বলিউডের বক্স অফিসে বেশ জোরদার টক্কর চলছে বহুল প্রতিক্ষীত হাই বাজেটের দুটি সিনেমা ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ও ‘সিংহাম এগেইন’র মাঝে। দুই সিনেমারই আগের কিস্তিগুলি ছিল সুপার ডুপার হিট। আর নতুন কিস্তিতে বসেছে তারকাদের মেলা।
দর্শককে হলে টানার সকল ব্যবস্থাই যেন করে রেখেছে এই দুই সিনেমার পরিচালক। যার ফলাফলও মিলছে ছবি দুটির মুক্তির প্রথম দিনের অফিস আয় থেকে। তবে মুক্তির তৃতীয় দিনে আয় কিছুটা কমে গেছে দিওয়ালি উৎসবে মুক্তি প্রাপ্ত এই দুই সিনেমার।
বিজ্ঞাপন
বলিউড মুভি রিভিউজ বলছে, বক্স অফিসে মুক্তির প্রথম দিনে ‘সিংহাম এগেইন’ যেখানে ৪৩.৫০ কোটি রুপি আয় করেছে, সেখানে দ্বিতীয় দিনে তা কিছুটা কমে ৩৮ কোটি রুপিতে, আর তৃতীয় দিনে ছবিটির আয় ৩৫ কোটি রুপিতে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, তিন দিনে ছবিটির মোট আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৬ কোটি রুপি। স্যাকনিল্ক এর মতে, ছবিটির বিশ্বব্যাপী সংগ্রহ ১২৫.২ কোটি রুপি।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ এর আয় মুক্তির প্রথম দিনে যেখানে ৩৫ কোটি রুপি ছিল, সেখানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও ছবিটির আয় যথাক্রমে ৩৩ কোটি রুপি হয়েছে। ফলে তিন দিনে ছবিটির মোট আয় ১০০ কোটি রুপি ছাড়িয়েছে। ফলে বলাই বাহুল্য, দুটো ছবির মধ্যে ‘সিংহাম এগেইন’ই আয়ের দিক থেকে বেশি এগিয়ে।
রোহিত শেঠি পরিচালিত ‘সিংহাম এগেইন’এ অভিনয় করেছেন অজয় দেবগন, কারিনা কাপুর খান, রণবীর সিং, অক্ষয় কুমার, দীপিকা পাডুকোন, টাইগার শ্রফ এবং অর্জুন কাপুর।
আর অনিস বাজমির ভুল ভুলাইয়া ৩-এ কার্তিক ছাড়াও রয়েছেন বিদ্যা বালান, মাধুরী দীক্ষিত, তৃপ্তি দিমরির মতো তারকারা।
জানা গেছে, দর্শকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে ‘ভুলভুলাইয়া ৩’। বিশেষ করে হরর কমেডি-তে না ভয় আছে, না হাসি, দাবি করছেন হল ফেরত মানুষরা। এমনকি কার্তিকের অভিনয়ও নাকি পাতে দেওয়ার মতো নয়। সেই হিসেবে, নিজের কাঁধে একাই ছবি টেনেছেন বিদ্যা বালন ও মাধুরী দীক্ষিত।
তবে চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক তরণ আদর্শ দুটি ছবি নিয়েই উচ্চ প্রত্যাশা রাখছেন বলেই জানিয়েছেন। দুটি ছবিই ‘দুর্দান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
‘পুষ্পা টু’র প্রিমিয়ারে নারী ভক্তের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। সেই আবহ না কাটতেই আরও এক বিপদের মুখে দক্ষিণী সুপারস্টার আল্লু অর্জুন। ‘পুষ্পা টু’ ছবিতে আল্লু অভিনীত চরিত্র ‘পুষ্পা’র সুইমিং পুলে প্রস্রাব করার একটি দৃশ্য রয়েছে। আর সেখানে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করা এক অভিনেতাকেও ওই দৃশ্যে সুইমিং পুলে দেখা গেছে। আর সেই দৃশ্যই আল্লুর জন্য এবার বিপদ ডেকে আনল।
‘পুষ্পা টু’ ছবির একটি দৃশ্য নিয়েই এবার নায়কের বিরুদ্ধে মামলা করলেন কংগ্রেস নেতা তথা তেলঙ্গানা বিধান পরিষদের সদস্য টি মাল্লানা। শুধু আল্লুই নয়, ছবির পরিচালক সুকুমারের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন তিনি।
আল্লুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা সেই কংগ্রেস নেতা ছবির ওই দৃশ্যটিকে ‘অবমাননাকর’ বলে দাবি করেন। তার দাবি, যেভাবে ওই দৃশ্যটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পর্দায়, তাতে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। আল্লু এবং ছবির পরিচালক, দুজনের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
এদিকে ‘পুষ্পা টু’ ছবিটি ঘিরে শুরু থেকেই বিতর্ক। হায়দরাবাদের থিয়েটারে ছবির প্রদর্শনীতে হাজির হন আল্লু। সেখানে অভিনেতাকে দেখতে ৩৫ বছর বয়সি এক নারী পদপিষ্ট হয়ে মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এক শিশু। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তারও হন আল্লু।
শোবিজের নবীন মুখ নাসরিন অনু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে এখন তিনি টিভি নাটকে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত! সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসিদ রণ
কি নিয়ে ব্যস্ততা যাচ্ছে আপনার?
আমি সদ্য একাডেমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করেছি। তাই পড়াশোনার পর পর থিয়েটারের বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজের সাথে যুক্ত আছি, ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় অভিনয় করছি। ইতোমধ্যে মধ্যে ভিজুয়াল মিডিয়ায় কিছু কাজ করা হয়েও গেছে। বর্তমানে আমি সালাউদ্দিন লাভলু ভাইয়ার নির্দেশিত 'ফুলকুমার' নামক ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছি। এর পাশাপাশি বেশ কিছু একক নাটকের কাজও করেছি।
এটাই কি আপনার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক?
না, এটা আমার অভিনীতপ্রথম ধারাবাহিক নাটক নয়। আমি এর আগেও এন টিভির একটি ধারাবাহিক নাটক ' মা বাবা ভাই বোন' এ অভিনয় করেছি। যেটির পরিচালক ছিলেন হাসান রেজাউল।
ধারাবাহিক নাটকের মতো বড় প্রজেক্টে কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাজের সুযোগটা পেলেন কিভাবে?
এক্ষেত্রে ধন্যবাদ দিতে হয় নাটকের পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলু ভাইকে । কারন তুলনামূলক স্বল্প কাজের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও আমার অভিনয় দক্ষতার উপর আস্থা রেখে তিনি আমাকে নাটকের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাস্টিং করেছেন।
শোবিজের জার্নিটা কবে থেকে শুরু হলো?
ছোটবেলা থেকেই আমি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলাম। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৬ তে অভিনয়, লোকনৃত্যে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করি। আমার প্রথম অভিনীত টেলিফিল্ম ' নামতা'। এটি ২০১৮ সালে চ্যানেল আইয়ের সম্প্রচারিত হয়েছিল। পরবর্তীতে বেশ কিছু একক নাটকেও আমি কাজ করেছি। যেহেতু আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় সময় দেয়া সম্ভব হয়নি।
থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করার পর ভবিষ্যতে কি আপনার থিয়েটারের সাথে যুক্ত থাকার ইচ্ছা আছে?
অবশ্যই, অবশ্যই। থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্ট্যাডিজ বিভাগে পড়াশোনার মাধ্যমেই আমি অভিনয়ের যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি এবং সেটি প্রয়োগের সুযোগও পেয়েছি। এজন্য আমি আমার বিভাগের সকল শিক্ষকের প্রতি ঋণী। তাদের প্রত্যেকের অনন্যতা থেকে আমি যা শিখেছি সেটি আমার অভিনয়ের প্রতি ভালোলাগাকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই যার মাধ্যমে আমার ভিত্তি স্থাপন হয়েছে, সেই থিয়েটারকে তো আমি অবশ্যই আমার জীবনের প্রত্যেকটি ধাপে ধাপে যুক্ত রাখতে চাই। আর এই যুক্ত রাখাটা হবে আমার গবেষণার মাধ্যমে অভিনয়ের মাধ্যমে, পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করার মধ্য দিয়ে।
এ পর্যন্ত করা কাজের মধ্যে নিজের প্রিয় কোনটি?
অভিনয় বিষয়ক প্রত্যেকটি কাজই তো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রত্যেকটি অভিনয়ের পেছনেই অক্লান্ত পরিশ্রম থাকে। আমার অভিনীত প্রত্যেকটি নাটকের শ্রদ্ধেয় নির্দেশদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি । আসলে অভিনয় বিষয় প্রত্যেকটি কাজই আমার কাছে প্রিয়।
আপনার ‘নাট্যকলার পড়াশুনা’ আর শোবিজে যে ধাচের কাজ করছেন, দুটি দুই মেরুর। কতোটা উপভোগ করছেন?
প্রথমত, আমি সব ধরনের গল্পেই কাজ করে নিজের দক্ষতাকে যাচাই করতে চাই। যাতে দর্শক থেকে পরিচালক- সবাই বুঝতে পারেন যে আমি সব ধরনের চরিত্রে সাবলিল। সে ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত যে কাজগুলো করেছি আমি সততার সঙ্গে অভিনয় করতে চেষ্টা করেছি। একটি দেখেই তো অন্যটিতে ডাক পাচ্ছি।
আপনার ক্যারিয়ার প্ল্যান কি?
