ভারতে এসে চরিত্র পাল্টে করোনা হয়ে উঠেছে ভয়ঙ্কর

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলকাতা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে অন্তত ৮২ ধরনের করোনাভাইরাস। তারমধ্যে ৫০ শতাংশ ভাইরাসে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। ‘সার্সকোভ-২’ ভাইরাসে, স্পাইক প্রোটিন হঠাৎ করেই পরিবর্তন এসেছে। যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ডি ৬১৪ জ’ বলা হয়ে থাকে। যা কোভিড-১৯-কে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলছে।

এর জেরেই ভারতে এতো বেশি ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস। এবং খুব তাড়াতাড়ি ছড়াচ্ছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ে এমনই সতর্কবার্তা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি’র গবেষকরা।

বিজ্ঞাপন

ওই গবেষকদের এক সদস্য ‘টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ’এর সাবেক শিক্ষার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য জানান, ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রোটিনগত পরিবর্তন হয়ে চলেছে। যা খুবই উদ্বেগের।

এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ‘কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (সিএসআইআরও)’ এর ভারতীয় বংশোদ্ভূত অধ্যাপক এসএস ভাসান এবং তার সহকর্মীরাও একই মত দাবি করছেন।

বিজ্ঞাপন

তাদের মতে, ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের ৮২টি প্রকারের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশের প্রোটিনগত পরিবর্তন হচ্ছে। পাশাপাশি তারা বলেছেন ‘যদিও, সমগ্র বিশ্বে ভাইরাসের প্রোটিনগত পরিবর্তন হচ্ছে। তবে ‘সার্সকোভ-২’ ভাইরাসে এতবার জিনের গঠন বদলেছে, যে তার আসল উৎস খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে গবেষকদের কাছে।’

তবে করোনাভাইরাসের প্রোটিনগত পরিবর্তনের পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন গবেষকরা। বেশিরভাগরেই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ প্রথমদিকে ধরা পড়ছে না। যার ফলে আক্রান্তকে চিহ্নিত করা মুশকিল হয়ে পড়ছে। আর সে কারণেই করোনা সংক্রমণ রোধ অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

তবে এই সমস্যার সমাধান বের করেছেন আমেরিকার কয়েকজন গবেষক। তাদের মতে, করোনাভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধার তিনদিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘ্রাণশক্তি চলে যাচ্ছে। কোনও ব্যক্তির এমন লক্ষ্মণ দেখলে তাকে সহজেই করোনা আক্রান্ত হিসেবে চিনতে পারবেন গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

ওই গবেষকরা ১০৩ জন করোনা রোগীর শারীরিক লক্ষ্মন এবং চারিত্রিক পরিবর্তন ছয় সপ্তাহ ধরে পর্যালোচনা করেছেন। তাদের সেই পর্যালোচনার ফলাফল সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকদের বক্তব্য, ১০৩ জনের মধ্যে অধিকাংশই ঘ্রাণশক্তি আংশিক অথবা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। আর সেটা ঘটে করোনা আক্রান্ত হওয়ার তিন থেকে চারদিনের মধ্যেই।

আমেরিকার ‘সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়’এর অধ্যাপক আহমেদ সেদাঘাট জানিয়েছেন, ‘করোনা কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তা ঘ্রাণশক্তি চলে যাওয়ার মধ্যে বোঝা যায়। যদি দেখা যায়, ঘ্রাণশক্তি সম্পূর্ণ চলে গিয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হবার সময় এসে গিয়েছে। জ্বর তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। এটি কোভিড-১৯-এর অন্যতম বড় উপসর্গ ।’

এদিকে, কানাডার একটি মেডিকেল জার্নাল দাবি করেছে, প্রকৃতির তীব্র দাবদহে করোনাভাইরাস সংক্রমণে কোনও প্রভাব ফেলছে না। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা সহ বিশ্বের ১৪৪টি দেশে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা চালানো হয়।

টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার জুনি জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণে উষ্ণ আবহাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, এমনই একটি ধারণা থেকে আমরা প্রথমে গবেষণা শুরু করি। কিন্তু প্রাথমিক ফলাফল দেখে আমরা অবাক। গরম বা অতি আর্দ্রতা করোনা সংক্রমণে কোনও ভূমিকা পালন করে না।