ভারতে করোনা মোকাবিলায় মে মাসকেই 'পাখির চোখ' বিবেচনা
ভারতে করোনা মোকাবিলার জন্য আগামী মাস অর্থাৎ মে মাসকেই পাখির চোখ হিসেবে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একটি অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট এমনই দাবি করছে। ওই রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে ভারতে। তবে তারপরেই ধীরে ধীরে সেই সংক্রমণ কমবে বলেও আশা রাখছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই অবস্থায় করোনা মোকাবিলায় একমাত্র ভরসা লকডাউন। এই সময়ে লকডাউনে যাবতীয় নিয়ম মেনে চললে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তারা। কেন্দ্রীয় সরকার দেশজুড়ে করা একটি অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, ভারতে যে সমস্ত রাজ্য আগেই লকডাউন ঘোষণা করেছিল, সেখানে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে।
এই তালিকায় উঠে এসেছে প্রথম তিনটি রাজ্যের নাম- রাজস্থান, পাঞ্জাব ও বিহার। এদের পরেই আছে পশ্চিমবঙ্গ। অন্যদিকে, দেরিতে লকডাউন ঘোষণা করে বিপাকে পড়েছে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলো। শেষ খবর, শুধু মহারাষ্ট্রেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৫১। মৃত ২১১ জন। অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গও অনেক আগেই লকডাউন ঘোষণা করে অনেকটা স্বস্তিজনক অবস্থায় আছে। রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ১৯৮, মৃত ১২।
ভারতে এই মুহূর্তে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৫১। মোট মৃতের সংখ্যা ৫৫৯। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৮৫৪ জন। ফলে লকডাউনে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে অনেকটাই রাশ টানা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। এই সূত্রে আরও জানা গেছে যে, লকডাউনের আগে আক্রান্তের সংখ্যা তিনদিনে দিগুণ হচ্ছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহের হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় লেগেছে ৬ দিন। দেশের ১৯ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে আক্রান্তের গড় দেশের হিসেবের তুলনায় কম।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ভারতে প্রতি ২৪ জনের মধ্যে মাত্র একজনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। সেখানে ইতালিতে প্রতি ৬ দশমিক ৭ জনে একজন, আমেরিকায় প্রতি ৫ দশমিক ৩ জনে একজন ও ব্রিটেনে প্রতি ৩ দশমিক ৪ জনে একজন আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত ভালো জায়গায় থাকলেও করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে কোনোমতেই রাশ আলগা করা হবে না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত দেশে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৪০০টি পরীক্ষা হয়েছে। সংক্রামিতদের জন্য ১ হাজার ৯১৯টি বিশেষ হাসপাতালে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার আইসোলেশন বেড ও ২১ হাজার ৮০০টি আইসিইউ বেড রয়েছে।