সত্তোরোর্ধ্ব ইমামকে রাজসিক বিদায় এলাকাবাসীর

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফুলে ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় ইমামকে, ছবি: সংগৃহীত

ফুলে ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় ইমামকে, ছবি: সংগৃহীত

কর্মক্ষেত্র থেকে বিদায়ের সময় নানা আনুষ্ঠানিকতার রীতি থাকলেও মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের সেভাবে বিদায় নিতে কিংবা দিতে দেখা যায় না। তবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় কাঁচারিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. মোতালেব হোসেনকে (৭২) নানা আয়োজন ও সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে রাজকীয় বিদায় দিয়েছে এলাকাবাসী।

৩৫ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে অশ্রুশিক্ত হন ইমাম মোতালেব হোসেন। একজন ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলেও জানান স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১২ জুলাই) পৌরসভার কাঁচারিপাড়া মহল্লায় সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকে এলাকাবাসী। সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। আয়োজন করা হয় প্রায় এক হাজার মুসল্লির খাবারের। দুপুরে জুমার নামাজের পর মসজিদের ইমামকে হাত ধরে তোলা হয় ঘোড়ার গাড়িতে।

ঘোড়ার গাড়ির সামনে-পেছনে প্রায় দুই শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে ১০ কিলোমিটার অদূরে চলনালি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় ইমামকে।

এর আগে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেন গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. শামসুল হক শেখ।

বিদায়ী ইমাম মাওলানা মোতালেব হোসেন বলেন, ১৯৮৯ সালে এ মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করেছি। ৩৫ বছর ধরে ইমামতি করার সময় এই মহল্লার সব পরিবারের ভালোবাসা পেয়েছি। বিদায় বেলায় আমাকে এত ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ। এমন আয়োজন প্রতিটি মসজিদে, প্রতিটি ইমামের জন্য করা হোক।

মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. আলমগীর শেখ বলেন, গুরুদাসপুরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। এর আগে কখনও গুরুদাসপুর উপজেলায় এমনভাবে কোনো ইমামকে বিদায় দেওয়া হয়নি। আমরা চেষ্টা করেছি, যে মানুষটা আমাদের বিগত ৩৫ বছর নামাজ-কালাম এবং দীনের আলোচনার মাধ্যমে জ্ঞান দিয়ে এসেছেন, তার বিদায়বেলা স্মরণীয় করে রাখতে। প্রতিটি মসজিদে এমন আয়োজন করে ইমামদের বিদায় দেওয়ার আহ্বান জানাই।

মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ইমাম সমাজের নেতা। সেই ইমামদের প্রাপ্য সম্মান কোথাও তেমনভাবে দেওয়া হয় না। এলাকাবাসীর উদ্যোগে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ইমামকে যে আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদায় দিয়েছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন উদ্যোগ প্রতিটি এলাকার মুসল্লিরা গ্রহণ করুক।