পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার পথে মরক্কো উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ৬৯ জন নিহত হয়েছে। নিহতের মধ্যে ২৫ জন নাগরিক মালি দেশের বলে জানিয়েছে মালিয়ান কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় আল জাজিরা।
এক বিবৃতিতে মালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৃহস্পতিবার নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮০ জন যাত্রী ছিলো। এদের মধ্যে মাত্র ১১ জন বেঁচে ফিরেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি জরুরি ইউনিট ক্রাইসিস ইউনিট গঠন করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে (এপি) দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডৌলায়ে কেইতা জানিয়েছেন, নিহত মালিয়ানের মধ্যে বেশ কয়েকজন দেশের পশ্চিমে কায়েস অঞ্চলের বাসিন্দা।
কায়েস অঞ্চলের মারেনার কমিউনের মেয়র মামাদু সিবি এপিকে বলেন, "মৃত ২৫ মালিয়ানের মধ্যে আমার কমিউনের ৮ জন মালিয়ান রয়েছে। এই যুবকরা সাত মাস আগে মৌরিতানিয়ায় নির্মাণ শিল্পে কাজ করার জন্য আমার কমিউন ছেড়েছিল। তারা ইউরোপ এবং আমেরিকায় তাদের বন্ধুদের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছিল। তাদের বন্ধুরা এই দেশে আসতে উত্সাহিত করেছিল। নিহতের এদের অনেকেই তাদের পরিবারকে না জানিয়ে এই বিপজ্জনক যাত্রা বেছে নিয়েছিলো।"
পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ হচ্ছে আটলান্টিক অভিবাসন রুট। সাধারণত আফ্রিকান অভিবাসীরা এই রুট দিয়েই স্পেনের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। বিপজ্জনক এই পথে পারি দেওয়ার সংখ্যা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাসে যাওয়ার সংখ্যা গত বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। গত বছরে এই সময়ে যাওয়ার সংখ্যা ছিলো ৩৯ হাজার ৯১০ জন আর চলতি বছর সেটা বেড়ে পৌঁছেছে ৪১ হাজার ৪২৫ জনে।
সাহেল অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে চলা সংঘাত, বেকারত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কৃষক সম্প্রদায়ের ওপর পড়ার কারণে মালির মানুষ এই পথ বেছে নিচ্ছেন।
অভিবাসী সহায়তা গোষ্ঠী ওয়াকিং বর্ডারস অনুসারে, আটলান্টিক এই রুটটি বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক একটি পথ। এই রুট দিয়েই প্রতিবছর সেনেগাল, গাম্বিয়া, মৌরিতানিয়া এবং মরক্কোর নাগরিকরা বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছেন।
সংস্থাটি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানায়, চলতি বছর সমুদ্রপথে স্পেন পৌঁছানোর সময় ১০ হাজারের বেশি লোক মারা গেছেন। যা ২০০৭ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যা। মৌরিতানিয়া থেকে বের হওয়ার সময়ই মারা গেছেন ৬ হাজার ৮২৯ জন।