১২ রবিউল আউয়াল
নবী মোর পরশমণি
মানবতার মহাদূত হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরশ পাথর, যার মাধ্যমে অন্ধকার জগত হয়েছে আলোকিত, পথহারা মানুষ পেয়েছে সঠিক পথের দিশা।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত অনাচার ও অজ্ঞতার পৃথিবীতে হেরার আলোকরশ্মি নিয়ে হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন ঘটেছিল। ১২ রবিউল আউয়াল হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম এবং ওফাতের দিন।
১২ রবিউল আউয়াল তারিখে হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত (জীবনালেখ্য) আর সুরত (চেহারা, আকার-আকৃতি) নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এদিন মুসলিম উম্মাহ কোরআন ও সুন্নাহর চেতনায় উজ্জীবিত হন এবং হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনব্যাপী মিশনকে আত্মস্থ করতে সচেষ্ট হন।
হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসেছিলেন তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের বাণী নিয়ে। নবী ও রাসূল হিসাবে তার কাজগুলো ছিলো- সকল প্রকারের তাগুতকে নস্যাৎ করে একমাত্র স্রষ্টা-পালনকর্তা আল্লাহর আনুগত্যে মানবসমাজকে পথ দেখানো এবং মানুষকে নিপীড়ন, নির্যাতন, অন্যায়, অবিচারের হাত থেকে রক্ষা করা।
হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরশ মণির মতো। মানবতার প্রতিটি সদস্য যাবতীয় কল্যাণের পথ পেয়েছে তাঁর আগমনে ও স্পর্শে। আলোকিত জীবনের উজ্জ্বল উদাহরণ তিনি।
তিনি ইসলামের নবী। কিন্তু তিনি রাহমাতাল্লিল আলামিন, জগতসূহের জন্য রহমত ও কল্যাণস্বরূপ। বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত তিনি।
তিনি খাতামুন্নাবী। সর্বশেষ নবী তিনি। কিয়ামত পর্যন্ত আর কোনো নবী আসবেন না। তিনিই সর্বশেষ নবী হিসাবে বিশ্বমানবতার জন্য প্রতিষ্ঠিত। তিনি হায়াতুন্নবী। তিনি কিয়ামত পর্যন্ত নবী হিসাবে সমাসীন।
স্বয়ং আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ ও সালাম পেশ করেন। হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ ও সালাম পেশ করা উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য ওয়াজিব।
হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করা রহমত, বরকত ও কল্যাণের স্মারক। পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকে যে কেউ হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করলে তা ফেরেশতারা হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছ পৌঁছে দেন। হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের সালাম গ্রহণ করেন ও জবাব দেন।
হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের বার্তাবাহকরূপে সত্য, ন্যায়, কল্যাণের দিশারী। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদর্শিত পথ, যা কোরআন ও সুন্নাহভিত্তিক শরিয়ত, তার সঠিক ও পূর্ণ অনুসরণের মধ্যেই মানুষের ইহ ও পরকালীন নাজাতের নিশ্চয়তা। কবির ভাষায়, ‘নবী মোর পরশ মণি/নবী মোর সোনার খনি/নবী নাম জপেই যে জন সেইতো দোজাহানের ধনী।'