যে বান্দার ডাকে আল্লাহ সাড়া দেন
পরম দয়াময় আল্লাহতায়ালা অপেক্ষা করতে থাকেন তার কোন বান্দা তাকে স্মরণ করছেন। আমরা যদি আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে সঠিকভাবে এবং উদ্বিগ্নচিত্তে স্মরণ করি তাহলে তিনি আমাদের ডাক শুনবেন আর আমাদের সব ধরণের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন।
আসলে যে ব্যক্তি প্রকৃত প্রেরণা নিয়ে আল্লাহতয়ালার কাছে প্রার্থনা করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে কখনও ব্যর্থ হতে দেন না। যেভাবে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতয়ালা বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। কিন্তু যারা আমার ইবাদত সম্বন্ধে অহংকার করে, তারা নিশ্চয় লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ -সুরা আল মুমিন : ৬০
আল্লাহতায়ালার কাছে চাইলে তিনি যে তা দান করেন এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যা কিছু তোমরা তার কাছে চেয়েছো তিনি তোমাদের সব দিয়েছেন এবং যদি তোমরা আল্লাহর নেয়ামতসমূহ গণনা করতে চাও তাহলে তোমরা সেগুলোর সংখ্যা নিরূপণ করতে পারবে না।’ -সুরা ইকরাহিম : ৩৪
আবার বলা হয়েছে, ‘অথবা কে উদ্বিগ্নচিত্ত ব্যক্তির দোয়া শুনেন যখন সে তার নিকট দোয়া করে এবং তার কষ্ট দূর করে দেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীর উত্তরাধিকারী করে দেন? আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো উপাস্য আছে? তোমরা খুব কমই উপদেশ গ্রহণ করো।’ -সুরা নামল : ৬২
মহান আল্লাহ তার বান্দার দোয়া গ্রহণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন, কখন তার বান্দা তাকে ডাকবে আর তিনি তা গ্রহণ করবেন এবং তার দু:খ-কষ্ট দূর করবেন। তিনি সবার খুবই নিকটে রয়েছেন। যেভাবে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞেস করে, তখন বল, আমি নিকটে আছি। আমি প্রার্থনাকারীর প্রার্থনার উত্তর দেই যখন সে আমার নিকট প্রর্থনা করে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার ওপর ঈমান আনে যাতে তারা সঠিক পথ প্রাপ্ত হয়।’ -সুরা বাকারা : ১৮৬
এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, তিনি প্রার্থনাকারীর প্রার্থনার উত্তর দিয়ে থাকেন। আমরা যদি প্রকৃতভাবে তাকে ডাকি তাহলে অবশ্যই তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেবেন।
দোয়ার মধ্যে অনেক শক্তি নিহিত। দোয়া এমন একটি জিনিষ যা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলে। দোয়ার মাধ্যমে ও এর কবুলিয়তের মাধ্যমে বান্দার সাথে আল্লাহর সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আমরা জানি, নবী করীম (সা.)-এর দিনের আরম্ভ থেকে রাত ঘুমুতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্র ছিল দোয়ায় পরিপূর্ণ। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে আমাদের প্রতি মহানবী (সা.)-এর অনুগ্রহ ও রহমতের একটি উজ্জ্বল দিক হলো- তার দোয়া।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া গৃহীত হওয়ার জন্য প্রথমে নিজেকে পবিত্র করতে হবে। আর দোয়া কেবল নিজের জন্য নয় বরং সবার জন্য করতে হবে। সবসময় সবার মঙ্গল কামনা করতে হবে। নিজের দ্বারা যেন কারও সামান্যতম ক্ষতি না হয়, সে চিন্তা সবসময় মাথায় রাখতে হবে। আর সুখে-দুঃখে সর্বদা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শোকরিয়া জ্ঞাপন করতে হবে এবং তার স্মরণে নিয়োজিত রাখতে হবে।
আল্লাহতায়ালা আমাদের দোয়া গ্রহণ করে তার সন্তুষ্টির চাদরে আবৃত করে রাখুন, আমিন।