ডুবন্ত গ্রামে থেকে যাওয়া একা এক পরিবার

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বিবিসি

ছবি: বিবিসি

ইন্দোনেশিয়ার মধ্য জাভার গ্রাম বদেনো। একসময় এখানে ২০০ এর বেশি পরিবারের বাস ছিল। ফসলের জমিতে তারা ধান এবং ভুট্টা ফলাতো। কিন্তু ধীরে ধীরে সমুদ্রের পানিতে এখন প্রায় পুরো গ্রামই তলিয়ে গেছে। সব পরিবার অন্য জায়গায় চলে গেলেও এখনো রয়ে গেছে পাঁচ সদস্যের পাসিজাহদের পরিবার।

পাসিজাহ বলেন, ‘প্রতি বছর দ্বীপ থেকে লোকেরা চলে যেতে শুরু করে। ২০০৫ সালে তারা অন্য জায়গায় নিজেদের পুনর্বাসনের আবেদন জানায়। আমরাই একমাত্র এখানে রয়ে গিয়েছি’।

বিজ্ঞাপন

মাত্র কয়েক বছরে সমুদ্র দুই কিলোমিটার ভেতরে সরে এসেছে। পুরো ইন্দোনেশিয়াতেই উপকূলীয় এলাকাগুলোর দিকে সমুদ্র সরে আসছে। ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে লাখো মানুষ।

ব্যান্ডাং ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ড. হেরি আন্দ্রেস বলেন, মানুষ এমন ভাবে বলছে যেন এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। কিন্তু মানুষের নানারকম কর্মকাণ্ডেরই ফল এসব।

গবেষকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পরিমাণে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের লেভেল বাড়তে থাকায় জাভা ডুবে যাচ্ছে।

আন্দ্রেস আরো বলেন, ‘আমরা ইন্দোনেশিয়ার ২০ বছরের তথ্য সংগ্রহ করেছি। সমুদ্রের লেভেল বছরে সাধারণত ছয় মিলিমিটার থেকে এক সেন্টিমিটার বাড়ে। কিন্তু এখন বছরে ১০ সেন্টিমিটার করে এমনকি কোথাও কোথাও ২০ সেন্টিমিটার করেও বাড়তে শুরু করেছে। এটি খুবই বিপজ্জনক’।

সরকার পানি আটকানোর জন্য উপকূলে আল তৈরি করছে। এদিকে পাসিজাহ নিজের ঘর বাঁচাতে তার গ্রামে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছেন।

পাসিজাহ বলেন, ‘আমি যদি গ্রাম ছেড়ে চলে যাই তাহলে যতটুকু বাকি আছে অতটুকুও সমুদ্রে হারিয়ে যাবে। আমি আমার গ্রামের দেখাশোনা করছি। গ্রামের শেষটা রক্ষায় ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়ে দিয়েছি’।