আমার থিয়েটার সংশ্লিষ্ট গবেষণামূলক কাজ করতে ভালো লাগে। থিয়েটার বিষয়ক একাডেমিক কাজ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালীন পুরোটা সময়ে আমি পড়াশোনাকেই গুরুত্ব দিয়েছি। তাই আমার ক্যারিয়ার প্ল্যান হিসেবে ভবিষ্যতে আমি থিয়েটার নিয়েই থাকতে চাই। এর পাশাপাশি আমি সকল মাধ্যমে অভিনয় করে যেতে চাই।
দ্বিতীয়ত, আমি শোবিজে তুলনামূলক নবীন। আমার কাছে যে কাজগুলো আসছে সেখান থেকেই তো আমাকে সিদ্ধান্ত হতে হবে কোনটা করবো আর কোনটা করবো না। নিজের মতামত, ভালোলাগা-মন্দলাগার ব্যাপারে কথা বলতেও নিজেকে একটা পর্যায়ে যেতে হবে।
বছরের শেষে এসে প্রকাশ পেল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এলিটা করিমের নতুন অ্যালবাম ‘চিনি দেয়ার চামচ’। ৪ গানের এই ইপির সব গান লিখেছেন বরেণ্য গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী ও সুর করেছেন প্রখ্যাত সুরকার পিলু খান। আজব রেকর্ডস থেকে প্রকাশিত অ্যালবামটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান গতকাল ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ রাজধানীর একটি ক্যাফেতে অনুষ্ঠিত হয়।
এই প্রকাশনা আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন নকীব খান, ফোয়াদ নাসের বাবু, লিটন অধীকারী রিন্টু, আসিফ ইকবাল, বাপ্পা মজুমদার, দিলশাদ নাহার কনা, বাপ্পী খান, শফিক তুহিন, সুমন পাটওয়ারী, বৃন্দাবন দাস ও এলিটার স্বামী নির্মাতা আশফাক নিপুনের তারকারা।
অ্যালবামের ৪টি গান হলো ‘প্রেম হবে দিন শেষে’, ‘ভালোবাসি’, ‘প্রজাপতি’ ও ‘চিনি দেড় চামচ’। সবগুলো গানের শব্দ সংমিশ্রণ করেছেন আমজাদ হোসেন বাপ্পী। গানগুলো শোনা যাচ্ছে আইটিউন্স, স্পটিফাই, অ্যামাজন, ডিজার, স্বাধীন মিউজিকসহ পৃথিবীজুড়ে সব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে। প্রকাশনা উৎসবে "প্রেম হবে দিন শেষে" গানটির একটি গানচিত্র উন্মুক্ত করা হয়, যা পরিচালনা করেছেন জয় শাহরিয়ার। এছাড়াও দেখানো হয় ‘চিনি দেড় চামচ’ গানের লিরিক ভিডিও।
অ্যালবাম প্রসঙ্গে এলিটা বলেন, ‘যাদের গান শুনে বড়ো হয়েছি তাদের লেখা ও সুরে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম করতে পারা আমার জন্য একটি স্বপ্ন পূরণ।’
পিলু খান বলেন, ‘এলিটা আমার পছন্দের কণ্ঠশিল্পী। ওর জন্য গান করতে ভালো লেগেছে। আশা করি শ্রোতারাদের ভালো লাগবে।’
শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বলেন, ‘পিলুর সাথে গান করছি ৪ দশক হলো। আমাদের এ যাত্রায় এবার যোগ হলো এলিটা। আশা করি সময়ের স্রোতে এই গানগুলো টিকে থাকবে নিজ যোগ্যতায়।’
বলিউডের আর্ট ঘরানার ছবির প্রবক্তা বললে ভুল হয় না শ্যাম বেনেগালকে। শুধু আর্ট ঘরানা নয়, বানিজ্যিক ধাচের ছবি করেও তিনি সফল হয়েছিলেন। জীবনঘনিষ্ট গল্প, গভীর মানবিকবোধ ও সুক্ষ আবেগ দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতেন তার সিনেমায়। তার হাত ধরে উঠে এসেছিলেন শাবানা আজমী, নাসিরউদ্দিন শাহ, স্মিতা পাতিলের মতো জাদরেল অভিনয়শিল্পী। শ্যাম বেনেগাল প্রসিদ্ধ তার আইকনিক ক্ল্যাসিক সিনেমা ‘অঙ্কুর’, ‘নিশান্ত’, ‘মন্থন’, ‘মাণ্ডি’, ‘ভূমিকা’, ‘মাম্মো’, ‘সর্দারি বেগম’, ‘জুবাইদা’র জন্য।
গত ২৩ ডিসেম্বর ৯০ বছর বয়সে তার জীবনাবসান হয়। শ্যাম ভারতীয় সিনেমায় এক নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। তার প্রয়াণে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে একটি যুগের অবসান হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাকে বলা হয় ভারতীয় সিনেমার অন্যতম স্তম্ভ। গুণী এই নির্মাতার মৃত্যুতে বলিউড, টলিউড ও ঢালিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শ্যাম বেনেগালের মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেছেন বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা আরেকজন অদম্য সাহসী নির্মাতাকে হারালাম।’
