বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় পাস হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয়। জনবিক্ষোভ রোধ করতে কারফিউ জারি করা হলেও মানছে না আসামের জনগণ। বিপুল সংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্যের চার এলাকায়।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াও করে বিক্ষোভ করেছে আসামের জনগণ। বিক্ষোভকারীরা জ্বালিয়ে দিয়েছে দুটি রেলওয়ে স্টেশন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটছে কোথাও কোথাও। রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তেলিসহ অনেক নেতা বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়েছেন।
বিক্ষোভ প্রতিহত করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এতে রাজ্যটির রাজধানী গুয়াহাটিতে তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে রাজ্যসভায় বিলটি পাস হওয়ার পর আসামে কারফিউ জারি করা হয়। একইসঙ্গে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আরও দুদিনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়েছে।
আসামে বিক্ষোভের কারণে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স বাতিল করছে তাদের ফ্লাইট। এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইট বাতিল ফিও কমিয়ে দিয়েছে।
রাজ্যসভায় বিলটি ১২৫-৯৯ ভোটে পাসের পর আসামে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভকে অনেকে ১৯৮০‘র দশকের অভিবাসীবিরোধী বিক্ষোভের মাত্রার সঙ্গে তুলনা করছেন। ওই সময়ের বিক্ষোভের ফলাফল হিসেবে ১৯৮৫ সালে আসাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির ধারাবাহিকতা হচ্ছে সম্প্রতি সমাপ্ত আসামের নাগরিকত্ব নিবন্ধন প্রক্রিয়া (এনআরসি)।
এদিকে, ত্রিপুরায়ও চলছে বিলবিরোধী বিক্ষোভ। রাজ্যটিতে মঙ্গলবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা।