ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোনে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে হাজি, হজযাত্রী ও এজেন্সি মালিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে একটি চক্র। তাদের প্রতারণা থেকে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করতে রোববার (২০ অক্টোবর) জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে এক শ্রেণির প্রতারকচক্র টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়ে হজযাত্রী, হাজি, হজ এজেন্সির মালিক বা প্রতিনিধি ও হজ গাইডদের ফোন করে তাদের ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ ও নগদ ইত্যাদির তথ্য চাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হাজি, হজ এজেন্সি ও হজ গাইডদের অর্থ ফেরত (রিফান্ড) সরাসরি ব্যাংক হিসাবে BEFTN বা চেকের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এজন্য কোনো ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ ও নগদের তথ্য চাওয়া হয় না। গত ৯ অক্টোবর ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এমতাবস্থায়, প্রতারকচক্র ফোন করে টাকা ফেরতের কথা বলে ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ ও নগদের তথ্য চাইলে তা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ধরনের ফোন আসলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করার জন্যও পরামর্শ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এর আগে জনৈক মিজানুর রহমানের প্রতারণার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানায় ধর্ম মন্ত্রণায়।
মিজানুর রহমান নিজেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পরিচয় দিয়ে ০১৩০৪-১৬০২৮০ মোবাইল নম্বর থেকে সাধারণ হজযাত্রী কিংবা যারা ইতোপূর্বে হজে গিয়েছেন, তাদেরকে ফোন করে রিফান্ড হিসেবে অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা জানায়। সেই অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা বলে সাধারণ হাজিদের নিকট থেকে ব্যাংক একাউন্ট, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং (নগদ ও বিকাশ) তথ্য জানার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে বিভিন্ন হজযাত্রী, হাজিদের নিকট হতে অভিযোগ পাওয়ার পর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, এই নামে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের নেই এবং মোবাইল নম্বরটি (০১৩০৪- ১৬০২৮০) এ মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর নয়।
উল্লেখ্য, হজ শেষে যদি কোনো টাকা হাজি সাহেবদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়, তাহলে সেটা মন্ত্রণালয় যথাযথভাবে হাজি ও হজ এজেন্সির মাধ্যমে পরিশোধ করে। এ ছাড়া বেসরকারি মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধিন বাতিল করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি টাকা ফেরত পান। সেটাও দেওয়া হয় চেকের মাধ্যমে।
উন্নতমানের বাসা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও গাইড খরচের নামে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো নানা কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পান না হাজিরা। বরং তাদেরকে জিম্মি করে চরম দুর্ভোগে ফেলা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসা ও পরিবহন সুবিধাসহ যেসব সুযোগ-সুবিধা হাজিদের দেওয়ার কথা ছিলো তা দেওয়া হয়নি। তাদের যে ধরনের বাড়িতে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সৌদি আরবে নেওয়া হয়, বাস্তবে তা হয়নি। রাখা হয় অত্যন্ত নিম্নমানের ঘরে গাদাগাদি করে। কাবা শরিফের কাছাকাছি বাড়ি ভাড়ার কথা বলে তাদের রাখা হয় ৫-১০ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে। যেখান থেকে পায়ে হেঁটে মসজিদে হারামে গিয়ে নামাজ আদায় করা অসুস্থ ও বৃদ্ধদের জন্য প্রায় অসম্ভব। গাড়ির কথা বললেও সেখানে গাড়ি দেওয়া হয়নি। গাইডের অভাবেও অপরিচিত জায়গায় হাজিদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেকে হজের আহকামও ঠিকমতো পালন করতে পারেননি।
আবার কিছু এজেন্সির বিরুদ্ধে হজ যাত্রীদের খাবার না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পলিথিনে করে খাওয়া অযোগ্য পঁচা-বাসি খাবার দেওয়া হয় তাদেরকে। এজেন্সিগুলো খাবার সরবরাহ বাবদ মোটা অংকের অর্থ নিলেও হাজিদের নির্ভর করতে হয়েছে বাইরে থেকে কিনে আনা খাবারের ওপর। আবার অনেকে দেশ থেকে নেওয়া চিড়া মুড়ি খেয়েই দিন পার করেছেন।
