বিপদ আসে ইসলামের বিধান লঙ্ঘনে

  • মনির হোসেন হেলালী, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিপদ আসে ইসলামের বিধান লঙ্ঘনে, ছবি: সংগৃহীত

বিপদ আসে ইসলামের বিধান লঙ্ঘনে, ছবি: সংগৃহীত

মানুষকে সুখে শান্তিতে দুনিয়ায় বসবাসের জন্য নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েতস্বরূপ এবং হেদায়েতের সুস্পষ্ট নির্দেশনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’ –সূরা বাকারা: ১৮৫

রাসূলের কথা না শোনে, কোরআন ভুলে; ইসলামের বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে মানুষ দিন দিন ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নিজেকে নিজে ধ্বংস করার জন্য পৃথিবীজুড়ে যেন এক মহা উৎসবের আয়োজন করছে।

বিজ্ঞাপন

পৃথিবীতে এখন ক্ষতিকর যেসব বিষয় লক্ষ্য করা যায়, শুরু থেকেই ইসলাম সেগুলো থেকে দূরে থাকতে বলেছে। অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, খাদ্যে ভেজাল দেওয়া, ওজনে কারচুপি করা, অন্যের অধিকার নষ্ট করা, অন্যায়-অপরাধে উৎসাহিত করা, আগুনে পুড়িয়ে প্রাণী হত্যা করা, ইসলামের সীমা অতিক্রম করা- এ সবই ইসলামে নিষিদ্ধ। কারণ এগুলোর খারাপ কতগুলো দিক আছে। যা মানুষকে অশান্তির দিকে ঠেলে দেয়। হাদিসে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য এসেছে এভাবে।

তাফসিরে মাআরেফুল কোরআনের ৫১৬-৫১৭ নং পৃষ্ঠায় পাওয়া যায়, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) বলেন, একবার রাসূলে কারিম (সা.) এক ভাষণে বলেছেন, হে মুহাজেরিন দল! পাঁচটি অভ্যাসের ব্যাপারে আমি আল্লাহতায়ালার নিকট পানাহ চাই। সেগুলো যেন তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি না হয়। তার একটি হলো- অশ্লীলতা। কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে যখন অশ্লীলতা বিস্তার লাভ করে- তখন তাদের মধ্যে প্লেগ ও মহামারির মতো নতুন নতুন ব্যাধি চাপিয়ে দেওয়া হয়, যা তাদের বাপ-দাদারা কখনও শোনেনি।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয়ত, যখন কোনো জাতির মধ্যে মাপে কারচুপি করার রোগ সৃষ্টি হয়, তখন তাদের মধ্যে দুর্ভিক্ষ, মূল্যবৃদ্ধি, কষ্ট-পরিশ্রম এবং কর্তৃপক্ষের অত্যাচার উৎপীড়ন চাপিয়ে দেওয়া হয়।

তৃতীয়ত, যখন কোনো জাতি জাকাত প্রদানে বিরত থাকে, তখন বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেওয়া হয়।

চতুর্থত, যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর অজ্ঞাত শত্রু চাপিয়ে দেন। সে তাদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ছিনিয়ে নেয়।

পঞ্চমত, কোনো জাতির শাসকবর্গ যখন আল্লাহর কিতাবের আইন অনুযায়ী বিচার-মীমাংসা পরিত্যাগ করে এবং আল্লাহতায়ালা কর্তৃক নাজিলকৃত হুকুম-আহকাম তাদের মনঃপূত হয় না, তখন আল্লাহতায়ালা তাদের মধ্যে পারস্পারিক বিবাদ-বিসংবাদ সৃষ্টি করে দেন। -ইবনে মাজাহ

হাদিসে বর্ণিত বিষয়গুলোর সঙ্গে বাস্তবতাকে মিলিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বর্তমান দুনিয়ায় যেসব সমস্যা দেখা দিচ্ছে- তার সবই ইসলামের বিধানকে লঙ্ঘন করার ফল।

বিশ্বজুড়ে অশ্লীলতার সয়লাব, সংস্কৃতি পালনের নামে অপসংস্কৃতির বিস্তার, মাপে কম দেওয়া, জাকাত প্রদান থেকে প্রদানে বিরত থাকা, বিনাবিচারে মানুষ হত্যার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। হাদিসে বর্ণিত সর্বশেষ বিষয়টি চোখ বন্ধ করে চিন্তা করলে দেখা যাবে, বর্তমান বিশ্ব চলছে অবাধ্যতার পথে। যে পথে চলতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে বারবার।