পেটের সমস্যা তৈরিকারী ৬ খাবার

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

হুট করেই অকারণে পেটের সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রবণতা সবার মাঝেই দেখা যায়। আমরা ভেবে থাকি যে, পেটের সমস্যাটি নির্দিষ্ট কোন কারণ ব্যতীত দেখা দিচ্ছে। আসলে তা ভুল ধারণা। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে থাকা খাদ্য উপাদান থেকেই পেটের সমস্যাটি দেখা দেয়। এমন পরিচিত ছয়টি খাবার সম্পর্কে জেনে রাখুন, যা পেটের সমস্যা তৈরির জন্য দায়ী।

কার্বপূর্ণ খাবার

food

যদিও সকল ধরনের কার্ব পেটের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে কার্ব পেটের সমস্যা তৈরির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। সিম্পল কার্ব তথা ময়দা, সাদা ভাত, সাদা রুটি, পাউরুটি পেটের সমস্যা তৈরি করে বলে এই খাবারগুলো সমস্যাদায়ক খাদ্য উপাদান হিসেবে বলা হয়। কমপ্লেক্স কার্বের চেয়ে সিম্পল কার্ব সহজেই পরিপাক হয়ে যায় এবং রক্তের সাথে মিশে যায়। এতে করে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে বেড়ে যায় প্রদাহের মাত্রাও।

বিজ্ঞাপন

অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট

মূলত দুই ধরনের অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকর ফ্যাট প্রদাহ ও পেটের মেদ তৈরি করে। ট্র্যান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। শরীরের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট প্রয়োজন হলেও, এই অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটগুলো পেটের সমস্যা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি হৃদযন্ত্রে ও ফুসফুসেও ফ্যাট বৃদ্ধি করে। এর জন্য প্যাকেটজাত খাবার, ক্যানজাত খাবার, সয়াবিন তেলে ভাজা খাবার, ফুল ফ্যাট ডেইরি খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

প্রক্রিয়াজাত মাংস

food

সুস্বাদু ও সহজে খাওয়া যায় বলে প্রসেসড বা প্রক্রিয়াজাত মাংস বেছে নেন অনেকেই। অথচ এ মাংসগুলোতেই থাকে সবচেয়ে বেশি ক্যালোরি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। ফলে প্রক্রিয়াজাত মাংস শুধু পেটের জন্য নয়, হৃদযন্ত্রের জন্যেও ক্ষতিকর। এছাড়া এই মাংস খাওয়ার পর দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয় পরিপাক হতে। যা থেকে পেটের জটিলতা তৈরি হয়। ডায়েটেশিয়ানদের মতে, প্রক্রিয়াজাত মাংসে কোন আঁশ থাকে না, ফলে পরিপাক হতে সমস্যা দেখা দেয়।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার

প্রাণীজাত সকল দুধেই থাকে ল্যাকটোজ, যা FODMAP (Fermentable, Oligosacharides, Disaccharides, Monosaccharides and Polyols) নামেও পরিচিত। ল্যাকটোজ আমাদের পরিপাকতন্ত্রে ল্যাকটেজ নামক এক এনজাইমের মাধ্যমে ভাঙ্গে ও পরিপাক হয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরে ল্যাকটেজ উৎপন্নের হার কমে যেতে থাকে। এতে করে একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর সহজে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার হজম হতে চায় না এবং এ থেকে পেটের সমস্যা তৈরি হয়।

ফ্যাট-ফ্রি খাবার

উপরেই জানানো হয়েছে ক্ষতিকর দুই ফ্যাটযুক্ত খাবার পেটের জন্য ক্ষতিকর। এখানে বলা হচ্ছে ফ্যাট-ফ্রি খাবারও পেটের জন্য সমস্যা তৈরি করে। দ্বিধাযুক্ত বিষয় মনে হলেও আদতে এটা খুবই সহজ ও পরিষ্কার একটি বিষয়। অনেকেই মনে করে ফ্যাট-ফ্রি খাবার স্বাস্থ্যকর, যা ভুল ধারণা। ফ্যাট-ফ্রি খাবার খাওয়া হলেও এতে ক্ষুধাভাব দূর হয় না। ফলে এর সাথে অন্যান্য খাবারও খাওয়া হয়। যা ক্ষেত্র বিশেষে পেটের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই অলিভ অয়েল বা অ্যাভোকাডোর মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

লবণাক্ত খাবার

food

যেকোন খাবারে উচ্চমাত্রার লবণ মানেই তা পেটের মেদ বাড়াবে। সাথে ওয়াটার রিটেনশনের সমস্যা তো আছেই। এমনকি দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রএনটেরলগিতে ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা তথ্য থেকে জানা যায়, পেট ফাপাভাব দেখা দেওয়ার মূল কারণ খাবারে লবণের পরিমাণ তথা সোডিয়ামের আধিক্য। চিপস, ক্র্যাকার্স, চানাচুরসহ যে সকল খাবারে অতিরিক্ত লবণ থাকে, সে খাবারগুলোকে পরিহার করতে হবে।