কিংবদন্তি ভারতীয় অভিনেত্রী শাবানা আজমী লিখেছেন, ‘তিনি আমার কাছে গুরুর মতো। চিন্তায় অনেক আধুনিক ছিলেন।’ শাবানা আজমী এর আগে এক সাক্ষাৎকারে শ্যাম বেনেগালকে নিয়ে বলেন, ‘শুধু অভিনয় নয়, আমি কীভাবে জীবনকে দেখি সেখানেও তার প্রভাব ছিল।’ ৭৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমি তার সাথেই প্রথম বিদেশে যাই ‘অঙ্কুর’ সিনেমা নিয়ে এবং বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করি। তিনি আমাকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে আবিষ্কার করেছিলেন এই সিনেমার মাধ্যমে।’
নির্মাতার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল। টুইট করেছেন, ‘তার কাজ দিয়েই তিনি বেঁচে থাকবেন। ভারতীয় সিনেমায় তার অবদান অনস্বীকার্য।’
বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমার টুইট করেছেন, ‘তিনি ছিলেন অন্যতম অসাধারণ নির্মাতা। সাধারণ একটা চেহারা বা ঘটনাকে তিনি দারুণভাবে কাব্যিক করে তুলতেন।’
বলিউডের আরও অনেক বিখ্যাত তারকার মতো শোকাহত টলিউড অভিনেতারাও শোকাহত । শ্যাম বেনেগালের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘লেজেন্ডের বিদায়ে শ্রদ্ধা। চিত্রনাট্যের গুরু যিনি বাস্তব চিত্র এবং গভীরতা দিয়ে ভারতীয় সিনেমাকে নিয়ে গেছেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে।’
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত শোক জানিয়েছেন এই নির্মাতার মৃত্যুতে। তিনি ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘তার মতোই উদার তার প্রতিটি ছবি। যেখানে মানুষের গল্প বলা হয়েছে। যেখানে স্বাধীন যাপনের স্বপ্ন দেখানো হয়েছে।’ ২০২৩-এ মুক্তি পায় শ্যাম বেনেগালের শেষ ছবি ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব আ নেশন’। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘রঞ্জন ঘোষের ‘আহারে’ সিনেমায় আমার বিপরীতে আরিফিন শুভকে দেখেছিলেন শ্যামজি। সেখান থেকেই তার ‘মুজিব’ ছবির জন্য শুভকে বেছে নেন।’’
সেই আরিফিন শুভ প্রিয় নির্মাতার মৃত্যুতে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘ওপারে ভালো থাকবেন স্যার।’ সাথে পোস্ট করেছেন সিনেমার শুটিংয়ের সময়ের একটি ছবি।
এই সিনেমার আরেক অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে শোক জানিয়ে বলেছেন, ‘ভারত তথা বিশ্বের সিনেমার মানচিত্রে শ্যাম বেনেগালের মতো প্রতিভা চট করে পাওয়া যায় না। বিরল। দীর্ঘ সময় এমন প্রতিভাবান মানুষ আসে না। সুতরাং, শ্যামের চলে যাওয়া ছবির জগতের জন্য আক্ষরিক অর্থেই বড় ক্ষতি। ওই বয়সেও ছবি তৈরির সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে নজর থাকত শ্যামের।’
ছবির প্রতি শ্যামের এই যে একাগ্রতা, ভালোবাসা তা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারেননি চঞ্চল। বলেন, ‘বয়সের দোহাই দিয়ে কোনোদিন ছবির সেটে অনুপস্থিত থাকেননি শ্যাম। মনিটরে শুটিংয়ের প্রতিটি শট দেখতেন এবং সবকিছু নিখুঁত হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি থাকতো এই নির্দেশকের।’ সব মিলিয়ে, বয়স যে শিল্প তৈরির ক্ষেত্রে কোনও বাধা হতে পারে না, তা শ্যামকে দেখেই বুঝেছিলেন তিনি।
‘মুজিব: দ্য মেকিং অব আ নেশন’ সিনেমার আরেক অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘শান্তিতে থাকবেন স্যার। আপনার সাথে কাজ করা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।’
১৮টি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বেনেগাল তার কর্মের মাধ্যমে সাধারণত প্রচলিত সিনেমার ধারার বাইরে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন বিষয়কে গভীর দৃষ্টিতে তুলে ধরতেন। ১৯৭৬ সালে পদ্মশ্রী এবং ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত শ্যাম বেনেগালের অবদান ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।