পশু কোরবানি নিয়েও ছিল অস্বচ্ছতা। পশু ক্রয়ের জন্য টাকা নিয়ে হাজিদের অজ্ঞাতে কোরবানি দেওয়া হয়েছে। এমনই নানা অভিযোগ জমা পড়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে। অভিযুক্ত হজ এজেন্সির সংখ্যা ২০-২৫টির মতো।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের হজ মৌসুমে বিভিন্ন হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব হজ এজেন্সির বক্তব্য গ্রহণ, আনা অভিযোগ ও অভিযোগকারীর বক্তব্য যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, লাইসেন্স বাতিল, লাইসেন্স স্থগিত, জামানত বাজেয়াপ্ত, আর্থিক জরিমানা, তিরস্কার দণ্ড থেকে শুরু করে যেকোনো শাস্তি দেওয়া হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষ অভিযোগ গুরুতর হলে অভিযোগকারীদের ফৌজদারি মামলারও পরামর্শ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আবার অনেক এজেন্সিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি ছোট অপরাধ করা এজেন্সিগুলোকে সতর্ক করা হয় ভবিষ্যতের জন্য।
হজ এজিন্সেগুলোকে শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর এজেন্সিগুলোকে শুনানির জন্য ডাকা হয়। আবার কোনো এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়।
হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এবার আমাদের কাছে ২০-২৫টি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাই। সন্তোষজনক হলে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। কাউকে সতর্ক করে দেওয়া হয় ভবিষ্যতের জন্য। ইতোমধ্যে কিছু অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে।
শুরু হয়েছে আগামী হজের প্রাথমিক নিবন্ধন। চলতি মাসেই হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে, ইতোমধ্যে তিন ধাপে ২০২৫ সালের হজের প্রাথমিকভাবে যোগ্য ৮৯১টি হজ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। যাচাই-বাছাই শেষ আরও হজ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হবে।
অভিযোগের ধরণ হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের নানা ধরণ রয়েছে। যেমন তদন্তের জন্য শুনানিতে ডাকা হয়েছে রোজিনা এয়ার ট্রাভেলসকে (হজ লাইসেন্স নং ১১২৭)। এই এজেন্সির বিরুদ্ধে চারজন হাজি অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগ, ‘এ’ প্যাকেজে রাখার চুক্তি করা হলেও অত্যন্ত নিম্নমানের হোটেলে রাখা, হারাম শরিফ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে রাখা, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, মক্কা-মদিনায় কয়েক বেলা খাবার সরবরাহ না করা, হোটেল থেকে হারামে ও জিয়ারায় নিজস্ব খরচে যাতায়াত, মিনায় অসুস্থ হাজিদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা না করা এবং জেদ্দা-ঢাকা বিমান টিকিট চড়ামূল্যে হাজিগণের নিজেদের ক্রয় করা ইত্যাদি।
রোজিনা এয়ার ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ২০২৪ সালের হজপালনের জন্য মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে কোরবানিসহ এজেন্সিকে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ফ্লাইটের আগে আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করলে তাও পরিশোধ করেন। কথা ছিল হাজিরা নিজেরা কোরবানির পশু জবাই করবেন। মিনা-আরাফা-মুজদালিফা থেকে জামারায় পাথর নিক্ষেপের পর এজেন্সির লোক মক্কায় হোটেলে নিয়ে যেতে চায় এবং কোরবানি হয়ে গেছে বলে জানায়। এতে হাজিরা প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন এবং কোরবানির টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে মনে করেন।
অন্যদিকে আমদা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ৫৯৮)-এর গ্রুপলিডার এবং মোজাহিদ হজ কাফেলার পরিচালক মোজাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে উমরাযাত্রীদের প্রতিশ্রুত সেবা না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
স্কাই ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (হজ লাইসেন্স নং ১২১১)-এর বিরুদ্ধে ৮ জন হাজি অভিযোগ দিয়েছেন, তিন তারকা হোটেলে ও ক্লক টাওয়ার থেকে ৩৫০ মিটার দূরে রাখার কথা থাকলেও এজেন্সি তা করেনি। মক্কায় ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে নিম্নমানের হোটেলে রাখে, যা সৌদি সরকারের কালো তালিকাভুক্ত।
