ট্রাম্পকে পানামার প্রেসিডেন্টের পাল্টা জবাব
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথের পর দেয়া বক্তব্যে আবারও পানামা খাল দখলসহ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারির ঘোষণা দেন তিনি। তবে ট্রাম্পের এ বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট ।
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো বলেছেন, পানামা খাল পানামার হাতে আছে এবং পানামার হাতেই থাকবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ডোনাল্ড ট্রাম্পের পানামা খাল ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। একইসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান এই রুটটি তার দেশের (পানামার) হাতে আছে এবং তাদের হাতেই থাকবে।
পানামার প্রেসিডেন্টে আরও বলেন, বিশ্বে এমন কোনও দেশ নেই যারা আমাদের কতৃত্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণ শেষে দীর্ঘ বক্তব্য দেন তিনি। ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমি বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছি।
এদিকে ট্রাম্পের দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি পানামা খাল দখলের কথা জানান। তিনি বলেন, পানামা খালে আমেরিকান জাহাজের কাছ থেকে বেশি অর্থ নেওয়া হচ্ছে এবং আমাদের জাহাজকে ভালো সেবা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা পানামা খাল ফিরিয়ে নিচ্ছি।
ট্রাম্প দাবি করেন, খালটি তৈরির সময় ৩৮ হাজার আমেরিকান জীবন দিয়েছেন। এছাড়া চীন এটি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও তার এই দাবিগুলোর সত্যতা নেই।
সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এই খাল বানানোর সময় ৫ হাজার ৬০০ জনের মৃত্যু হয়। তবে বেশিরভাগই ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের। যেমন অ্যান্টিগা, বার্বাডোস এবং জ্যামাইকার বাসিন্দা ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এলিয়েনস এনিমিস অ্যাক্ট অব ১৭৯৮’ পুনর্বহাল করা হবে। এ আইনের মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্যগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিদেশি গ্যাংগুলো’ দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে পারে। মাদক চক্র বা কার্টেলগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করা হবে এসব নির্বাহী আদেশে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এ খালটি ১৯১৪ সালে চালু করা হয়। এরপর ১৯৭৭ সালে দেশটি পানামার সঙ্গে একটি চুক্তি করে খালটি তাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য। তবে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দুই দেশ যৌথভাবে পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ১৯৯৯ সালে এই খালের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় পানামা।
প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার জাহাজ এই খাল ব্যবহার করে থাকে। কন্টেইনারবাহী এসব জাহাজ মূলত গাড়ি, প্রাকৃতিক গ্যাস, সামরিক উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করে থাকে।