ইসলামে কোরবানির গুরুত্ব অতি ব্যাপক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘হে লোক সকল! জেনে রাখ, প্রত্যেক পরিবারের পক্ষে প্রত্যেক বছরই কোরবানি করা আবশ্যক’ (আবু দাউদ ও নাসাঈ)। তাই যাদের সামর্থ্য রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই কোরবানিতে অংশ নিতে হবে।
সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি দিতে হয়। কেউ চাইলে একাও কোরবানি দিতে পারেন আবার কয়েকজন মিলেও কোরবানি দেয়া যায়। কোরবানির মূল বিষয় হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি।
বিজ্ঞাপন
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, গরু সাতজনের পক্ষ থেকে এবং উট ৭ জনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যেতে পারে (মুসলিম, আবু দাউদ)।
কোরবানির জন্য উট, গরু, ভেড়া, ছাগল, দুম্বা থেকে যে কোন পশু জবাই করা যেতে পারে। উট ও গরু সাত ব্যক্তির পক্ষ থেকে এবং ভেড়া ছাগল প্রভৃতি এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে দিতে হয়।
বিজ্ঞাপন
কোরবানির পশু কেনার আগে আমাদেরকে অবশ্যই পশুর বয়স জানতে হবে। কেননা কম বয়সের পশু কোরবানি করা যায় না। এজন্য উট ৩ বছরের, গরু ও মহিষ ২ বছরের, ভেড়া ছাগল প্রভৃতি এক বছর বয়সের হতে হবে।
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা কোরবানির ছাগলের ক্ষেত্রে এক বছর বয়স হওয়া ছাড়া জবাই করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছয় মাস বয়সী ভেড়া-ছাগল জবাই করতে পারবে।’ (সহিহ মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই ছয় মাস বয়সের দুম্বা এক বছর বয়সের দুম্বার স্থলাভিষিক্ত হতে পারে। (আবু দাউদ) তাই দুম্বা যদি মোটা তাজা হয় তাহলে ৬ মাসের বয়সের টিতেও কোরবানি বৈধ হবে।
আগেও উল্লেখ করেছি যাদের সামর্থ্য আছে তারা একাই কোরবানি দিতে পারেন। যদি এমনও হয় যে, ভাগে কোরবানি দেয়ার নিয়ত ঠিকই রয়েছে কিন্তু তিনি কারো সাথে অংশ নেয়ার সুযোগ পেলেন না আর একা একটি গরু কেনারও তার সামর্থ্য নেই সেক্ষেত্রে তিনি একটি ছাগল কিনে হলেও কোরবানি দিবেন। কারণ আল্লাহ বান্দার হৃদয় দেখে থাকেন। কোরবানির আমল থেকে যেন কেউ বাদ না পরেন এর দিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।
আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে কেবলমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই কোরবানি করার তৌফিক দান করুন, আমিন।
‘যখন নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজায় আমার হাতেলেখা ফলকগুলো স্থাপন করা হয়, তখন আমার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। আমি একনজরে সেদিকে তাকিয়ে ছিলাম, আমার গলার স্বর শুকিয়ে যায়, আমার ভেতরে একটি ঝড় বইতে থাকে।’
এভাবেই পাকিস্তানি ক্যালিগ্রাফার শফিক-উজ-জামান বলছিলেন তার অনুভূতির কথা। রওজা শরিফে স্থাপিত কোরআনের আয়াতের ক্যালিগ্রাফিসমৃদ্ধ তিনটি ফলকই তার হাতে লেখা।
পবিত্র রওজায় স্থাপিত কোরআনে কারিমের আয়াতের ক্যালিগ্রাফিসমৃদ্ধ ফলকগুলো যেকোনো জিয়ারতকারীকেই মোহিত করে। এই কাজে লেগেছে দেড় বছর। প্রতিটি ফলক তৈরিতে ছয় মাস সময় লেগেছে। এগুলো ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া। মসজিদে নববির দরজা ও সেখানে স্থাপিত অফিসগুলোর বোর্ডের নামফলকগুলোও তার লেখা।
মসজিদে নববি মানে সবুজ গম্বুজের ছায়া। স্বর্গীয় সৌরভে মৌতাত আঙিনা। নবী কারিম (সা.)-এর রওজা মোবারক। অনিন্দ্য সুন্দরের মায়ামাখা প্রাঙ্গণ। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ নিরন্তর স্বপ্ন দেখেন মসজিদে নববির সান্নিধ্য-পরশে জীবন কাটানোর। কিন্তু এমন সৌভাগ্য কয়জনের জীবনে জুটে?
তবে কেউ যদি মসজিদে নববির গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজেই ৩৬ বছর কাটান স্বর্গীয় এ পরিবেশে! তাহলে নিশ্চয় ভাবতেই অবাক লাগে।
কিন্তু ঠিক এমন কাজটি করার দুর্লভ সৌভাগ্য লাভ হয়েছে উস্তাদ শফিক-উজ-জামানের। বিগত তিন যুগ অর্থাৎ ৩৬ বছর ধরে তিনি মসজিদে নববির একজন একনিষ্ঠ আরবি ক্যালিগ্রাফার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।
শফিক-উজ-জামানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পাকিস্তানে। বর্তমানে জিয়ারতে গেলে মসজিদে নববির ভেতরের পিলারগুলোতে বিভিন্ন রকমের শিল্পলিপি দেখা যায়। যার বেশিরভাগই করেছেন শফিক উজ জামান।
শফিক-উজ-জামান সৌদিতে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম রিয়াদের একটি দোকানে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তার সামনে আসে জীবন পরিবর্তনের সুবর্ণ সুযোগ। আর সুযোগটি লুফে নিতে তিনি ন্যূনতম দেরি করেননি। সৌদি আরবভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘বেস্ট ক্যালিগ্রাফার ফর হারাম’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পর তার জীবন সম্পূর্ণরূপে বদলে যায়। নেমে আসে অনাবিল সুখ-শান্তির বারিধারা।
১৯৯০ সালে মসজিদে নববি নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা একটি ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেয়। প্রতিযোগিতার লক্ষ্য ছিল এমন একজন ক্যালিগ্রাফার খুঁজে বের করা, যে তুর্কি যুগের ক্যালিগ্রাফি কাজ সংশোধন করতে পারেন।
বিশ্বের চার শ জন বিখ্যাত বিখ্যাত ক্যালিগ্রাফার অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার বিচারকরা যখন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন, তখন লোকেরা ভেবেছিল নির্বাচিত ক্যালিগ্রাফার হবেন একজন আরবি। কিন্তু দেখা গেলো, তিনি আরবি নন- পাকিস্তানি।
শফিক-উজ-জামান মসজিদে নববিতে ক্যালিগ্রাফির জন্য নির্বাচনকে আল্লাহতায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ বলে অভিহিত করেছেন।
আরব নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ক্যালিগ্রাফি শিল্প আল্লাহর দান। এটা আমি কারও কাছ থেকে শিখিনি।
তিনি বলেন, মদিনায় ক্যালিগ্রাফি করে আমি যে শান্তি পাই, তা আর কোথাও পাই না। আল্লাহর কাছে শোকরিয়া জানাই যে, এখানে ক্যালিগ্রাফি করার সুযোগ পেয়েছি- আমার আর কি দরকার?
শৈশব থেকে স্বচ্ছন্দ্যে ক্যালিগ্রাফি করলেও তিনি বিশ্বাস করেন, গত ৩৬ বছর তার জীবনের বর্ণোজ্জ্বল সময়। এর মাধ্যমে তিনি নিজের জীবনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছেন। এ দীর্ঘ সময় ধরে তিনি মসজিদে নববির একজন নিষ্ঠাবান ও চৌকস ক্যালিগ্রাফর হিসেবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
শফিক-উজ-জামান ১৭৭টি গম্বুজেও কাজ করেছেন। তিনি বলেন, আমি তুর্কি ক্যালিগ্রাফার উস্তাদ হামিদ আল-আমাদির শিল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত। আপনি আমাকে তার আধ্যাত্মিক শিষ্য বলতে পারেন।
তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র মসজিদে কাজ করতে পারাটা তাকে শান্তি-সমৃদ্ধি ও অপার সুখ এনে দিয়েছে। আঁকাআঁকির কাজগুলো করতে বেশ সময় লাগলেও তিনি কাজটি বেশ উপভোগ করেন। নিপুণতার স্বাক্ষর রেখে এতে সৌন্দর্যের পালক লাগিয়ে দেন।
বস্তুত এটি গৌরবোজ্জ্বল মর্যাদাপূর্ণ ও অপূর্ব সম্মানের। এখন মসজিদে নববির দেয়ালে দেয়ালে তার শিল্প ও কর্ম-কুশলতা দেখা যায়। এভাবে কাজ করে শাফিক-উজ-জামান মহান আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চান বলে জানান।
আল্লাহর ঘরের মেহমান হাজিদের সেবা করতে পেরে আমরা গর্বিত। আর বাংলাদেশি হাজিদের আমি আমার পরিবারের সদস্য মনে করি। তারা যেমন সেবা পেলে খুশি হবেন, যে খাবারে তারা অভ্যস্ত; সেভাবেই ব্যবস্থা করা হবে। বিশেষ করে মিনার তাঁবু ও আরাফাতের ময়দানে তাদের খাবার ও যাতায়াতের বাস পেতে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয়- সেদিকে বিশেষ নজর থাকবে। এ জন্য অতিরিক্ত লোকবলও নিয়োগ করা হবে। এক কথায়, হাজিদের স্বাচ্ছন্দ্য ও আরামের প্রতি খেয়াল রেখে যাবতীয় সেবা দেওয়া হবে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে পল্টনস্থ ফারস হোটেলে সৌদি আরবের এম মিলেনিয়াম হজ সার্ভিসেস কোম্পানির পরিচাল আদনান মোহাম্মদ তাহের সাফিরুদ্দিন হজ এজেন্সির মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত হজ এজেন্সির মালিকরা হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনের পাঁচ দিন মক্কা থেকে মিনা, আরাফাত ও মুজাদলিফায় গমন, চলাচলের সময় বাস সার্ভিস এবং খাবার নিয়ে নানা দাবি জানালে তিনি বলেন, কিছু বিষয়ে তার করণীয় আছে, সেগুলো তিনি পূরণ করবেন। আর কিছু বিষয় নিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন।
হাজি মোহাম্মদ ফুরকানের সভাপতিত্বে ও মাওলানা তাজুল ইসলাম আশরাফী এবং মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ হাদীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রায় শতাধিক হজ এজেন্সির মালিক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সৌদি আইকন কোম্পানির সামি জামিল আবদুস সালাম আবদুল্লাহ ও ফয়সাল আহমেদ আল মায়মুনি।
বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশি হাজিদের বয়সের প্রতি লক্ষ্য রেখে সেবা দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, পবিত্র ভূমিতে হাজিদের সর্বোচ্চ মেহমানদারি নিশ্চিত করতে কাজ করি আমরা। যথাসময়ে যথাযথ বাসস্থান, নিরাপদ যাতায়াত, খাবার সংগ্রহ ও বিতরণ, হজের সার্বিক আমলগুলো সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে হচ্ছে কি না তা তদারকি করাসহ জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও মিনার তাঁবুগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করে থাকি। বিশেষ করে আরাফার দিন আরাফাতের ময়দানে আমাদের সর্বোচ্চ মেধা ও শ্রম দিয়ে হাজিদের সেবা করতে হয়। এমতাবস্থায় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে, তা অনেক কষ্টের কারণ হয়ে যায়। এদিকে সৌদি কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি।
উন্নত হজ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন- সেন্ট্রাল ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, রাজশাহী ট্রাভেলসের মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, গালফ এয়ার ট্রাভেলসের মাওলানা ফজলে এলাহি, বাংলাদেশ এয়ার ট্রাভেলসের মাওলানা জাহিদ আলম, মদিনা স্টার ট্যুর ট্রাভেলসের গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, কসমিক এয়ার সার্ভিসের নুরুল ইসলাম শাহিন, মক্কা মদিনা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মাওলানা মাসুদুর রহমান, এসএস ইন্টারন্যাশনালের কামাল উদ্দিন দিলু, তায়্যেবা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কাজী রাসেল আহমেদ, কেরামতিয়া এয়ার ট্রাভেলসের আলহাজ্ব আব্দুল গাফফারসহ অন্যান্য হজ এজেন্সির মালিকরা উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন।
সৌদি আরবের মেহমানদের উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করেন মাওলানা রহমতে এলাহী আরমান।
অনুষ্ঠানে সৌদি হজ ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস মিলেনিয়াম কোম্পানির কর্মকর্তা হাজি মোহাম্মদ ফুরকান বলেন, আমাদের কোম্পানি হাজিদের চোখের পানি দেখতে চায় না। আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে আমি পাশে আছি।
অনুষ্ঠানে আদনান বিন মোহাম্মদ তাহের বিন আবদুল আজিজ সাফিরুদ্দিনকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও মানপত্র তুলে দেন হাফেজ নূর মোহাম্মদ ও মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরীসহ অন্যরা।
মানুষ এখন অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যে ঝুঁকছে। অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন এমন ক্রেতার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ফলে দেশে প্রতিদিন বাড়ছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীর সংখ্যা।
