কাবা পরিষ্কারের ছবি দেখে আবেগাপ্লুত
রমজান মাসকে বলা হয়, ইবাদতের বসন্তকাল। এ মাসে মুমিনমাত্রই ইবাদত-বন্দেগির আগ্রহ, গোনাহ বর্জনের প্রেরণায় নিজেকে মশগুল রাখার চেষ্টা করে। আল্লাহতায়ালার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে রোজা পালনে রোজাদার ব্যক্তিই অনুভব করেন হৃদয়ের সতেজতা। এ লক্ষে চলে নানা প্রস্তুতি।
সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাঁদ দেখে সাপেক্ষে দুই একদিনের মধ্যে রমজান মাস শুরু হবে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে নতুন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রমজান পালন করতে হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুসলমানরা।
রমজানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মক্কার মসজিদে হারাম কর্তৃপক্ষ তারাবির ইমামের স্থান নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ শেষ করেছে।
হারামাইন অর্থ দুটি হারাম বা দুটি সম্মানিত স্থান। মক্কা শরিফ ও মদিনা শরিফকে একত্রে হারামাইন শরিফাইন বলা হয়। হারাম শরিফের প্রাণকেন্দ্র মসজিদে হারাম। এর কেন্দ্রস্থলে কালো বর্ণের চতুষ্কোণ ঘরটিই হলো বায়তুল্লাহ শরিফ বা মহান আল্লাহর সম্মানিত কাবাঘর।
রমজানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পবিত্র কাবা ঘর পরিষ্কার করা হয়েছে। অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনা ও বিশেষ জীবাণুনাশক দিয়ে কাবা ঘরের ছাদ, কাবার গিলাফ, গিলাফের লেখা, ক্যালিগ্রাফি, কাবার দরজা, মিজাবে রহমত (হাতিমের ঠিক ওপরে কাবা শরিফে ঘরের ছাদের সঙ্গে একটা সোনার পরনালা আছে। বৃষ্টির সময় এই পরনালা দিয়ে কাবার ছাদের পানি পড়ে। সে জন্য এর নাম মিজাবে রহমত। মিজাবে রহমতের নিচে নামাজ পড়ে দোয়া করলে তা কবুল হয়) ও হাজরে আসওয়াদসহ পবিত্র কাবা পরিষ্কারের কাজ সম্পন্ন করেছেন মসজিদে হারামের দক্ষ কর্মীরা।
মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) কাবা পরিষ্কারের একাধিক ছবি হারামাইনের ইমামদের পরিচালিত বিভিন্ন টুইটার হ্যান্ডেল ও ফেসবুক থেকে আপলোড করা হয়েছে। কাবা পরিষ্কারের এসব ছবি থেকে অনেকেই আবেগে নানা মন্তব্য করেছেন। আবেগমাখা সেসব মন্তব্যের বেশিরভাগে আল্লাহতায়ালার রহমত প্রার্থনা করা হয়েছে। অনেকে কাবার পরিষ্কারের কাজ করতে আগ্র্রহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আবার চলতি বছর উমরা করার ইচ্ছা থাকলেও চলমান পরিস্থিতিতে তা করতে না পারার জন্য আফসোস প্রকাশ করেছেন।
ইসলামি বিধানমতে মক্কা শরিফে অবস্থানকালে নির্ধারিত ইবাদত ছাড়া সবচেয়ে বেশি পুণ্যময় ইবাদত হলো- বায়তুল্লাহ শরিফ তথা খানায়ে কাবা তাওয়াফ করা। আর রমজানে সব ইবাদতের সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার করোনার কারণে উমরা, তাওয়াফ, ইতিকাফসহ সর্ব সাধারণের জন্য কাবার দরজা বন্ধ। এমতাবস্থায় কাবা পরিষ্কারের ছবি দেখে বেশি আবেগ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। যে আবেগে মিশে আছে কান্না। এ কান্না শুধু বিষাদময় রমজান কাটানোর ভয়ে নয়, আল্লাহর রহমত চেয়েও।