হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অনশন প্রত্যাহার অতিশীর
-
-
|
ছবি : সংগৃহীত
অবশেষে অনশন প্রত্যাহার করলেন ভারতের দিল্লির মন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) নেত্রী অতিশী মারলেনা। এনডিটিভি জানিয়েছে, অনশনের চার দিনের মাথায় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
তার রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করলে তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বলে জানা গেছে।
বর্তমানে দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ (এলএনজেপি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অতিশী। রাজ্যসভার সাংসদ তথা আপ নেতা সঞ্জয় সিং জানিয়েছেন, অসুস্থ্য অবস্থায় অনশন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
প্রবল গরমে পানির তীব্র সঙ্কটে ভুগছে দিল্লি। পানি নিয়ে হাহাকারের ছবিও দেখা গেছে রাজধানী শহরটির নানা স্থানে। চাণক্যপুরীর সঞ্জয় ক্যাম্প এবং গীতা কলোনি এলাকায় পানি সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে। এক বালতি পানির জন্য রোদের মধ্যে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে মানুষকে।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী রাজ্যের কাছে বাড়তি পানি চেয়েছিল দিল্লি সরকার। এ নিয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। অভিযোগ রয়েছে, বিজেপি শাসিত হরিয়ানা চাহিদার তুলনায় কম পানি দিচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে হরিয়ানার থেকে বাড়তি পানি চেয়ে ২১ জুন থেকে অনশনে বসেছিলেন দিল্লির পানিমন্ত্রী। কিন্তু, চার দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
সোমবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় অতিশীর শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সুপারিশ করেন। অতিশীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা জানান, তার শরীরে ক্ষতিকারক কিটোনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। তাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন। কিন্তু, তাতে রাজি হননি অতিশী।
তবে মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভোরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে অতিশীর। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আপের দাবি, সোমবার মধ্যরাতে অতিশীর রক্তে শর্করার পরিমাণ (ব্লাড সুগার লেভেল) ৪৩ হয়ে যায়। ভোর ৩টা নাগাদ তা আরও কমে ৩৬ হয়। আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছে তার।
তারপরই অতিশীর অনশন তুলে নেওয়ার কথা জানান আপ সাংসদ সঞ্জয়। তবে তিনি এটাও জানান, অনশন তুললেও পানির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে আপ।
অতিশীর আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন জেলবন্দি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিহাড় জেল থেকে দেওয়া এক বার্তায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার বলেন, ‘তৃষ্ণার্তকে পানি দেওয়া আমাদের সংস্কৃতি। এই নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ও এই বিষয়ে অতিশীর পাশে দাঁড়িয়েছে। সোমবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল এবং সাগরিকা ঘোষ অনশনরত অতিশীর সঙ্গে দেখা করেন।
অতিশীর অভিযোগ, দিল্লি সাধারণত প্রতিদিন ১০০ কোটি ৫০ লক্ষ গ্যালন পানি পায়। হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে পানি আসে ৬১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন। কিন্তু, গত দুই সপ্তাহ ধরে হরিয়ানা সরকার সেই পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ৫১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন পানি ছাড়ছে। যার ফলে প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ পানি সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছেন।
