মতভিন্নতা প্রসঙ্গে মক্কায় বিশ্বের শীর্ষ আলেমদের সম্মেলন
সৌদি আরবের মক্কায় মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ (রাবেতা আল আলম আল ইসলামী) আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৭ মার্চ শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শতাধিক নেতৃস্থানীয় মুসলিম প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
মসজিদে হারামের কাছে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিভিন্ন মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও মতভিন্নতার শিষ্টাচার একীভূত করা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে মুসলিমদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির একটি ডকুমেন্ট প্রকাশ করেন মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের মহাসচিব ড. মুহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ঈসা।
বিষয়টি নিয়ে ইরান, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ইরাক, তুর্কিয়ে, মালয়েশিয়া, আফ্রিকার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিম স্কলাররা বক্তব্য দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) মহাসচিব শেখ হুসাইন ইবরাহিম তোহা ও আমিরাতের ফতোয়া কাউন্সিলের প্রধান এবং ইসলামিক ফিকাহ একাডেমির সদস্য শায়খ আবদুল্লাহ বিন বাইয়াহসহ আরও অনেকে।
‘বিল্ডিং ব্রিজেস বিটউইন ইসলামিক স্কুলস অব থটস’ বা ‘মুসলিম দলগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি ও সিনিয়র স্কলার্সের সভাপতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ।
তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম একটি সামাজিক ধর্ম। তা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেয়। ইসলাম বিচ্ছিন্নতা ও মতবিরোধ সতর্ক করেছে। মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহর বর্ণনামতে, মুসলিমদের সব সময় একতাবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব ধরনের ঘৃণা-বিদ্বেষ ও বক্রতা পরিহার করে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের মহাসচিব ড. মুহাম্মদ আল-ঈসা বলেন, ‘মক্কা ডকুমেন্টের বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতায় মুসলিমদের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরির এ ডকুমেন্ট ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা ও আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মুসলিম স্কলারদের এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ এ নির্দেশনা দিচ্ছে, মুসলিম জাতির কাছে আলেমদের অবস্থান এখনো অনেক সুদৃঢ় রয়েছে এবং আলেমরা তাদের জন্য আদর্শ হিসেবে কাজ করছেন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে সুসম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে।’
এর আগে ২০১৯ সালের মে মাসে মক্কায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ‘দ্য চার্টার অব মক্কা’ বা মক্কা সনদ ঘোষণা করা হয়। ওই সময় সেখানে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্বের ১৩৯টি দেশের ১২০০ ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষক।