মশা মারতে মারণাস্ত্র হবে খুনি মশা!

  • মহিউদ্দিন আহামেদ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গ্রাম কিংবা নগর জীবনে প্রাণ ওষ্ঠাগত করা ছোট্ট এক প্রাণীর নাম হলো মশা। বিশেষ করে শহরগুলোতে মশা মারতে এখন কামান দাগানোর মত অবস্থা হয়েছে। মশা বিনাশে প্রতিটি দেশে সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হয় না। মশা তার নিয়মানুসারেই রক্ত চুষে যায়। তবে এবার মনে হয় মশা মারতে কিছুটা আশার আলোর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। অন্তত পক্ষে এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সিটেক নামক একটি বায়োটেকনোলজি ফার্মের বিজ্ঞানীরা।

ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, হলুদ জ্বর বা চিকুনগুনিয়া রোধে মশা কমানো ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেন না তারা। আর সেজন্যই মশার জিনের বিন্যাসই ওলটপালট করে দিয়েছেন গবেষকরা। তারা এমন মশা তৈরি করছেন যারা আসলে অন্য মশাদের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে ঘুরবে। নতুন জিনের মশাদের সাথে স্ত্রী মশাদের মিলন হলেই বন্ধ্যা মশার জন্ম হবে, না হলে মৃত্যু হবে। যেহেতু রক্তখেকো স্ত্রী মশাদের থেকেই সংক্রমণ ছড়ায়, তাই তাদেরকে বিনাশ করতেই গবেষকদের এই প্রচেষ্টা।

বিজ্ঞাপন

চলতি মাসেই অক্সিটেকের গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি দ্বীপে নতুন উদ্ভাবিত মশা অবমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সেখানে জিকা ভাইরাসের খুবই বাড়বাড়ন্ত। এখন ট্রায়ালের মাধ্যমে গবেষকরা এটাই বোঝার চেষ্টা করবেন সত্যিকার অর্থেই এই মশা কতটা নিখুঁতভাবে মারণাস্ত্র হিসেবে কাজ করতে পারে।

মশাবাহিত রোগ মুলত ছড়ায় স্ত্রী মশারা, পুরুষরা নেহাতই নিরীহ। ফুলের রেণু খায়, রক্তে তাদের অ্যালার্জি। এই স্ত্রী এডিস মশারা পেটে করে ভাইরাস বয়ে নিয়ে যায়। মশার শরীরে কিন্তু ভাইরাসের কোনও প্রভাব পড়ে না। কিন্তু যার রক্ত শুষে নেবে তার শরীরে ভাইরাস ঢুকিয়ে দিয়ে আসবে। স্ত্রী মশার লালায় ঘাপটি মেরে বসে থাকে ভাইরাস। মশা যখন তার হুল ঢোকায় শরীরে তখনই ভাইরাসটি মানুষের রক্তে ঢুকে পড়ে। তারপর সোজা শ্বেত রক্তকোষে গিয়ে হামলা চালায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বারোটা বাজিয়ে দেয়। সংখ্যায় বেড়ে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। আর কারও যদি জটিল কোন অসুখ থাকে তাহলে ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া হলে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে। তাই স্ত্রী মশাদের আটকানোই এখন মূল লক্ষ্য বিজ্ঞানীদের।