করোনায় সজাগ কলকাতা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলকাতা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এক চীনা নাগরিকের স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা (থার্মাল স্ক্রিনিং) চলছে/ছবি: বার্তা২৪.কম

এক চীনা নাগরিকের স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা (থার্মাল স্ক্রিনিং) চলছে/ছবি: বার্তা২৪.কম

চীনের উহান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনা ভাইরাস। এতে করে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আর এ কারণে চীনা নাগরিকদের ভিসা বাতিল করছে ভারত। চীনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে যে ই-ভিসাগুলি অনুমোদন করা হয়েছিল সেগুলোকেও বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে, যাত্রীদের মধ্যে সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্তদের শনাক্ত করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতা বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসিয়েছে। মেশিনটির মাধ্যমে দেহের উত্তাপ মাপার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে কেউ আক্রান্ত কিনা তা শনাক্ত করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে অনেক আগেই এ যন্ত্র বসানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ভারতের ২১টি বিমান বন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীদের আলাদা পথে বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে বিমানবন্দর থেকে বের হবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইভাবে কলকাতা বিমানবন্দরে আলাদা এরোব্রিজ ব্যবহার করার নির্দেশ জারি হয়েছে হংকং এবং সিঙ্গাপুরের যাত্রীদের ক্ষেত্রেও।

কলকাতা বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে

এমনকি চীন, হংকং ও সিঙ্গাপুরের যাত্রীরা বিমানবন্দরের যে স্থানে অবস্থান করবেন বা অপেক্ষা করবেন সেটিকেও পৃথক করা হয়েছে। বিশেষ শারীরিক পরীক্ষার পরই তারা ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন। এই তিন দেশ ছাড়া দেশের অন্যান্য বিদেশ নাগরিক যারা গত দুই মাসের মধ্যে চীনে গিয়েছিলেন, ভাইরাসের কড়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তবেই ভারতে প্রবেশের অনুমতি মিলছে তাদের। কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে জানানো হয়েছে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া আটকাতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একইভাবে জলপথকে নিরাপদ করবার জন্য কলকাতা বন্দরেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পোর্ট।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে হিলি, পেট্রাপোল এবং গেদে-পশ্চিমবঙ্গের এই তিন ভারত-বাংলাদেশ সীমানায় করোনা ভাইরাসের জন্য নজরদারি শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতর।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এ খবর জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

বাংলাদেশ থেকে নিয়ম অনুযায়ী আসা মানুষের ওপর কেন এই নজরদারি হবে? এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করাদের মধ্যে অনেক চীনা ফেরত বাংলাদেশি থাকতে পারেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরদারির মাধ্যমে তা জানা সম্ভব হবে।

একেতো বিদেশি নাগরিকদেরকে বাড়তি প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এই দুই সীমানার ইমিগ্রেশনের কর্তাদের সম্মুখে। তারমধ্যে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ।

প্রসঙ্গত, এর আগে একই প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের তিনটি ভারত-নেপাল সীমানা-মিরিক, পশুপতি বাজার ও পানিট্যাংকিতে নজরদারি শুরু হয়েছিল। সেখানেও একাধিক নেপালীর মধ্যে সন্দেহজনক ভাইরাস আক্রান্তের কারণে তাদের ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তাদের তুলে দেওয়া হয়েছিল ওই দেশটির প্রশাসনের হাতে।

পাশাপাশি, কলকাতার বিখ্যাত চীনা পাড়া তথা চায়না টাউনের করোনা নজরদারি বাড়াতে এলাকার স্বাস্থ্য কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে মমতার সরকার। ওই চীনা পাড়ায় মানুষজনের মধ্যে কেউ চীন থেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করে এলে প্রাথমিকভাবে বিমান বন্দরে বা সমুদ্রবন্দরে মাধ্যমে তা ধরা পড়ার কথা। তা সত্বেও বাড়তি সতর্কতা হিসেবে স্বাস্থ্যকর্মীদের সজাগ করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রথমবার কোনো বিদেশি ব্যক্তির পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলে ১৪ দিন পর ফের করোনা পরীক্ষা করতে হবে। এছাড়া কলকাতায় যে সব করোনা আক্রান্ত রোগী বা সন্দেহজনক ব্যক্তি তাদেরকে কলকাতা বেলেঘাটা সরকারী, আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।