এছাড়া মক্কা থেকে মিনার তাঁবুতে নারী হাজিরা সিট পাননি। তারা অন্যের পাশে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। আরাফাতের তাঁবুতেও অনেক হয়রানি পোহাতে হয়েছে, আরাফাত থেকে মুজদালিফা যাওয়ার পর এজেন্সির লোক যোগাযোগ করেনি। মুজদালিফা থেকে জামারায় পাথর মেরে অত্যন্ত কষ্ট করে মক্কার হোটেলে পৌঁছান। হোটেলে পৌঁছানোর পর এজেন্সির লোকজন কোনো খবর রাখেনি এবং ঠিকমত খাবার দেয়নি।
রহমানিয়া হজ গ্রুপ (উমরা লাইসেন্স নং ৪৩০)-এর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সেবা না দেওয়ার অভিযোগ, দি পদ্মা এয়ার ইন্টারন্যাশনাল (হজ লাইসেন্স নং ১২৬৬) উমরাপালনে গিয়ে হাজি হারিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত অভিযোগ, আবাবিল ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (উমরা লাইসেন্স নং ৪৬৩)-এর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সেবা না দেওয়া এবং ১ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি সংক্রান্ত অভিযোগ, স্টার হলিডেইজ (উমরা লাইসেন্স নং ৩৬১ ও হজ লাইসেন্স নং ৩৬২)-এর বিরুদ্ধে উমরাযাত্রীদের দেশে ফেরার সময় জাল টিকিট দেওয়া, ৪০ জনের টিকিটি না দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে পাঠাবে বলে মদিনা এয়ারপোর্টে নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে।
আবহা এয়ার ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ১২৯৭)-এর বিরুদ্ধে প্রতারণা, সাদ ওসওয়াহ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (হজ লাইসেন্স নং ১১৩৮)-এর বিরুদ্ধে অন্য এজেন্সির (মেসার্স এন.এম.এস.এস ইন্টারন্যাশনাল, হজ লাইসেন্স নং ১৩১৯) মালিক লাইসেন্সের সুনাম ক্ষুন্ন করার অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। ভার্সেটাইল এয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড (হজ লাইসেন্স নং ১৩৯৭)-এর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুত সেবা না দেওয়ার অভিযোগ করেন এক হাজি।
স্বদেশ ওভারসিস (হজ লাইসেন্স নং ১৫৩১)-এর বিরুদ্ধে হজ গাইডের অসহযোগিতা, নিজ ব্যবস্থাপনায় মদিনায় যাওয়া ও মদিনায় পরিত্যক্ত হোটেলে রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগ এসেছে। লিড এজেন্সি হিসেবে ফিফাস ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালকেও (হজ লাইসেন্স নং ১৪৯৬) এসব অভিযোগের জবাব দিতে হবে।
লাইম স্টোন রিসোর্ট এন্ড ট্যুরিজম লিমিটেড (হজ লাইসেন্স নং ০৯০৭)-এর বিরুদ্ধে এক নারী হাজি অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের হজে যাওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকা প্রদান করেন। হজে না নিয়ে এজেন্সির মালিক সৌদি চলে যান। পরে হজযাত্রী ট্রান্সফার হয়ে অন্য এজেন্সির মাধ্যমে হজে গমন করেন। কিন্তু লাইম স্টোন রিসোর্ট এন্ড ট্যুরিজম হজযাত্রীর টাকা ফেরত দিচ্ছে না।
মুনিরা ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (হজ লাইসেন্স নং ১০৫৮)-এর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার পরেও হজে না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আবাবিল ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস লিমিটেড (হজ লাইসেন্স নং ১২৯৫)-এর বিরুদ্ধে হজে না নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
এমদাদ এয়ার ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (হজ লাইসেন্স নং ১৪৭৭)-এর বিরুদ্ধে ৪২ জন হাজি প্রতিশ্রুত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
প্যান ব্রাইট ট্রাভেলস (প্রা.) লিমিটেডের (হজ লাইসেন্স নং ১১১)-এর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হোটেল না দেওয়া, ৩/৪ দিন পানি সরবরাহ না করা, কোনো বেডশিট না থাকা, এসি নষ্ট, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার না করা, ফ্যান ও ফ্রিজ নষ্ট ইত্যাদির অভিযোগ এসেছে হজযাত্রীর পক্ষ থেকে।
২০২৪ সালের হজে হাজিদের হেনস্থা এবং খাওয়া নিয়ে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এসেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে হাজি শরীয়তুল্লাহ ওভারসিজ লিমিটেড (হজ লাইসেন্স নং-০৩১৭) এবং মদিনা স্টার ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ০৯৮২)-এর বিরুদ্ধে।
