মসজিদের জামাত বিষয়ে গওহরডাঙ্গা মাদরাসার পরামর্শ
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদরাসার (টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ) পক্ষ থেকে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা ও ধর্মীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
রোববার (২৯ মার্চ) গওহরডাঙ্গা মাদরাসার নাজেমে তালিমাত (শিক্ষা সচিব) মুফতি নুরুল ইসলাম ও সদর সাহেব রহ.-এর পৌত্র মুফতি উসামা আমিন স্বাক্ষরিত প্রচারপত্রে এসব দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হয়।
দিক-নির্দেশনায় বলা হয়, বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম, সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয় সবার উচিত তা মেনে চলা। বিশেষ করে করোনাভাইরাস থেকে দেশ ও জাতিকে সুরক্ষিত রাখতে সরকার যেসব এলাকা লকডাউন করেছে তা জরুরি মনে করে যথাযথভাবে অনুসরণ করা। নিজে সতর্ক থাকার পাশাপাশি অন্যদের সতর্ক করা।
গওহরডাঙ্গা মাদরাসার পক্ষ থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে নামাজ, জামাত ও মসজিদে গমনের ক্ষেত্রে যেসব পরামর্শ দিয়েছে, তাহলো-
এক. বর্তমান জরুরি পরিস্থিতিতে যেসব এলাকায় সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, সেসব এলাকার মসজিদগুলো চালু রাখার উদ্দেশ্যে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জামাত চালু রাখবে। অন্যরা নিজ নিজ বাসা-বাড়িতে নামাজ আদায় করবে।
দুই. করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যেখানে কম বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেখানে সুস্থ ব্যক্তিরা নিম্নোক্ত বিষয়ের প্রতি খেয়াল রেখে মসজিদের জামাতে শরিক হয়ে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
ক. নামাজের পূর্ব প্রস্তুতি (অজু, সুন্নত) বাসা-বাড়ি থেকে সম্পন্ন করে আসা,
খ. মুসল্লিদের পরস্পর নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা,
গ. জামাত শেষ হওয়ার পর সুন্নত, নফল ও অন্যসব আমল বাসা-বাড়িতে আদায় করা।
ঘ. সর্দি-কাঁশি ও ঠাণ্ডা জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি, বয়োবৃদ্ধ ও বাচ্চারা আপাতত মসজিদে আসবে না। বিশেষ করে বিদেশ ফেরতরা সব ধরনের ইবাদত-বন্দেগি বাড়িতে সম্পন্ন করবেন।
তিন. করোনাভাইরাস বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানের এ বিশ্বাস থাকতে হবে, কোনো রোগ বা ভাইরাসের কারণে আল্লাহর হুকুম ছাড়া মৃত্যু হয় না। কোনো ভাইরাস মৃত্যু দিতে পারে না। মৃত্যু হয় একমাত্র আল্লাহর নির্দেশে। এসব রোগ ও মহামারি মানুষের গোনাহের কারণে এসে থাকে।
এজন্য সব মুসলমানদের উচিত নিজের আকিদা ও বিশ্বাস ঠিক রাখা, নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া, যাবতীয় গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা এবং অধিক পরিমাণ তওবা ও ইস্তিগফার করা।
প্রচারপত্রে আরও বলা হয়, চলমান অবস্থায় যারা বাসা-বাড়িতে নামাজ আদায় করবেন; আশা করা যায়- আল্লাহতায়ালা তাদেরকে জামাতের সওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না।