মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মারধর করেছে। হামলায় বাম-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০ জন এবং ১২ শিক্ষক আহত হয়েছেন।
বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছাত্র সংগঠন এবিভিপিকে এ হামলার জন্য দায়ী করেছেন ছাত্র-শিক্ষকরা।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে জেএনইউ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর এ হামলা চালায় অজ্ঞাত মুখোশধারীরা। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলায় জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষসহ আহত হয়েছেন অনেকে। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ছাত্রনেতাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত ঐশী ঘোষ বলেন, মুখোশধারী দুবৃত্তরা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। আমার শরীর দিয়ে রক্ত ঝরেছে। আমাকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
শতাধিক দুর্বৃত্ত ওই হামলায় অংশ নেয় বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে। হামলার পর অনেক দুর্বৃত্ত হোস্টেলের ভেতরে অবস্থান নেয় বলেও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।
এদিকে হামলার পর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির পুলিশ প্রধান অমূল্য পট্টনায়েককে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন এবং ঘটনার প্রতিবেদন দিতে বলেন।
২৪ ঘণ্টায় ১১টি ফ্লাইটসহ এক সপ্তাহে মোট ৫০টি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে ভারত। এতে করে কখনো ফ্লাইট দেরি এবং কখনো কখনো ফ্লাইটের যাত্রা জরুরিভাবে ঘুরিয়ে দিয়ে অন্য কোথাও অবতরণ ঘটানোর ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১১টা ফ্লাইটের উড্ডয়ন দেরি এবং যাত্রাপথ ঘুরিয়ে জরুরি অবতরণ করাতে বাধ্য হয়েছে বোমাতঙ্কের কারণে।
তবে এ এসব বোমা হামলার হুমকির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে ফ্লাইটের উড্ডয়ন দেরি ও যাত্রাপথ ঘুরিয়ে জরুরি অবতরণ করানো হয়। এই নিয়ে এক সপ্তাহে ৫০টি ফ্লাইটের যাত্রা বিরতি এবং জরুরি অবতরণ করিয়ে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হলো।
জানা যায়, শনিবার ভিস্তারা একটি ফ্লাইট (ইউকে ১৭) দিল্লি থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওয়ানা হলে বোমাতঙ্কে সেটিকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুটে জরুরি অবতরণ করানো হয়।
এরপর জয়পুর-দুবাই এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইটে (আইএক্স ১৯৬) ভুয়া বোমা হামলার হুমকি পাওয়া যায়।
এছাড়া আলাস্কা এয়ার ফ্লাইটের ৫টি এবং ইন্ডিয়াগো ফ্লাইটের ৫ ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি পাওয়া যায়।
সেইসঙ্গে জয়পুর থেকে দুবাইগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটের (আইএক্স ১৯৫) যাত্রায় বিলম্ব ঘটে বোমাতঙ্কের কারণে। এটি সকাল ৬টা ১০ মিনিটে উড্ডয়ন করার কথা ছিল কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে সেটি সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে দুবাইয়ের উদ্দেশে উড়ে যায়।
ঠিক একই কারণে ভিস্তারা ফ্লাইটের যাত্রা ফ্রাঙ্কফুট থেকে ঘুরিয়ে লন্ডনে অবতরণ করানো হয়। ভিস্তারা ফ্লাইট ইউকে-১৭ ১৮ অক্টোবর থেকে দিল্লি থেকে লন্ডন উড়াল শুরু করেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে সে ফ্লাইট নিয়েও বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়।
আলাস্কা এয়ার জানায়, ১৯ অক্টোবর থেকে তারাও ফ্লাইট অপারেশন শুরু করেছে। শনিবার তারাও বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে। সে কারণে তাদের ফ্লাইট উড্ডয়নের আগেই সতর্কতামূলক নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে। শনিবার আলস্কা এয়ার বোমা হামলার হুমকি পাওয়ার পর বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইগামী একটি ফ্লাইটের যাত্রার বিলম্ব ঘটে।
এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বলেছিলেন, বেশির ভাগ বোমা হামলা কোনো ষড়যন্ত্রের কারণে ঘটেনি। বেশির ভাগ হুমকি পাওয়া গেছে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং সামাজিক সাইটে মজা করার উদ্দেশ্যে করার কারণে।
এ কারণে বুধবার (১৬ অক্টোবর) ১৭ বছরের এক কিশোরকে মুম্বাই পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নাইডু বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের বোমাতঙ্কের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগের নিয়ম-নীতিতে পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
মিয়ানমারে চীনের কনস্যুলেট ভবনে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে চীনের কনস্যুলেট কিংবা জান্তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কারা এ হামলার জন্য দায়ী সে বিষয়েও কিছু জানা যায়নি।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ফরাস বার্তাসংস্থা এএফপি’র বরাত দিয়ে টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যার পর মিয়ামানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে চীনের কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও এ সময় কনস্যুলেট ভবনের সামনে জান্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
খবর সূত্রে জানা যায়, জান্তাকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ শানের বিদ্রোহী উপজাতীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলে চীন।