অনুমোদিত ইমেইল আইডি ব্যবহার না করে অন্য আইডির মাধ্যমে ২৬ জন যাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম চালানোর দায়ে রাইসা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসকে (হজ লাইসেন্স নং ১৪৭৮) কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
হারিয়ে যাওয়া ৭৮ বছর বয়স্ক উমরাযাত্রীকে পালিয়ে গেছেন মর্মে প্রচারের মতো গুরুতর অভিযোগ এসেছে সাফা মারওয়া ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ৩৬০)-এর বিরুদ্ধে। যদিও পরে হারানো ব্যক্তিকে বাংলাদেশ হজ মিশনের সহযোগিতায় দীর্ঘ এক মাস পর মক্কার আল-নূর স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাওয়া গেছে। এছাড়া এই এজেন্সির উমরায় যাত্রী পাঠানোর বৈধ অনুমোদন নেই।
ট্রাভেল নূরানী (হজ লাইসেন্স নং ১২৭৬)-এর বিরুদ্ধে এম আলী ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ১৪০৬)-এর দেনা-পাওনা বিষয়ক পারস্পরিক বিরোধ এবং কিবলা ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং-১১০৮)-এর বিরুদ্ধে মক্কার বাড়ি ভাড়া বাবদ টাকা পাওনার অভিযোগ করেছেন মেসার্স সায়েম ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস ইন্টারন্যাশনাল (হজ লাইসেন্স নং ৫০৫)-এর স্বত্বাধিকারী। অন্যদিকে সিনেটর এয়ার ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ১১৭৩০-এর বিরুদ্ধে উমরাযাত্রীর টিকিটের টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ এসেছে।
অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি পাবেন। সেক্ষেত্র তাদের আর হজ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে না।
জানা যায়, ২০২৪ সালের হজ কার্যক্রমে মোট ২৫৯টি হজ এজেন্সি অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ২৩৪টি ছিলো লিড হজ এজেন্সি। যদিও ১৫৩৩টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজে হাজি পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু পর্যাপ্ত হাজি না পাওয়া ছোট ছোট এজেন্সিগুলো ২৩৪টি বড় এজেন্সির সঙ্গে একত্রিত করা হয়েছে। অর্থাৎ যেসব হজ এজেন্সি সর্বনিম্ন ২৫০ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করতে পারেনি এমন এজেন্সি কয়েকটি এজেন্সির সমন্বয়ে একটি লিড এজেন্সি নির্ধারণ করা হয়। সৌদি আরব যোগাযোগসহ নানা সুবিধার জন্য কমসংখ্যক এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী গ্রহণে বেশি আগ্রহী।
এর আগে, নানা অভিযোগে ২০১৯ সালে ৪৭, ২০২২ সালে ৫৪ এবং ২০২৩ সালে ৬১টি হজ এজেন্সিকে শাস্তি দেওয়া হয়।
সাধারণ জনগণের সহযোগিতার মাধ্যমেই মাদরাসাগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে বলে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সামান্য বেতন-ভাতা দিয়েই মাদরাসার শিক্ষকেরা জীবিকা নির্বাহ করেন। মসজিদের ইমামরাও ঠিক একইভাবে সামান্য সম্মানীতে দিনাতিপাত করেন। উলামায়ে কেরাম আল্লাহতায়ালাকে রাজি-খুশি করার জন্যই তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলীতে জামিয়াতুল ইসলামিয়া ফয়জুল উলুম মাদরাসার হলরুমে আলেম-উলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
আলেমরা আলোর মিনার। তারা সমাজকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তারা মানুষের মাঝে মানবিক গুণাবলী জাগ্রত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃনা, শ্রমের মর্যাদা প্রভৃতি বিষয়ে ইমামরা কথা বলেন। আমাদের সমাজে ইসলামি কালচার যতটুকু টিকে আছে তা এই ইমামদের মেহনতের কারণেই টিকে আছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, জনসম্পৃক্ততা আলেমদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। আলেমসমাজ সবসময় আল্লাহ ও রাসুলের কথা বলেন। তারা সাহাবায়ে কেরামদের কথা বলেন। একইসঙ্গে তারা দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদসহ নানাবিধ সামাজিক ইস্যুতে কথা বলেন।
তিনি বলেন, কওমি মাদরাসাগুলোতে সরকারের কোনো অনুদান নেই। সম্পূর্ণভাবে সাধারণ জনগণের সহযোগিতার মাধ্যমেই এই মাদরাসাগুলো পরিচালিত হয়ে থাকে। সামান্য বেতন-ভাতা দিয়েই মাদরাসার শিক্ষকেরা জীবিকা নির্বাহ করেন। মসজিদের ইমামরাও ঠিক একইভাবে সামান্য সম্মানীতে দিনতিপাত করেন। উলামায়ে কেরাম আল্লাহতায়ালাকে রাজি-খুশি করার জন্যই তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
উপদেষ্টা বলেন, এই সরকারের মেয়াদ খুব কম। এই সময়ের মধ্যেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট হতে একটি মিনারেল ওয়াটার প্লান্ট করে যেতে চাই। এই ট্রাস্ট হতে ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরকে কর্জে হাসানা বা সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণের পরিমাণ আমরা বাড়াতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত ঋণের টাকা মানুষ পরিশোধ করতে চায় না। কিন্তু ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের কোনো ঋণখেলাপি নেই। কারণ ইমামসমাজ এটাকে আমানত মনে করে থাকে, তারা আমানতের খেয়ানত করে না। উপদেষ্টা এ মাদরাসার উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ রেজাউল করিম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এ সভায় ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বক্তৃতা করেন। এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, চকরিয়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার এম এম রকীব উর রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপদেষ্টা উপজেলার হারবাং গ্রামে সুধী সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
মানুষের প্রতি অযথা কোনো ধরনের খারাপ ধারণা করার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। এটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যের প্রতি খারাপ ধারণা থেকে বেঁচে থাকা মুমিনের কর্তব্য। এমনকি সমাজে কারো ব্যাপারে খারাপ ধারণা ছড়িয়ে পড়লেও তার প্রতি যথাসম্ভব ভালো ধারণা পোষণ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয়ই কোনো কোনো অনুমান পাপ।’ -সুরা হুজুরাত : ১২
হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সাবধান! খারাপ ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাকো। কেননা খারাপ ধারণা হচ্ছে বড় মিথ্যা। আর কারো বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি করো না। একে অপরের পতন বা ধ্বংস সাধন করে নিজের কল্যাণ কামনা করো না। একে অপরের পশ্চাৎ অবলম্বন করো না। একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করো না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই-ভাই হয়ে যাও।’ -সহিহ বোখারি : ৬০৬৬
মুমিনদের বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা রাখা কর্তব্য। হজরত আয়েশা (রা.)-এর ওপর একবার অপবাদ আরোপ করা হয়, তখন এ বিষয়ে সতর্ক করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তোমরা এ কথা শুনলে তখন মুমিন পুরুষ ও মুমিনা নারীরা নিজেদের বিষয়ে কেন ভালো ধারণা করলে না এবং বললে না- এটা সুস্পষ্ট অপবাদ।’ -সুরা নুর : ১২
এই আয়াতে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, দ্বিন ও ঈমানের ভিত্তিতে সব মুমিন নর-নারী একান্তই আপনজন। কাজেই কোনো মুমিন নারী সম্পর্কে কোনো মন্দ প্রচারণা শুনলে আপনজন হিসেবে তাতে কর্ণপাত না করে তার প্রতি সুধারণা রাখতে হবে। -তাফসিরে তাওজিহুল কুরআন
প্রকৃত মুমিন কখনো অন্যের প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করে না, বরং অন্যের মন্দ ধারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করে। কখনো কেউ মন্দ ধারণা করতে পারে, এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে ব্যাখ্যা করে স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত। উম্মুল মুমিনিন হজরত সাফিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) ইতিকাফে ছিলেন। রাতে আমি তাকে দেখতে এসেছিলাম। এরপর তার সঙ্গে কথা বলে আমি ফিরে আসার জন্য দাঁড়ালাম। তিনিও আমাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য দাঁড়ালেন।
ওই সময় আনসারদের দুই ব্যক্তি আমাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করল। যখন তারা নবী কারিম (সা.)-কে দেখল, দ্রুত চলে গেল। নবী কারিম (সা.) তখন তাদের ডাক দিয়ে বললেন, দাঁড়াও, অসুবিধা নেই। সে আমার স্ত্রী সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই। তারা উভয়ে তখন বলল, সুবহানাল্লাহ হে আল্লাহর রাসুল! (আপনার সম্পর্কে আমরা কখনো ধারণা-অনুমান করতে পারি না।) তখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, শয়তান রক্তপ্রবাহের মতো মানুষের তরে বিচরণ করে। -সহিহ বোখারি : ২০২৫
প্রত্যেক বিবেকবান মানুষের সুধারণামূলক মনোভাব থাকা আবশ্যক। কেননা অপরের ওপর ভালো ধারণা পোষণ করা পুণ্যে পরিণত হয়। নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘সুন্দর ধারণা সুন্দর ইবাদতের অংশ।’ -মুসনাদে আহমাদ : ৮০৩৬
