কলকাতায় সাড়ম্বরে উদযাপিত হলো মুজিব বর্ষের ‘ক্ষণগণনা’
সাড়ম্বরে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) উদযাপিত হলো বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতায় সর্বকালের বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের ক্ষণগণনা।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন আজ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের প্রতীকী বিমান অবতরণের মাধ্যমে শুরু হওয়া জন্মবার্ষিকীর ক্ষণগননা অনুষ্ঠান অনুসরণের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে। উপ-হাইকমিশনের ‘বাংলাদেশ গ্যালারি’-তে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের ‘মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি বিটিভি থেকে উপস্থিত দর্শকরা উপভোগ করেন।
এরপর উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুর হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রেরিত বাণী পাঠ করেন এ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মোঃ মোফাকখারুল ইকবাল ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত তৎকালীন আকাশ বাণীর সংবাদকর্মী পঙ্কজ সাহা।
সাহা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিল্লী হয়ে কলকাতার জনগণের সাথে দেখা করার জন্য দমদম এয়ারপোর্টে নামবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দমদম এয়ারপোর্টে আসার পর বৃটিশের রয়েল এয়ারফোর্স-এর বিমান থেকে বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা ছিল কলকাতায় নামব কিন্তু এখন আমার প্রবল ইচ্ছা, আগে আমার দেশের মানুষের সাথে দেখা করব। তবে খুব তাড়াতাড়ি আমি কলকাতায় আসব।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর কথা রেখেছিলেন ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি গড়ের মাঠে ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক বক্তব্য দিয়ে।
সভাপতির বক্তব্যে উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, আজকের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিবসটি বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭২-এর এই দিনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রর্ত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বিজয়ের পরিপূর্ণতা অর্জন করে। যদিও ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয়। কিন্তু যার নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীন সর্বভৌম বাংলাদেশ সেই জাতির পিতা তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। কাজেই ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশের ফিরে আসার মধ্যেই নিহিত ছিল স্বাধীনতার পরিপূর্ণতা।
হাসান আরও বলেন, পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জুলফিকার আলী ভুট্টো ০৮ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হন এবং বঙ্গবন্ধু পি.আই-এর একটি বিশেষ বিমানে করে লন্ডনে পৌঁছান। ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছার আগে বঙ্গবন্ধু দিল্লীতে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারতবাসীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রর্দশন, যাদের ঐকান্তিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে ঢাকা বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বৃটিশ রাজকীয় বাহিনীর কমেট বিমানটি অবতরণ করে। সেখানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজুদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য নেতা কর্মীরা বঙ্গবন্ধুকে সাদরে অভ্যর্থনা জানান।