরাতন বাজারের ইলিশের ক্ষুদ ব্যবসায়ী প্রদীপ চন্দ্র বলেন, 'আমরা যেরকম দামে ক্রয় করি, সেভাবেই বিক্রি করে থাকি। গাইবান্ধার বাজারে ছোট ইলিশের দাম কম থাকায় চাহিদা বেশি। ফলে ছোট ইলিশের বিক্রিও বেশি। বড় ইলিশ অনেক সময় আমাদের লস (ক্ষতি) করেও বিক্রি করতে হয়।'
গাইবান্ধা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারজান সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ইলিশ মূলত উপকূলীয় অঞ্চলেরর মাছ। তবে বর্তমানে ইলিশ উপকূল ছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে।'
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রতেও ইলিশ ধরা পড়ছে। গত বছর গাইবান্ধায় ১৭.১৭ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়েছে এবং চলতি বছরের এ পর্যন্ত ধরা পড়েছে ১৪ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ।
গাইবান্ধা সদ্য যোগদান করা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রাশেদ বলেন, '১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হবে। এই সময়টাতে নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। দেশে তথা গাইবান্ধার নদ-নদীগুলোতে ইলিশের অভয়াশ্রম গড়ে তোলা, ইলিশ সম্পদ রক্ষা এবং এর উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্নভাবে আমরা কাজ করছি। নিষিদ্ধ সময়টার জন্য জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।'
শিক্ষায় বৈষম্য দূর করে দ্রুত ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অধিবেশনে এই দাবি জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জুবায়ের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আমির ড. মাওলানা মুহাম্মাদ ঈশা শাহেদী। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মাদ এরশাদ উল্লাহ ভূঁইয়া। সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমিন, মাওলানা ফারুক আহমাদ, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ভূঁইয়া, ও মাওলানা মো. আব্দুল কাদির।
কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া মাদ্রাসা ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বকারী এক বিপ্লবী কাফেলা, যারা সূচনা লগ্ন থেকেই মাদ্রাসা ছাত্র ও শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করে যাচ্ছে।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় বারবার বিতর্কিত পাঠ্যসূচি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের ইসলামী মূল্যবোধ বজায় রেখে বিতর্কিত পাঠ্যক্রম বাতিল করে নতুনভাবে পাঠ্যসূচি সাজানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে হাজার হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও এখনো একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাও জাতীয়করণ করা হয়নি। আজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা টিফিন থেকে শুরু করে বৃত্তিসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, অথচ ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ছাত্ররা এসব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। শিক্ষায় বৈষম্য দূর করে দ্রুত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ করতে হবে।
বক্তারা ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে বলেন, মুসলমানদের প্রথম কেবলা বাইতুল মুকাদ্দাসকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এতে হাজার হাজার নিরীহ নারী, পুরুষ, ও শিশুর প্রাণহানি ঘটছে। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে তারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইসরায়েল, আমেরিকা, ও অন্যান্য জড়িত শক্তিদের আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। তারা ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জোরালো দাবি জানান।
উক্ত কাউন্সিলে মো. কাইয়ুমকে সভাপতি ও হাফেজ মো. ইমরানুল হককে প্রধান সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠন করা হয়৷