আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণার পর শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে অভিনব পদ্ধতি অনুসরণ করছে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্বদ্যিালয় (জেএনইউ)।
শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার সমাপনী পরীক্ষা ই-মেইল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে, প্রশাসনিক এ সিদ্ধান্তকে ‘উদ্ভট’ বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীরা।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায় গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ডিন অনুষদের বিভাগীয় প্রধানদের একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে ডিন অশ্বিনী কে. মোহাপাত্র জানান, ক্যাম্পাসে চলমান বিশেষ পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা নেয়ার এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মোহাপাত্র আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক স্বার্থেই মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা ই-মেইল বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা সম্মতি দিয়েছেন।
ওই চিঠির বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে জানায়, মাস্টার্স ও এমফিল কোর্সের শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে দেবেন। শিক্ষার্থীদের ই-মেইলের মাধ্যমে বা হোয়াটসঅ্যাপে উত্তরপত্রের স্ক্যান কপি শিক্ষকের কাছে পাঠাতে হবে। এ ছাড়াও তারা নিজে উত্তরপত্র নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছে জমা দিতে পারবেন।
আগামী ২১ তারিখের মধ্যে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র জমা দিতে হবে। তবে, কেউ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে না পারলে তাকে অতিরিক্ত একদিন সময় দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
এ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি বা কপি করার বিষয়টি কীভাবে দেখা হবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে অশ্বিনী কে. মোহাপাত্র জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের আর কোনো উপায় নেই।
গত নভেম্বরে হোস্টেল ফিসহ বিভিন্ন ফি উচ্চহারে বাড়ানোর প্রতিবাদে আন্দোলন করে আসছেন জেএনইউর শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে তারা পরীক্ষা বয়কটের ঘোষণা দেন।
প্রশাসনের পরীক্ষা নেওয়ার এই কৌশলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংসদ ও শিক্ষক সংসদ ‘হাস্যকর’ ও ‘উদ্ভট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের অভিযোগ, যথাযথ পন্থা না মেনেই এ ধরনের হাস্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা প্রক্রিয়াকে ব্যাঙ্গ করা হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।
গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২২ জন এবং জাবালিয়া ও মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ৪৪ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের ওয়াফা বার্তা সংস্থার বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে,উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় একটি আবাসিক কমপ্লেক্স লক্ষ্য এ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে, উদ্ধারকারী দল তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।
অন্য আরেকটি ঘটনায়, উত্তর গাজার জাবালিয়া এবং মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৮০ জনেরও বেশি।
গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪২ হাজার ৫১৯ জন নিহত এবং প্রায় ১ লাখ মানুষ আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলার পর পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হিব্রু এবং ইংরেজি ভাষায় একজোড়া ভিডিওবার্তায় তিনি বলেছেন, ‘কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারবে না’ এবং ‘ইসরায়েল এ যুদ্ধে জিতবে’।
ইহুদিদের ছুটির দিনে নেতানিয়াহুর বিরল ভিডিও বার্তা এসেছে। তার সিজারিয়াতে তার বাসভবনকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ বার্তা দিয়েছেন। যদিও তিনি ঘটনাটির কথা সরাসরি উল্লেখ করেননি।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ইংরেজি এবং হিব্রু ভাষায় সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা ভিডিওতে নেতানিয়াহু বলেছেন, আপনি জানেন, দুই দিন আগে আমরা গণহত্যাকারী (হামাস নেতা) ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নির্মূল করেছি। আমি যেমন বলেছি, আমরা একটি অস্তিত্বের যুদ্ধে আছি, এবং আমরা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।
চোখে সানগ্লাস এবং কালো রঙের পোলো শার্ট পরা নেতানিয়াহু রৌদ্রজ্জল দিনে সুন্দর সবুজ একটি পার্কে চিত্রায়িত ভিডিওতে নেতানিয়াহু ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রশংসা করে বলেছেন, আমি আমাদের সৈন্যদের জন্য গর্বিত, আমি আমাদের কমান্ডারদের জন্য গর্বিত, এবং আমি তোমাদের জন্য গর্বিত, সর্বোপরি আমি ইসরায়েলের নাগরিকদের নিয়েও গর্বিত।
