দোয়া কবুলের বিশেষ ৪ মুহূর্ত

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কাবার সামনে মোনাজাত, ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র কাবার সামনে মোনাজাত, ছবি: সংগৃহীত

দুনিয়ার কোনো মানুষের কাছে যদি আমরা কিছু চাই, তখন তিনি রাগ বা বিরক্ত হন। কিন্তু আল্লাহতায়ালা এত বেশি দয়ালু যে, তার কাছে কিছু চাইলে তিনি খুশি হন। এমনকি না চাইলে তিনি রাগ করেন।

হাদিসে এসেছে, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তার ওপর রাগ হন।’ -জামে তিরমিজি

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া স্বয়ং আল্লাহতায়ালা নিজেই তার কাছে চাওয়ার জন্য এবং যা চাইব তা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কোরআনে কারিমে তিনি বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।’ -সুরা মুমিন : ৬০

দোয়া উপকারী ইবাদত। এই উপকারী ইবাদত তথা দোয়া কবুলের কিছু বিশেষ সময় রয়েছে। যে সময়ের দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয়। এমনই কয়েকটি মুহূর্ত হলো-

রাতে ঘুম ভাঙলে
আমরা যারা দুর্বল, শেষ রাতে জাগতে পারি না, তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ। প্রায় সবারই রাতে কখনো না কখনো ঘুম ভাঙে। ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে অন্যকোনো কথা না বলে সহজ কয়েকটি কালিমা পড়ে এর পর যে দোয়া করব আল্লাহতায়ালা কবুল করবেন।

হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রাতে ঘুম ভাঙলে বা জাগ্রত হয়েই যে ব্যক্তি এই কালিমাগুলো বলবে (উচ্চারণ)- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন কাদির, আলহামদুলিল্লাহ, ওয়া সুবহানাল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।’

অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক, তার কোনো শরিক নেই। রাজত্ব কেবল তারই এবং প্রশংসাও কেবল তার। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ সবার বড়। আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত (গোনাহ ও অমঙ্গল থেকে) কেউ বাঁচতে পারে না এবং কেউ (নেক ও ভালো কাজের) শক্তি রাখে না।

এরপর বলবে, ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলি লি।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে মাফ করে দিন।

অথবা অন্যকোনো দোয়া করবে, তার দোয়া কবুল করা হবে। এরপর যদি অজু করে নামাজ পড়ে তাহলে তার নামাজ কবুল করা হবে। -সহিহ বোখারি : ১১৫৪

জেহাদের সময়
দোয়া কবুলের আরেকটি সময় হলো, কাফেরদের মোকাবেলায় ভীষণ যুদ্ধ চলাকালে দোয়া করা। হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.)-এর সূত্রে ইরশাদ হয়েছে, ‘দুই সময় দোয়া করলে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয় না, আজানের সময় এবং রণক্ষেত্রে তুমুল লড়াই চলাকালে।’

হাদিসের আরেক বর্ণনায় এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুই সময় আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং দোয়া কবুল করা হয়, আজানের সময় এবং জেহাদের ময়দানে সারিবদ্ধ অবস্থায়।’ -সহিহ ইবনে হিব্বান : ১৭২০

সিজদারত অবস্থায়
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় সিজদারত অবস্থায়। তাই তখন বেশি বেশি দোয়া করো। -সহিহ মুসলিম : ৪৮২

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, একদা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- শুনে রাখো, আমাকে রুকু ও সিজদায় কোরআন মাজিদ পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং রুকুতে তোমরা রবের সম্মানপ্রকাশক তাসবিহ পড়ো আর সিজদায় অধিক পরিমাণে দোয়া করো। কেননা, সিজদা অবস্থায় দোয়া করলে তা কবুল হওয়ারই অধিক উপযুক্ত। -সহিহ মুসলিম : ৪৭৯

রোজা ও সফর অবস্থায়
মুসাফির যতক্ষণ সফর অবস্থায় থাকে এবং রোজাদার ব্যক্তি যতক্ষণ রোজা অবস্থায় থাকে, যে দোয়া করে আল্লাহতায়ালা কবুল করেন। হাদিস শরিফের বক্তব্য অনুযায়ী তাদের দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তিনটি দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া। -সুনানে কুবরা, বায়হাকি : ৩/৩৪৫