ভারতে করোনা আক্রান্ত ৩০, কোমর বেঁধে নামছে মমতা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলকাতা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস এখনও তার দাপট দেখিয়ে চলেছে। ভারতেও ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। 

ভারতের এমন সংকটকালীন অবস্থায় প্রস্তাবিত বেলজিয়াম সফর বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, এবার হোলির অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন না তিনি। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সকলকে ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শও দিয়েছেন মোদি।

বিজ্ঞাপন

পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে ওঠায় দিল্লিতে সব প্রাথমিক স্কুল ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনা নিয়ে বাড়তে থাকা আতঙ্কের মধ্যেই ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ল। ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ত্রিশ জনের বেশি।

করোনা মোকাবিলায় মাস্ক দেওয়া হচ্ছে

এর ফলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের প্রতিটি রাজ্যের জেলা, ব্লক ও গ্রামস্তরে র‌্যাপিড রেসপন্স টিম গড়ার আবেদন জানিয়েছেন। যাতে গণহারে সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব হয়। আর এর জেরেই করোনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সব জেলা শাসককে চূড়ান্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে মমতা সরকার।

বিজ্ঞাপন

গোটা রাজ্য এখন ভাইরাস মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুক্রবার (৬ মার্চ) জারি হওয়া, জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশে কলকাতাসহ সব পুরসভাকে চূড়ান্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক, গ্লাভস ও পার্সোনাল প্রিভেন্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিআই (বিশেষ ধরনের পোশাক) মজুত রাখতে বলা হয়েছে।

এর সাথে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, অধ্যাপকদের জন্য সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও। তাতে বিদেশ ফেরত অধ্যাপক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ভবনের প্রটোকল মেনে চলতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি শিক্ষার্থীদের রাজ্যের নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে।

কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ও স্বাস্থ্য দফতরে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, এই ভাইরাস মোকাবিলায় যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার, প্রশাসন নিচ্ছে। তবে শহর কলকাতা এখনও সেভ জোনে আছে। তবুও কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে ইতিমধ্যে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে বলা হয়েছে, এই ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে কেউ চিকিৎসা করাতে এলে তার নাম ঠিকানা নথিভুক্ত করে রাখতে। চিকিৎসা শুরুর পরও যদি দেখা যায় কোনো রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাহলে রাজ্য সরকারের কাছে সেই নাম ঠিকানা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি কলকাতায় এই ভাইরাস প্রবেশের আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন অতনু ঘোষ। তার যুক্তি ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা যে কয়েকটি কেস এসেছে তারা সবাই বাইরে থেকে এসেছেন। তাছাড়া ভারতের আবহাওয়ায এ ভাইরাসের জন্য প্রতিকূল বলেও জানান তিনি। তবে সামাজিকমাধ্যম ফেক নিউজ মানুষের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক বাড়াচ্ছে বলে শহরবাসীকে সজাগ থাকতে বলেছেন তিনি।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, যেকোনো বিদেশি নাগরিককে আগের থেকে কড়া নিয়মে ভারত তথা কলকাতায় প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কারণ, এখন অবধি এ ভাইরাস যারা বহন করছেন তারা সবাই বিদেশের নাগরিক। তাই বিদেশি নাগরিকদের দিকে কড়া নজর রাখলে ভাইরাসের প্রতিকূলে মোকাবিলা করা যাবে বলে আভাস মিলেছে। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতা, করোনা ভাইরাস নিয়ে আগের থেকে অনেকটাই তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। সে প্রশাসন হোক বা সাধারণ নাগরিক।