‘রাফসান দ্যা ছোটভাই’র বড় হওয়ার গল্প

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইফতেখার রাফসান ,ছবি: ফেসবুক

ইফতেখার রাফসান ,ছবি: ফেসবুক

ইফতেখার রাফসান জনপ্রিয় ‘রাফসান দ্যা ছোটভাই’ নামে। শুরুটা ফুড ব্লগিং দিয়ে, এখন নিয়মিত দেখা মিলছে মডেলিং ও টিভিসিতে। সম্প্রতি রাফসান নিজের জীবনের গল্প জানিয়েছে বার্তা২৪.কমকে। সেই গল্প শুনে লিখেছেন কৌশিক।


বার্গার কিং থেকে ইউটিউব

বিজ্ঞাপন

আমি প্রধানত ইউটিউবিং শুরু করি ২০১৭ সালে। চ্যানেলটা তখনই খোলা। একদিন ক্লাস শেষে ঢু মারি ঢাকার বার্গার কিং এ। আমার এক বন্ধু একরামুল আইডিয়াটা দিলো তখনই। সেই মূলত আমাকে সাহস জুগিয়েছে ইউটিউবিং শুরু করতে বলে। তবে ২০১৭ সালে মাত্র ৩টি ভিডিও দিয়ে লম্বা একটি বিরতিতে ২ বছর বন্ধ ছিলাম।

হাজারও বিষয় ছেড়ে ফুডব্লগিং?

বন্ধু একরামুলই আমাকে বলেছিলো ফুড ব্লগিং বিষয়টা ভিন্ন। তার ধারনাতেই ফুড ব্লগ শুরু করি, তবে আমি প্রধানত ফুড ব্লগার না। আমি এই বিষয়েই ভিডিও বানাই তবে খাবারের প্রতি আলাদা ঝোঁক থেকেই ওটা তুলনা মূলকভাবে বেশি করা হয়। অধিকাংশ ফুড রিভিউতে দেখা যায় খারাপকে খারাপ বলতে চায়না, আমি এটা থেকে ব্যতিক্রম হতে চেয়েছি। ভালোকে ভালো, খারাপকে খারাপ বলার মন মানসিকতা নিয়ে ফুড রিভিউ শুরু করি।

ইফতেখার রাফসান, ছবি: সংগৃহীত

মডেলিং জগতের রাফসান

আমার মডেলিং এর শুরুটা বছর দুয়েক আগে। ২০১৭ সালে দেওয়া ভিডিওতে দেখেই বেসরকারি একটি মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে নির্বাচন করা হয় আমাকে। শুরুটা এভাবেই। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানির মডেল হিসেবে কাজ করছি, এখনো করে যাচ্ছি। মডেলিং এ আসার মূল কারণ অভিজ্ঞতা। আমি জীবনে সবসময় নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ভালোবাসি, মডেলিংটাও ঠিক এভাবেই, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যই আসা। আর্থিক কিংবা ফুল টাইম হতে নয়।

অভিনয়ে আরও যা পরিকল্পনা

অবশ্যই বড় পর্দার কাজ করার বেশ ইচ্ছে আছে। বড় পর্দায় কাজ করার অভিজ্ঞতাটাও জীবনে একবার হলেও নিতে চাই।

সবকিছুর পাশাপাশি একজন প্রফেশনাল গেইমারও

আমি প্রফেশনালি গেইমিং শুরু করি ২০১১ সাল থেকেই। বড় ভাই থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে গেইমিং এ আসি। এরপর ধীরে ধীরে ব্যাপারটাকে প্রফেশনালি নিতে শুরু করি। এ পর্যন্ত কতগুলো গেইমিং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি নিজের কাছেই সঠিক তালিকা নেই। ২০১৬ সাল থেকেই আমি যেকোনো টুর্নামেন্টে অপরাজিত। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দেশের বাইরে গিয়েছি ৪ বার। সত্যি বলতে গেইমিং প্রফেশনটা আমাদের দেশের অধিকাংশের চোখে হাস্যকর। এটাও কিন্তু হতে পারে একটি পেশা। আমি আমাদের পাশের দেশ ভারতে গিয়েছি, সেখানে ১২, ১৪ বছরের ছেলেরা গেইমিং এ মাসে লাখের কাছাকাছি আয় করছে। এটাও কিন্তু একটি পেশা, সেটি অনেকের ধারণায় নেই বিশেষ করে আমাদের দেশের এটি একদমই নেই। আমাদের দেশের অনেকেই গেইমিং এ বেশ আগ্রহী শুধুমাত্র পরিবারের দ্বিমতে নিজেকে গড়ে তুলতে পারছেনা। আশা করি এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে শীঘ্রই।

গেমার ইফতেখার রাফসান, ছবি: সংগৃহীত

গেইমিং এ আপনার পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিলো?

হ্যাঁ, আমার পরিবারও এই ব্যাপারটিকে সমর্থন করতো না একদমই। এমন দিনও গিয়েছে যে টুর্নামেন্টের আগের রাতে আমার বাবা কম্পিউটারের মনিটর ভেঙ্গে দিয়েছে। তবে পরে তারা যখন দেখলো এবং সব বুঝতে পারলো তারা ব্যাপারটিকে ভালোভাবেই নিতে শুরু করেছে। তারাই এখন আমাকে সমর্থন করে যাচ্ছে সবসময় আমার আগ্রহকে প্রাধান্য দিচ্ছে

আগামীতে আরও যা পরিকল্পনা

নিজেকে আন্তর্জাতিক ফুড রিভিউয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। অবশ্য এই মাসেই সব হওয়ার কথা ছিলো। এই মাসেই আমার দেশের বাইরে তিনটি দেশে যাওয়ার কথা ফুড রিভিউ করতে, করোনাভাইরাসের জন্য সব বাতিল করতে হলো। তবে পরিস্থিতি ঠিক হলেই বিষয়টি বাস্তবায়ন করবো। অনেকেই আমাকে বলে আমি ভিডিওতে অধিকাংশ সময় ইংরেজি কেনো বলি, এর কারণ আমি চাই আমার ভিডিও বাইরের দেশের দর্শকরাও বুঝতে পারুক। তারাও আমাদের খাওয়া-দাওয়া, পরিবেশ নিয়ে আগ্রহী হোক। সবসময় নিজের আলাদা একটি স্টাইল তৈরি করতে চেষ্টা করি।

ইফতেখার রাফসানের ইউটিউব চ্যানেল, ছবি: সংগৃহীত

অল্প সময়েই কোটির অধিক ভিউ

বিষয়টা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে এত সমর্থন সত্যিই আমাকে সামনের দিকে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সাহস জোগায়। আমি সকলের কাছেই সবসময় কৃতজ্ঞ যারা আমাকে এই পর্যন্ত এনে দিয়েছেন। আশা করি আরও ভালো ভালো কাজের মাধ্যমে নিজেকে তথা পুরো দেশটাকে বিশ্বের কাছে অন্যভাবে তুলে ধরতে পারবো।