ইংরেজি ভাষার ভিডিওতে তিনি বলেন, একজন সন্ত্রাসী মাস্টারমাইন্ড, যার অনুসারী দুর্বৃত্তরা আমাদের পুরুষদের শিরোচ্ছেদ করেছে, আমাদের নারীদের ধর্ষণ করেছে, আমাদের শিশুদের জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে, তাকে আমরা হত্যা করেছি। ইরান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে।
শনিবার ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবের সিজারিয়ায় নেতানিয়াহুল বাসভবনে আঘাত হেনেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন।
তবে হামলার সময় নেতানিয়াহু, তার স্ত্রী এবং পরিবার সিজারিয়াতে ছিল না। এছাড়া এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলেও দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
২৪ ঘণ্টায় ১১টি ফ্লাইটসহ এক সপ্তাহে মোট ৫০টি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে ভারত। এতে করে কখনো ফ্লাইট দেরি এবং কখনো কখনো ফ্লাইটের যাত্রা জরুরিভাবে ঘুরিয়ে দিয়ে অন্য কোথাও অবতরণ ঘটানোর ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১১টা ফ্লাইটের উড্ডয়ন দেরি এবং যাত্রাপথ ঘুরিয়ে জরুরি অবতরণ করাতে বাধ্য হয়েছে বোমাতঙ্কের কারণে।
তবে এ এসব বোমা হামলার হুমকির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে ফ্লাইটের উড্ডয়ন দেরি ও যাত্রাপথ ঘুরিয়ে জরুরি অবতরণ করানো হয়। এই নিয়ে এক সপ্তাহে ৫০টি ফ্লাইটের যাত্রা বিরতি এবং জরুরি অবতরণ করিয়ে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হলো।
জানা যায়, শনিবার ভিস্তারা একটি ফ্লাইট (ইউকে ১৭) দিল্লি থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওয়ানা হলে বোমাতঙ্কে সেটিকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুটে জরুরি অবতরণ করানো হয়।
এরপর জয়পুর-দুবাই এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইটে (আইএক্স ১৯৬) ভুয়া বোমা হামলার হুমকি পাওয়া যায়।
এছাড়া আলাস্কা এয়ার ফ্লাইটের ৫টি এবং ইন্ডিয়াগো ফ্লাইটের ৫ ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি পাওয়া যায়।
সেইসঙ্গে জয়পুর থেকে দুবাইগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটের (আইএক্স ১৯৫) যাত্রায় বিলম্ব ঘটে বোমাতঙ্কের কারণে। এটি সকাল ৬টা ১০ মিনিটে উড্ডয়ন করার কথা ছিল কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে সেটি সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে দুবাইয়ের উদ্দেশে উড়ে যায়।
ঠিক একই কারণে ভিস্তারা ফ্লাইটের যাত্রা ফ্রাঙ্কফুট থেকে ঘুরিয়ে লন্ডনে অবতরণ করানো হয়। ভিস্তারা ফ্লাইট ইউকে-১৭ ১৮ অক্টোবর থেকে দিল্লি থেকে লন্ডন উড়াল শুরু করেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে সে ফ্লাইট নিয়েও বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়।
আলাস্কা এয়ার জানায়, ১৯ অক্টোবর থেকে তারাও ফ্লাইট অপারেশন শুরু করেছে। শনিবার তারাও বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে। সে কারণে তাদের ফ্লাইট উড্ডয়নের আগেই সতর্কতামূলক নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে। শনিবার আলস্কা এয়ার বোমা হামলার হুমকি পাওয়ার পর বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইগামী একটি ফ্লাইটের যাত্রার বিলম্ব ঘটে।
এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বলেছিলেন, বেশির ভাগ বোমা হামলা কোনো ষড়যন্ত্রের কারণে ঘটেনি। বেশির ভাগ হুমকি পাওয়া গেছে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং সামাজিক সাইটে মজা করার উদ্দেশ্যে করার কারণে।
এ কারণে বুধবার (১৬ অক্টোবর) ১৭ বছরের এক কিশোরকে মুম্বাই পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নাইডু বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের বোমাতঙ্কের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগের নিয়ম-নীতিতে পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
মিয়ানমারে চীনের কনস্যুলেট ভবনে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে চীনের কনস্যুলেট কিংবা জান্তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কারা এ হামলার জন্য দায়ী সে বিষয়েও কিছু জানা যায়নি।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ফরাস বার্তাসংস্থা এএফপি’র বরাত দিয়ে টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যার পর মিয়ামানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে চীনের কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও এ সময় কনস্যুলেট ভবনের সামনে জান্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
খবর সূত্রে জানা যায়, জান্তাকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ শানের বিদ্রোহী উপজাতীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলে চীন।
২০২১ সালে অং সান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে নেয়।
এদিকে, মান্দালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মিয়ানমারের মান্দালয়ের চীনের কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং কী ধরনের হামলা হয়েছে, সেবিষয়েও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এছাড়া, দ্য ভয়েস অব মিয়ানমার জানায়, চীনের কনস্যুলেটে কী ধরনের হামলা হয়েছে, তা জানা যায়নি। এ ঘটনার পর চীনের দূতাবাস ও মিয়ানমারের জান্তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।