ই-কমার্স মার্কেটে প্রতিদিন ভোক্তা যেমন বাড়ছে, তেমনি অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা করেন এমন উদ্যোক্তাও দিন দিন বাড়ছে। ফলে ভোক্তাদের আকর্ষণ করতে ব্যবসায়ীদের নতুন নতুন ফরমুলা অ্যাপ্লাই করতে হচ্ছে।
ইদানীং দেখা যাচ্ছে কিছু অনলাইনভিত্তিক শপ ভোক্তাদের জন্য লোভনীয় পুরস্কারের অফার দিচ্ছে।
যেমন- বই অথবা পোশাক কিনে পবিত্র উমরাপালনের সুযোগ। আতর, চশমা কিংবা অন্যান্য প্রসাধনী কিনে মোটরসাইকেল উপহার পাওয়ার সুযোগ। অনেকে আবার ভোক্তাদের আকর্ষণ করতে একাধিক পুরস্কারেরও ঘোষণা দিচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যারা তাদের পণ্য কিনবে, তাদের মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে একজন কিংবা একাধিক জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য বিজয়ী নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করা হবে ফেসবুক লাইভে এসে।
এখন প্রশ্ন হলো, এ পদ্ধতিতে কেনাকাটা করে পুরস্কার গ্রহণ জায়েজ আছে কি?
ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, এ ক্ষেত্রে প্রথমত দেখতে হবে, পুরস্কার ঘোষণাকারী ব্যবসায়ী তার পণ্যটি ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করছে কি না? তার পণ্যটি আসলেই মানসম্মত কি না? ন্যায্য মূল্যে মানসম্মত পণ্য বিক্রি করা হলে বিক্রেতার পক্ষ থেকে এ ধরনের পুরস্কার প্রদান করা জায়েজ। তদ্রূপ ক্রেতার যদি ওই পণ্যটি প্রয়োজন হয়, তাহলে সে এ ধরনের শপ থেকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনতে পারে।
তবে পুরস্কারের কারণে যদি পণ্যের মূল্য (তার বাজারমূল্যের তুলনায়) বাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং ক্রেতার যদি ওই পণ্যটি প্রয়োজন না হওয়া সত্ত্বেও শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় অস্বাভাবিক দামে এ ধরনের পণ্য ক্রয় করে, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে তা জায়েজ নয়।
প্রয়োজন ছাড়া শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে এমন পণ্য কেনাকে ইসলামি স্কলাররা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচনা করেছেন।
সাহাবি হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলিম বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করলে একজন ফেরেশতা তার জবাবে বলে আর তোমার জন্যও অনুরূপ।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৮২০
মানুষ একে অন্যের কাছে নানা সময় দোয়া চেয়ে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষ বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে একান্ত দোয়ার কথা বলেন অনেকে। এটা অনেকটাই স্বাভাবিক বিষয়।
ইসলাম মতে, অপরের জন্য দোয়া করার মধ্যে শুধু ওই ব্যক্তির জন্যই কল্যাণ নিহিত এমন নয়; বরং যে তার জন্য দোয়া করছেন তাকেও আল্লাহতায়ালা সে রকম দান করবেন। এক্ষেত্রে তার দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। কেননা সে যখন অপরের জন্য দোয়া করবে তখন একজন ফেরেশতা তার জন্য দোয়া করবে। আর ফেরেশতার দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বর্ণিত হাদিসে এটাই বলা হয়েছে।
অন্যদিকে মুসলমান হিসেবে জীবনের যেকোনো মুহূর্তে অন্যের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা কর্তব্য। কেউ অন্যের মাধ্যমে উপকৃত হলে তার জন্য কল্যাণের দোয়া করা উচিত। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তার প্রিয় সহযোগী হজরত আনাস (রা.)-এর জন্য একটি দোয়া করেছিলেন। তা হলো-
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আপনি তার সম্পদ ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দিন এবং আপনি তাকে যা কিছু দান করেছেন, তাতে বরকত দান করুন।’
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) তার মা উম্মে সুলাইম (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি নবী কারিম (সা.)-কে বলেছেন, হে আল্লাহর রাসুল! আনাস তো আপনারই খাদেম। আপনি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। তখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া করেন ...। -সহিহ বোখারি : ৬৩৩৪