মিয়ানমারে নৌকাডুবিতে ১৭ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা চলতি সপ্তাহে সাগরে ডুবে অন্তত ১৭ জন মারা গেছে। উদ্ধারকারীরা বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতি বছর হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের শিবির থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা করে।
সিটওয়ে শহরের শ্বে ইয়াং মেটা ফাউন্ডেশনের উদ্ধারকারী বায়ার লা বলেছেন, গত রবিবার রাতে গভীর সাগরে সমস্যায় পড়া নৌকাটিতে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ৫০ জনেরও বেশি লোক ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা গতকাল পর্যন্ত ১৭টি মৃতদেহ পেয়েছি। আমরা আটজনকে জীবিত পেয়েছি। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে।’
উদ্ধারকারীরা বাকিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, বোর্ডে থাকা যাত্রীদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইনে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানের বাসস্থান, যারা বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী হিসেবে সেদেশে এসেছিল। তারা সেখানে নাগরিকত্ব ও চলাচলের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার জানুয়ারি মাসের তথ্য অনুযায়ী, ৩৯টি জাহাজে ৩,৫০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা ২০২২ সালে আন্দামান সাগর এবং বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
এর মধ্যে অন্তত ৩৪৮ জন রোহিঙ্গা গত বছর সমুদ্রে মারা ডুবে গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে। সংস্থাটি এই ডুবে মরা বন্ধ করার জন্য আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন, এই অঞ্চলের সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষকে দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের উদ্ধার ও আশ্রয় দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রাকে ‘বর্ণবাদের’ সঙ্গে তুলনা করেছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক দমন অভিযানে হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং ধর্ষণের ব্যাপক ঘটনার পর প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পতনের পর থেকে মিয়ানমার বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে এবং সেখানে গণতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটেছে।