স্বামী থাকা অবস্থায় নতুন বিয়ে অবৈধ ও বেআইনি

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিয়ের একটি মুহূর্ত, ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের একটি মুহূর্ত, ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ক্রিকেটার নাসির হোসেন বিয়ে করেছেন। ইতোমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, আগের স্বামীকে তালাক না দিয়ে নাসিরকে সঙ্গে বিয়ে করেছেন তামিমা তামি। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খোলামেলা কথা বলেছেন তামিমার স্বামী রাকিব। তামিমার স্বামী রাকিবের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, এখনও তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক রয়েছে। তাদের মাঝে কোনো ধরনের বিচ্ছেদ কিংবা তালাকের ঘটনা ঘটেনি। তাদের ঘরে রয়েছে ৮ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান। তালাক না দিয়ে নতুন বিয়ে করায় তামিমার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাকিব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া এক অডিওতে নাসিরও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বলে স্বীকার করেছেন।

যেহেতু নাসির হোসেন বাংলাদেশের আলোচিত একজন মানুষ। সাধারণ মানুষের মাঝে তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এমন মানুষের এ জাতীয় বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হওয়া স্বাভাবিক। এ কারণে নাসিরের এ বিয়ে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, নাসির-তামিমার বিয়ে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বৈধ হয়েছে কি-না?

বিজ্ঞাপন

আলোচিত বিষয়ে ইসলামের বিধান অত্যন্ত স্পষ্ট। ইসলামি শরিয়তের বিধান হলো, কোনো নারী কারও স্ত্রী হিসেবে থাকাকালীন নতুন বিয়ে করতে পারবে না। স্বামী তাকে তালাক দিতে হবে অথবা স্বামী মারা যেতে হবে কিংবা স্ত্রী স্বামীর দেওয়া অধিকার বলে নিজের ওপর তালাক গ্রহণ করতে হবে। যথানিয়মে তালাক পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় ইদ্দত পালন করতে হবে। ইদ্দত হলো- তিন পিরিয়ড। ইদ্দত পালন শেষ হলে অন্য কারও সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এই নিয়ম ছাড়া বিয়ে করলে বিয়ে হবে না।

সুতরাং নাসিরের বর্তমান স্ত্রী তামিমার সঙ্গে তার পূর্বের স্বামীর যদি শরীয়তসম্মতভাবে বিচ্ছেদ কিংবা না হয়ে থাকে, তাহলে কোনোভাবেই নাসিরের সঙ্গে তামিমার বিয়ে বৈধ হয়নি।

এক্ষেত্রে তাদের করণীয় হলো, তারা যদি ঘর-সংসার করতে চায়, তাহলে শরিয়তসম্মতভাবে তালাক গ্রহণের পর তিন পিরিয়ড শেষে তাদের বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় এটি বিয়ে নয়, বরং এটি ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

আরেকটি কথা, এমন বিয়ে শুধু শরিয়তের দৃষ্টিতেই অবৈধ নয়, বরং আইনের দৃষ্টিতেও বেআইনি। বিধান অনুযায়ী, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় বলা আছে, পূর্বের বিয়ে থাকা অবস্থায় কোনো স্ত্রী একাধিক বিয়েতে আবদ্ধ হলে ৭ (সাত) বছর কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে, আর ৪৯৫ ধারায় বলা আছে, যদি পূর্বের বিয়ে গোপন করে তাহলে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।