কোরবানির পশুর চামড়ার দাম আরও কমানো হলো
১ আগস্ট শনিবার সারাদেশে ঈদুল আজহা পালিত হবে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। ঢাকার ভেতরে গরু প্রতি বর্গফুট ৩৫-৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ২৮-৩২ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ মূল্য গতবারের চেয়ে চেয়ে কম। ২০১৯ সালে ঢাকার ভেতরে গরু প্রতি বর্গফুট ৪৫-৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা, বকরির ১৩-১৫ টাকা দর ধরা হয়েছিল।
রোববার (২৬ জুলাই) কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত এক জুম প্লাটফর্ম সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ তথ্য জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, খাসির কাঁচা চামড়া সারাদেশে প্রতি বর্গফুট ১৩-১৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার মূল্য ১০-১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘যথাসময়ে চামড়ায় লবণ দিতে হবে। লবণ দিয়ে চামড়া ঢাকা আনতে হবে। সেজন্য পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ করতে হবে।’
‘অভ্যন্তরীণভাবে চামড়া পরিবহনে যাতে কোথাও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছি। আর বর্ডার দিয়ে যাতে কোনো চামড়া পাচার না হয় সেজন্য বর্ডারে আরও নজরদারি বাড়াতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কোরবানির চামড়া বা বিক্রি করা অর্থ দান করতে হয়। এই দান এতিমখানা, মাদরাসা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীই পেয়ে থাকে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে চামড়ার বাজার নিম্নমুখী।
২০১৪ সালে ৭৫-৮০ টাকা, ২০১৫ সালে ৫০ টাকা, ২০১৬ সালে ৫০-৫৫ টাকা, ২০১৭ সালে ৫০-৫৫ টাকা, ২০১৮ সালে ৪৫-৫০ টাকা এবং ২০১৯ সালে ৪৫-৫০ বর্গফুট হারে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ২০১৯ সালে চামড়া দরপতন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রচুর পরিমাণে চামড়া বিক্রিই হয়নি। শত শত চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে কিংবা মাটি চাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
চামড়ার দরপতন নিয়ে বিশেষ সিন্ডিকেটের কথা প্রায়ই উচ্চারিত হয়। কিন্তু সেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে কারা জড়িত সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেন না। সিন্ডিকেটের কারণে প্রধানত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কোরবানি চামড়ার অর্থ যাদের পাওয়ার কথা সেই দরিদ্র জনগোষ্ঠী, প্রান্তিক ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের বাজার দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদাও কমে গেছে।
এদিকে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের জন্য কওমি মাদরাসাভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন, বিবৃতি ও গোলটেবিল বৈঠক করে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করা হোক।