২০২১ সালে অং সান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে নেয়।
এদিকে, মান্দালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মিয়ানমারের মান্দালয়ের চীনের কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং কী ধরনের হামলা হয়েছে, সেবিষয়েও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এছাড়া, দ্য ভয়েস অব মিয়ানমার জানায়, চীনের কনস্যুলেটে কী ধরনের হামলা হয়েছে, তা জানা যায়নি। এ ঘটনার পর চীনের দূতাবাস ও মিয়ানমারের জান্তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের সুইস পাবলিক রেডিও এর সিনিয়র এডিটর শার্লট জ্যাকমার্ট।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ভয়েসে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সুইস এই সাংবাদিক বলেন, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াইয়ের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করি। আমার কর্মজীবনে তার দুবার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। যখন তিনি দেশে সমালোচিত হন তখন বিশ্বে আমার লেখা তার প্রতিবাদ করেছিল, পক্ষে ছিল। কিন্তু তারপরেও আমার রক্ত হিম হয়ে যায় যখন আমি জানতে পারি, মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়োগের পরপরই ডজন খানেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমার প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুদের কয়েকজনকে এমনকি কারাগারেও পাঠানো হয়েছে।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সবসময়ই শক্ত পথ ধরে হাঁটতে হয়েছে। কারণ সবসময়ই এক দিক থেকে বিপদ ছিল। কিন্তু শক্ত পথে হাঁটা সাংবাদিকদের ফ্যাসিস্ট এ পরিণত করে না এবং এটি কখনোই তাদের কারাগারে নিক্ষেপ করা এবং তাদের ‘খুনি’ বলা সমর্থন করে না। যেমনটি আমার বন্ধু ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদ এবং আরও অনেকের সাথে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, ইতিহাসে সাংবাদকিরা সবসময়ই ভালো বলির পাঁঠা হয়েছে। বিক্ষোভে নিহত ছাত্রদের হত্যার দায় পুলিশকে না দিয়ে নিরীহ সাংবাদিকদের ওপর চাপানো অনেক সহজ। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯নং অনুচ্ছেদে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা দেওয়া হলেও আজ অবধি ১০০টিরও বেশি সাংবাদিককে জুলাইয়ের শরু থেকে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের জন্য হত্যার প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য তিনি বলেন, বাংলাদেশ যদি সত্যিকার অর্থে একটি নতুন অধ্যায় খুলতে চায়, একটি আধুনিক গণতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতে চায়, তাহলে দেশটিকে এক নীতিতে কাজ করতে হবে। যার অর্থ, মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতারক্ষা, বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশের প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপদবোধ করা। শুধু যারা এখন ক্ষমতায় আছে তারা নয়।
বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে প্রমাণ করতে হবে যে তারা সত্যিই ইতিহাসের একটি পাতা পাল্টাতে যাচ্ছে। এটি সফল হলে, খ্যাতি এবং সম্মান অর্জন করবে। তারপরে বিশ্বজুড়ে এনজিও এবং সরকার থেকে বিনিয়োগ আসবে।
ভারতের বিহার রাজ্য ও উত্তর প্রদেশে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটনায় ৬ জন নিহত এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রথম ঘটনায় বাঙ্কা জেলায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিবভক্তদের পদযাত্রার ওপর উঠে গেলে ৪ জন নিহত ও আরো কয়েকজন আহত হন। এঘটনার পর উত্তেজিত এলাকাবাসী পুলিশের একটি গাড়ি আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন।
অপর একটি ঘটনায় উত্তর প্রদেশের বলরামপুর সড়কে ঘটেছে। এতে ২ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ২০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল নয়াদিল্লি টেলিভিশন-এনডিটিভি এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ভারতের বিহার রাজ্যের বাঙ্কা জেলায় শিবভক্তরা ঘড়ায় পানি ভরে মন্দিরে হেঁটে যাওয়ার সময় শুক্রবার রাতে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের ওপর উঠে যায়। এতে ৪ জন নিহত হন।
এঘটনার পর উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে আসা পুলিশের একটি গাড়ি আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন।
জানা যায়, শুক্রবার রাতে একদল শিবভক্ত সুলতানগঞ্জের গঙ্গানদী থেকে ঘড়ায় পানি ভরে দুই কাঁধে ঝুলিয়ে পায়ে হেঁটে জাস্ট গৌরনাথ মন্দিরে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের ওপর উঠে যায়। এতে ৪ জন শিবভক্ত নিহত হন। এ খবর পেয়ে পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে এলে উত্তেজিত এলাকাবাসী গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, ঘটনার পর পরই আমরা সেখানে উপস্থিত হই। গাড়িচাপায় ৪ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ১০ থেকে ১১ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
এছাড়া শুক্রবার রাতে আরো একটি ঘটনায় একটি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তর প্রদেশের ধেবুরা থানার কাছাকাছি বলরামপুর সড়কে একট বাস পথচারীদের ওপর উঠে গেলে ২ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন।