জাপানের ঐতিহ্যবাহী চেরি ফুল দেখার উৎসব এবার অনলাইনে
করোনা ভাইরাসচেরি ফুল নিয়ে জাপানিদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘হানামি’ প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে উদযাপিত হয়ে আসছে। জাপানি শব্দ হানামির অর্থ— সবাই মিলে চেরি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় এবার জাপানিরা ‘ভার্চুয়াল হানামি’ অর্থাৎ অনলাইনে চেরিফুল দেখার উৎসবে মেতে উঠেছেন।
প্রতি বসন্তে স্থানীয়রা ও বিদেশি দর্শনার্থীরা জাপানজুড়ে উদ্যানগুলোতে চেরি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে যান। চেরি ফুল সাকুরা নামেও পরিচিত, এই ফুলগুলো জাপানি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
হানামির বার্ষিক অনুষ্ঠানে সাধারণত চেরি ফুল দেখাকে কেন্দ্র করে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে উদ্যানগুলোতে পার্টি ও পিকনিক করেন জাপানিরা।
মার্চ মাসের শেষ থেকে মে মাসের শুরুতে চেরি গাছগুলোতে পুরো জাপানজুড়ে ফুল ফোটে। ফুল ফোটার পূর্বাভাস প্রতিবছর আবহাওয়া ব্যুরো ঘোষণা করে এবং হানামির আয়োজকরা গভীর মনোযোগ দিয়ে তা পর্যবেক্ষণ করে। যেহেতু ফুলগুলো মাত্র এক বা দুই সপ্তাহ দীর্ঘস্থায়ী হয়, আর এই সময়ের মধ্যে হানামির আয়োজন সারতে হয়।
হানামি উৎসবে দিনে বা রাতের বেলায় আউটডোর পার্টিতে অংশ নেন জাপানিরা। রাতের হানামিকে যোজাকুড়া বা ‘নাইট সাকুরা’ বলা হয়। এ সময় অনেক জায়গায় অস্থায়ী কাগজের লণ্ঠন ঝুলিয়ে দেন আয়োজকরা।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবার চেরি ফুলের মৌসুমেও জাপানিদের গৃহবন্দী করে রাখলেও বাগানে ঠিকই ফুটেছে অপরূপ ফুল।
যেহেতু দেশে-বিদেশে ভ্রমণ বন্ধ এবং নাগরিকদের বাড়ির ভিতরে থাকতে উৎসাহিত করা হচ্ছে তাই জাপানিরা চেরি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের ভিন্ন উপায় খুঁজে বের করেছেন।
যেহেতু বাইরে উদ্যানে হাঁটতে হাঁটতে সাকুরা দেখার সুযোগ নেই তাই ঘরে বসেই চেরির সৌন্দর্য উপভোগে ব্যবস্থা করা হয়েছে ভার্চুয়াল হানামিতে।
জাপানিরা ঘরে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চেরি ফুলের প্রচুর ভিডিও এবং ছবি দেখে হানামি উদযাপন করছেন।
জাপানের একটি আবহাওয়া নিউজ চ্যানেল চেরি ফোটার ৫০টি ভিডিও অনলাইনে রেখেছে। ৩৬০-ডিগ্রি ভিডিওগুলোতে দর্শকদের জাপানের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাকুরা উদ্যানে নিয়ে যাচ্ছে।
একইভাবে অন্যান্য চ্যানেলগুলোও ডিজিটাল হানামিতে উৎসাহিত হয়ে তাদের অনুষ্ঠানে সাকুরার ভিডিও রাখছে।
ইন্টারনেট জুড়ে জাপানিরা #virtualhanami হ্যাশট্যাগ দিয়ে চেরি ফুলের ভিডিও শেয়ার করছেন। কেউ কেউ লিখছেন— আমরা এখন বাইরে যেতে পারছি না। তবে এর অর্থ এই নয় যে, আমরা সাকুরা উদযাপন করতে পারব না।