পরিশেষে বলা যায়, সুধারণা পোষণ উন্নত চরিত্রের ভূষণ। অন্যের সম্পর্কে সুধারণার ফলে পারস্পরিক ভুল-বোঝাবুঝির অবসান সম্ভব। ফলে সমাজের দ্বন্দ্ব-কলহ নিঃশেষ হয়ে ভ্রাতৃত্ববোধ অটুট হয়। দৃঢ় হয় সামাজিক বন্ধন।
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই যে কয়জন ইসলামি রাজনীতিকের হাত ধরে দেশে ইসলামি রাজনীতির বিকাশ ঘটে- মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (রহ.) ছিলেন তাদের অন্যতম। দূরদর্শী আলেম ও নির্লোভ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। নানামাত্রিক কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার তাকওয়া, খোদাভীরুতা ও ইখলাস ছিল পরিপূর্ণ। এ যুগে এমন মানুষের দৃষ্টান্ত বিরল। রাজনীতিতে দিন দিন এমন মানুষের সংখ্যা কমছে বলেই অপরাজনীতি সমাজে জায়গা করে নিচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মকে তার আদর্শ ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (রহ.)-এর ‘জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব ও মানসিক দৃঢ়তার কারণে তিনি আলেমসমাজে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার চরিত্রের দৃঢ়তা ও ইস্পাতকঠিন মনোবল দেখা গেছে, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে।
তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলামের জন্য, মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটাই আমার পরম প্রাপ্তি, অন্য কিছু নয়।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান ও মুফতি জাকির হোসাইন খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় দেশ-বিদেশের রাজনীতিবিদ, ইসলামি স্কলার ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আলেম-উলামাদের মতো অসাধারণ উত্তরাধিকার তিনি রেখে গেছেন। তার দেখানো পথে, তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজগুলো প্রতিপালনের মাধ্যমেই তার প্রতি প্রকৃত সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নাজেম মাওলানা সাইয়্যেদ আজহার মাদানি, ইউরোপ জমিয়তের সভাপতি মুফতি আব্দুল হান্নান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি কারী আব্দুল খালিক আসআদি ও যুক্তরাষ্ট্র জমিয়ত নেতা মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জালালাবাদী।
আরও বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী, বিএনপির যুগ্ন-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাবেক মন্ত্রী ও ১২ দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জমিয়তের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা রশিদ বিন ওয়াক্কাস, ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম, সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়ত নেতা সৈয়দ তালহা আলম, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি হোসাইন আহমদ বিন ওয়াক্কাস, সাধারণ সম্পাদক সুহাইল আহমদ, সিনিয়র যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আল আদনান, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সহ-সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ ইসলামাবাদী, এম আবদুল হাফিজ, শাব্বির আহমদ রাজী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি হাফেজ খালেদ মাহমুদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমদ ইসলামাবাদী, সাধারণ সম্পাদক ফেরদাউস রুম্মান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরাফাত আল মিসবাহ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদ আমির প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ২০২১ সালের ৩১ মার্চ রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি এরশাদ সরকারের ধর্ম ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। যশোর-৫ আসন থেকে তিনি কয়েক বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দেশের শীর্ষ আলেম হিসেবে তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
স্মরণসভা শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীকে সভাপতি, মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদীকে নির্বাহী সভাপতি, মাওলানা ডঃ গোলাম মহিউদ্দিন ইকরামকে মহাসচিব এবং মুফতি জাকির হোসাইন খানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ২০২৪-২০২৭ তিন বছর মেয়াদি ১২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।