অভাব-অনটন দূর করতে সাত আমল

  • মুফতি আবুল কাসেম, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে যাবতীয় বিপদাপদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন, ছবি: সংগৃহীত

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে যাবতীয় বিপদাপদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন, ছবি: সংগৃহীত

জীবনে সব মানুষই সফল হতে চায়। আর জীবনকে সুখময় করতে কত কিছুই না করে। কিন্তু ক’জনের জীবনে সফলতা আসে? বরং দেখা যায় সামান্য পরিশ্রমে কারও জীবন বদলে যায়, সফলতা আসে তার জীবনে। কিন্তু কঠোর পরিশ্রমেও অনেকের অভাব দূর হয় না।

সুখ-দুঃখ, সবই আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে। তিনিই দান করতে পারেন সফলতা। দূর করতে পারেন অভাব-অনটন। তাই আমাদেরকে আল্লাহতায়ালা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাতলানো কিছু আমল করতে হবে। আল্লাহ চাহে তো, এতে সঙ্কীর্ণতা কেটে যাবে। ফিরে আসবে সচ্ছলতা।

বিজ্ঞাপন

প্রথম আমল: তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল (আল্লাহভীরুতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা) অবলম্বন করা। অর্থাৎ আল্লাহতায়ালার নির্দেশাবলি পালন ও তার নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করা। সর্বদা আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা।

কারণ, যে আল্লাহর ওপর অটল ভরসা রাখে, তিনি তার সব কিছুর ব্যবস্থা করেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ অবশ্যই তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেন। নিশ্চয় তিনি প্রত্যেক জিনিসের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। -সূরা আত তালাক: ২-৩

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় আমল: বেশি বেশি তওবা করা। এর দ্বারা গোনাহ মাফ হয়। দূর হয় যাবতীয় বিপদাপদ, আসে জীবনে সফলতা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, অতঃপর আমি বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। বাড়িয়ে দেবেন তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি। স্থাপন করবেন তোমাদের জন্য উদ্যান। প্রবাহিত করবেন তোমাদের জন্য নদীনালা। -সূরা নূহ: ১০-১২

হাদিস শরিফে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে যাবতীয় বিপদাপদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন এবং তাকে অকল্পনীয় স্থান থেকে রিজিক দান করবেন। -সুনানে আবু দাউদ: ১৫১৮

তৃতীয় আমল: সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করা। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনও অভাব-অনটনে পড়বে না। এ হাদিসের রাবি (বর্ণনাকারী) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তার কন্যাদের প্রতি রাতে এ সূরা পাঠ করার নির্দেশ দিতেন। -মেশকাতুল মাসাবিহ: ২১৮১

চতুর্থ আমল: আল্লাহতায়ালার রাস্তায় ব্যয় করা। আল্লাহর রাস্তায় কোনো কিছু দান করলে তা বিফলে যায় না। সে সম্পদ ফুরিয়ে যায় না। বরং তা বাড়তে থাকে। এ বিষয়ে কোরআন কারিমে ইরশাদ হয়েছে, বলুন! নিশ্চয় আমার রব তার বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো, তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা। -সূরা সাবা: ৩৯

পঞ্চম আমল: আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি প্রিয়নবী (সা.) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তার জীবিকা প্রশস্ত করতে চায় এবং বাড়াতে চায় তার আয়ু সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। -সহিহ বোখারি: ৫৯৮৫

ষষ্ঠ আমল: নেয়ামতের শোকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) আদায় করা। শোকরিয়ার ফলে নেয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহতায়ালার ঘোষণা, যদি তোমরা শোকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন। -সূরা ইবরাহিম: ৭

সপ্তম আমল: বিয়ে করা। বিয়ের মাধ্যমেও সংসারে সচ্ছলতা আসে। কারণ, সংসারে নতুন যে কেউ যুক্ত হয়, সে তার রিজিক নিয়েই আসে। আল্লাহতায়ালা বলেন, আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’ -সূরা আন নূর: ৩২